এখনই বাংলাদেশে অফিস খোলার পরিকল্পনা নেই: ফেইসবুক

বাংলাদেশে শিগগরিই অফিস খোলার কোনো পরিকল্পনা নেই জানিয়ে জনপ্রিয় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেইসবুক সুশীল সমাজ ও বেসরকারি সংস্থার সঙ্গে অশিংদারিত্বের মাধ্যমে কাজ করবে বলে  জানিয়েছে।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 27 Oct 2020, 11:03 AM
Updated : 27 Oct 2020, 02:47 PM

ফেইসবুকের এশিয়া-প্যাসিফিক অঞ্চলের হেড অব সেইফটি পলিসি অ্যাম্বার হকস মঙ্গলবার এক ভার্চুয়াল সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান।

এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, “বাংলাদেশে আমাদের অফিস খোলার এই মুহূর্তে কোন পরিকল্পনা নেই। অফিস খোলার বিষয়ে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ নই মানে এমন নয় যে আমাদের সম্পর্ক প্রতিশ্রুতিবদ্ধ নয়।” 

“আমরা সম্প্রতি এক পাবলিক পলিসি ম্যানেজার নিয়োগ করেছি। আমরা অংশীদারিত্বের ভিত্তিতে কাজ করতে বিনিয়োগ করছি। এনজিও, নিরাপত্তা নিয়ে কাজ করে এমন সংস্থা এবং সিভিল সোসাইটি সংস্থার সাথে কাজ করার ভাবছি। আমরা অংশীদারিত্বের ভিত্তিতে কাজ করার বাড়ানোর পরিকল্পনার করছি।”

গত বছরের সেপ্টেম্বরে ফেইসবুক কর্তৃপক্ষের সঙ্গে বাংলাদেশ সরকারের একটি প্রতিনিধি দল ঢাকায় বৈঠক করে। ওই বৈঠকের পরে সরকারের প্রতিনিধি দল জানিয়েছিল, ফেসবুক বাংলাদেশে একটি অফিস খুলতে আগ্রহী এবং তারা এখানে আঞ্চলিক প্রতিনিধি নিয়োগ দেবে।

গত সেপ্টেম্বর মাসে ফেইসবুকে বাংলাদেশি কনটেন্ট বিষয়ে যে কোনো সমস্যা দ্রুত সমাধানসহ বাংলাদেশের অংশ দেখাশোনার জন্য একজন বাংলাদেশি বাংলাভাষীকে পাবলিক পলিসি ম্যানেজার হিসেবে নিয়োগ দেয় প্রতিষ্ঠানটি। এছাড়া প্রতিষ্ঠানটির অনুমোদিত সেলস পার্টনার নিয়োগ দেয়।

ফেইসবুকের সেইফটি পলিসি নিয়ে এই সংবাদ সম্মেলনে প্রতিষ্ঠানটির এই কর্মকর্তা বলেন, “স্থানীয় সংস্থাগুলোর সাথে অংশীদারিত্ব আমাদের সাফল্যের মূলমন্ত্র। এ বছরের শুরুতে আমরা আমাদের ইনফরমেশন হাবের মাধ্যমে করোনাকালীন কীভাবে স্বাস্থ্যবিধি মেনে নিরাপদে থাকা যাবে সে সম্পর্কে ব্যবহারকারীদের সচেতন করতে বাংলাদেশের স্বাস্থ্য এবং তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের সাথে অংশীদারিত্ব করেছি।”

নারী ও শিশুর প্রতি সহিংসতা রোধে ফেইসবুকের বিভিন্ন নীতি, টুলসের কথা তুলে সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, “ফেইসবুক সহিংসতা সমর্থন করে কিংবা সহিংস কার্যকলাপে উৎসাহিত করে এমন পোস্ট সরিয়ে ফেলে। ফেইসবুকে যেহেতু ১৮ বছরের কম বয়সী অনেক ব্যবহারকারী রয়েছেন এবং আমাদের ব্যবহারকারীরা সাংস্কৃতিকভাবে বৈচিত্র্যময় তাই আমরা ব্যবহারকারীদের নগ্নতাপূর্ণ এবং অশালীন পোস্ট দেওয়া থেকে বিরত রাখি।

“২০১২ সাল থেকে ফেসবুকে কারো একান্ত মুহূর্তের ছবি অনুমতি ছাড়া শেয়ার করা নিষিদ্ধ। কোন পরিস্থিতিতেই শিশুদের উপর যৌন নির্যাতনমূলক ছবি বা ভিডিও শেয়ার করতে দেয় না।”

সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, ফেইসবুক কমিউনিটি স্ট্যান্ডার্ড অনেক বিষয় বিবেচনা করে তৈরি করা হয়েছে। যেমন, নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে এই নীতিমালায় আত্মহত্যা, নিজেকে আঘাত করার প্রবণতা, কাউকে উত্যক্ত করা, অন্যের গোপনীয়তা লঙ্ঘন করা বা কাউকে যৌন হয়রানি করা ইত্যাদি ঘটনাগুলো যেন না ঘটে সে ব্যাপারে স্পষ্টভাবে বলা আছে। এই নীতিমালাগুলো জননিরাপত্তা, প্রযুক্তি ও মানবাধিকার বিশেষজ্ঞদের মতামত এবং ফেসবুক ব্যবহারকারীদের ফিডব্যাককের উপর নির্ভর করে নির্ধারণ করা হয়েছে।

এক প্রশ্নের জবাবে ফেইসবুকেরসর্বশেষ ‘ট্রান্সপারেন্সি রিপোর্টের’ বরাত দিয়ে এশিয়া-প্যাসিফিক অঞ্চলের হেড অব সেইফটি পলিসি এম্বার বলেন, তারা ২০১৯ সালের জুলাই থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত বাংলাদেশ সরকারের কাছ থেকে ১৭৯টি অনুরোধের মাধ্যমে মোট ২৯৮টি আইডি সম্পর্কে তথ্য নিবেদন পেয়েছে। এসব অনুরোধের মধ্যে প্রায় ৪৫ শতাংশ নিবেদনে সংশ্লিষ্ট আইন অনুযায়ী আংশিক তথ্য বাংলাদেশ সরকারকে দিয়েছে ফেইসবুক।

এরমধ্যে ৮৪টি আবেদন করা হয় আইনি প্রক্রিয়ার অংশ হিসেবে। আর ৯৫টি আবেদন করা হয় জরুরি প্রয়োজনে।

এসব আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ৪১ শতাংশ আইনি প্রক্রিয়ার আবেদনে সরকারকে তথ্য দেয় ফেইসবুক। একইসঙ্গে ৫০ শতাংশ জরুরি আবেদনেরও তথ্য দেওয়া হয়।