মঙ্গলবার মিষ্টান্ন ও বেকারি খাবার প্রস্তুত ও বাজারজাতকারী প্রতিষ্ঠানটির টঙ্গী ও গাজীপুরের হেড অফিসে অভিযান চালিয়ে ব্যাপক কর ফাঁকির প্রমাণ পাওয়া গেছে বলে জানিয়েছে অধিদপ্তর।
বৃহস্পতিবার অধিকতর তদন্তের জন্য কোম্পানিটির ব্যাংক হিসাবের লেনদেনের তথ্য তলব এবং তা সাময়িক অপরিচালনযোগ্য রাখার অনুরোধ জানানো হয়েছে বলে ভ্যাট গোয়েন্দা অধিদপ্তরের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়।
‘মি. বেকার’র যাবতীয় উৎপাদন, সরবরাহ ও বিক্রি সরাসরি তত্ত্বাবধান করার জন্য সংশ্লিষ্ট ঢাকা উত্তর কমিশনারেটের কাছে সুপারিশ করেছে অধিদপ্তর।
মি বেকারের রাজধানীতে পেস্ট্রি শপের ২৯টি ও সুইটমিটের ৫টি বিক্রয়কেন্দ্র রয়েছে। এই হেড অফিসের ঠিকানায় তাদের কারখানাও অবস্থিত।
ভ্যাট ফাঁকির অভিযোগের বিষয়ে মি. বেকারের কোনো বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
অবসরপ্রাপ্ত জ্যেষ্ঠ সচিব আসিফ-উজ-জামান গত ১৮ অক্টোবর ফেইসবুক স্ট্যাটাসে উত্তরার ৩ নম্বর সেক্টরের ৪ নম্বর রোডের ‘মি বেকার’র বিক্রয় কেন্দ্রে ভ্যাট চালান না পাওয়ার অভিযোগ করেন।
তিনি ওই স্ট্যাটাসে এনবিআরের চেয়ারম্যান আবু হেনা মো. রহমাতুল মুনিমের কাছে প্রতিকার চেয়েছিলেন।
এনবিআরে চেয়ারম্যান তখন অভিযোগটি তদন্ত করার জন্য ভ্যাট গোয়েন্দাকে নির্দেশ দেন।
গত ২০ অক্টোবর মি. বেকার কেক এন্ড পেস্ট্রি শপ লি. তুরাগ, ঢাকা এবং মি. বেকার সুইটস, গাজীপুর নামের প্রতিষ্ঠান দুটির হেড অফিস ও কারখানায় আকস্মিক অভিযান চালায় ভ্যাট গোয়েন্দারা।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, “পরিদর্শনকালে ভ্যাট সংক্রান্ত অন্যান্য দলিলাদি দেখাতে বলা হলে উপস্থিত মালিকপক্ষ তা দেখাতে পারেননি এবং এগুলো সংরক্ষণ না করার বিষয়ে তারা কোন সদুত্তরও দিতে পারেননি। ভ্যাট গোয়েন্দাদের অভিযানের আশঙ্কায় প্রতিষ্ঠান প্রাঙ্গনে মালিকপক্ষ নিজস্ব বাণিজ্যিক দলিলাদিও রাখেন না।”
এতে ভ্যাট গোয়েন্দা দলের কাছে মনে হয়, প্রতিষ্ঠানটি যথাযথভাবে ভ্যাট না দিয়ে মনগড়া হিসাবের ভিত্তিতে স্থানীয় ভ্যাট সার্কেলে রিটার্ন দাখিল করে আসছে।
অভিযানের এক পর্যায়ে গোয়েন্দা দল প্রতিষ্ঠান প্রাঙ্গণে অবস্থিত অন্য একটি ভবনের বিভিন্ন তলায় ও ছাদে অবস্থিত কর্মচারীদের থাকার কক্ষ তল্লাশি করে তাদের পুরনো কিছু কাগজপত্র জব্দ করে।
গোয়েন্দা দলের জিজ্ঞাসাবাদে প্রতিষ্ঠান কর্তৃপক্ষ অভিযানের আগের দিন যে সব পণ্য ফ্যাক্টরি থেকে বের করেছে তার ভ্যাট চালানও দেখাতে পারেনি বলে বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়।
“অনুসন্ধানে দেখা যায়, প্রতিষ্ঠান দুটো কেন্দ্রীয় নিবন্ধিত হওয়ায় মূসক-৬.৫ এর মাধ্যমে পণ্য ফ্যাক্টরি থেকে আউটলেটে নেওয়ার বিধান থাকলেও তা পালন করে না।”
উত্তরার ৩ নম্বর সেক্টরের মি. বেকারের বিক্রয় কেন্দ্রে পরিদর্শন করে সেখানে ভ্যাট চালান ছাড়াই পণ্য বিক্রির প্রমাণ পাওয়ার কথাও জানানো হয় বিজ্ঞপ্তিতে।
এছাড়া গোয়েন্দা দল ২১ অক্টোবর বেইলি রোডে অবস্থিত ‘মি. বেকার’র দুটো বিক্রয় কেন্দ্রেও ভ্যাট চালান ছাড়া বিক্রির প্রমাণ পায়।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, “এতে প্রমাণিত হয় ভ্যাট আইন অনুসারে রেকর্ডপত্র সংরক্ষণ না করে এবং ভ্যাট আইন লংঘন করে প্রতিষ্ঠানটি ৩৪টি বিক্রয়কেন্দ্রে বিপুল ভ্যাট ফাঁকি দিয়ে ব্যবসা পরিচালনা করছে।”