খুচরায় কমছে না পেঁয়াজের দাম

পাইকারি বাজারে পেঁয়াজের দাম কিছুটা কমলেও খুচরায় এর প্রভাব পড়েনি। পাইকারি দরের চেয়ে ২০/২৫ টাকা বেশি দামে খুচরা বাজারে বিক্রি হচ্ছে নিত্যদরকারি পণ্যটি।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 18 Sept 2020, 12:28 PM
Updated : 18 Sept 2020, 12:28 PM

শুক্রবার রাজধানীর বিভিন্ন বাজার ঘুরে দেখা গেছে, পাবনা অঞ্চলের ভালো মানের পেঁয়াজের পাইকারি মূল্য দুইদিন আগেই প্রতিকেজি ১০০ টাকা থেকে ৮০ টাকায় নেমেছে। তবে খুচরায় বিক্রি হচ্ছে প্রতিকেজি ১০০ টাকা থেকে ১১০ টাকায়। খুচরায় ভারতীয় পেঁয়াজ ৬০ টাকা থেকে ৭০ টাকা আর দেশি ক্রস জাতীয় পেঁয়াজ ৮০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

গত সপ্তাহের মাঝামাঝিতে খুচরায় দেশি পেঁয়াজ ১২০ টাকা, ক্রস পেঁয়াজ ৯০ টাকায় বিক্রি হয়েছিল। অধিকাংশ মুদি দোকানেই ভারতীয় পেঁয়াজ পাওয়া যায়নি তখন।

মিরপুরের পীরেরবাগে মুদি দোকান রাজ্জাক এন্টারপ্রাইজের দোকানি জানিয়েছেন, তার দোকানে কেবল পাবনা অঞ্চলের পেঁয়াজ রয়েছে। কেনা দাম বেশি হওয়ায় প্রতিকেজি ১১০ টাকায় বিক্রি করতে হচ্ছে তাকে।

অবশ্য মিরপুরের বড়বাগ বাজারে দাম আরেকটু কম পাওয়া গেছে। সেখানে মুদি দোকান আজমির ভাণ্ডারের জহিরুল ইসলাম বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে জানান, দেশি পেঁয়াজ প্রতিকেজি ১০০ টাকায়, রসুন ৯০ টাকা এবং আদা আড়াইশ টাকা কেজি দরে বিক্রি করছেন তিনি। এর মধ্যে গত এক সপ্তাহে রসুনের দাম বেড়েছে কেজিতে ১০ টাকা।

এই দোকানের পাশেই আরেক দোকানি আব্বাস আলী দাবি করেন, গত দুই দিনে খুচরায় পেঁয়াজের দাম কেজিতে অন্তত ২০ টাকা করে কমেছে। তিনি ৮৫ টাকায় দেশি, ৮০ টাকায় ক্রস এবং ৬৫ টাকায় ভারতীয় পেঁয়াজ বিক্রি করছেন।

মিরপুর ১ নম্বর পাইকারি বাজারের বিক্রেতা মোস্তফা কামাল জানান, গত দুইদিন ধরে দেশি পেঁয়াজের দাম কেজিতে ২০ টাকা কমে ৮০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। ক্রেতা চাহিদা খুব বেশি হ্রাস পাওয়ায় দাম আরও কমে যেতে পারে।

একই রকম পরিস্থিতির কথা জানান কারওয়ান বাজারের পাইকারি বিক্রেতা আব্দুল আওয়াল।

তিনি বলেন, কারওয়ান বাজারে পাবনা অঞ্চলের পেঁয়াজ ৮৫ টাকা, ফরিদপুর ৮০ টাকা এবং ভারতীয় পেঁয়াজ ৬০ টাকায় প্রতিকেজি বিক্রি হচ্ছে।

ভারতে পেঁয়াজের মূল্য বৃদ্ধির খবরে গত শুক্রবারই দেশে পেঁয়াজের দাম বাড়তে শুরু করে। দুইদিনের ব্যবধানে ৪০ টাকার পেঁয়াজের দাম উঠে ৬০ টাকায়। সপ্তাহের মাঝামাঝিতে ভারত পেঁয়াজ রপ্তানি বন্ধের খবরে ২৪ ঘণ্টার ব্যবধানে পাইকারি ও খুচরায় পেঁয়াজের দাম শতকের ঘর ছাড়িয়ে যায়।

বাজার স্বাভাবিক রাখতে দ্রুত বিকল্প দেশ থেকে আমাদানির উদ্যোগ, এলসি মার্জিন সীমিতকরণ, আমদানি শুল্ক কমিয়ে আনাসহ বিভিন্ন পদক্ষেপ নেয় বাণিজ্য মন্ত্রণালয়। পাশাপাশি গত ১৩ সেপ্টেম্বর থেকে টিসিবির মাধ্যমে ৩০ টাকা কেজিতে পেঁয়াজ বিক্রি শুরু হয়।

সরকারের দাবি, দেশে প্রতি মাসে প্রায় দুই লাখ টন চাহিদার বিপরীতে এখনও প্রায় পাঁচ লাখ টন পেঁয়াজ মজুদ রয়েছে। এরপরও সুযোগকে কাজে লাগিয়ে কিছু ব্যবসায়ী ও মজুদদার সিন্ডিকেট বাজার অস্থিতিশীল করার চেষ্টা করছে। মিশর, তুরস্কসহ বিকল্প দেশগুলো থেকে আমদানি শুরু হলে কৃত্রিম সঙ্কট টিকবেনা বলে মনে করছেন বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি। এবার টিসিবির মাধ্যমে পেঁয়াজ আমদানি করে অনলাইনে সুলভ মূল্যে বিক্রির উদ্যোগও সরকার নিয়েছে।

সবজিতে সুখবর নেই

বন্যা ও অতিবৃষ্টির কারণে প্রায় তিনমাস ধরেই চড়া দামে বিক্রি হচ্ছে সবজি। বাজারে অধিকাংশ সবজির দামই এখন প্রতিকেজি ৬০ থেকে ৮০ টাকার মধ্যে।

বিগত কয়েক সপ্তাহের ধারাবাহিকতায় শুক্রবারও বড়বাগ কাঁচাবাজারে প্রতি কেজি চিচিঙ্গা ৬০, লতি ৬০, হাইব্রিড শসা ৬০, ঝিঙা ৮০, সিম ১৬০, ধুন্দল ৫০, পটল ৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

এ সপ্তাহে পেঁপের দাম কেজিতে ১০ টাকা বেড়ে ৫০ আর বেগুন ২০ টাকা বেড়ে ৮০ থেকে ১২০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

বড়বাগ বাজারের সবজি বিক্রেতা শাহ আলম বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, গত সপ্তাহের তুলনায় এই সপ্তাহে কোনো সবজির দামই কমেনি। বরং পেপে, সিমসহ আরও কয়েজটি সবজির দাম বেড়েছে। ফুল কপি, বাঁধা কপি এখনও একেকটি ৬০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। মাঝখানে সিমের দাম ১২০ টাকায় নামলেও এখন আবার ১৬০ টাকায় উঠেছে।

গত সপ্তাহের মতোই এই সপ্তাহে ফার্মের মুরগির ডিম বিক্রি হচ্ছে প্রতি ডজন ১১০ টাকা, হাঁসের ডিম ১৫০ টাকা। ব্রয়লার মুরগি প্রতিকেজি ১২৫ টাকা, লেয়ার ২৩০ থেকে ২৪০ টাকা, দেশি মুরগির দাম চাওয়া হচ্ছে কেজি ৪৫০ টাকা।