সোনার দাম আরও বাড়ল

এক সপ্তাহের ব্যবধানে সব ধরনের সোনার দর আড়াই হাজার টাকা বেড়েছে।

আবদুর রহিম হারমাছি প্রধান অর্থনৈতিক প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 17 Sept 2020, 04:24 PM
Updated : 17 Sept 2020, 04:24 PM

শুক্রবার থেকে প্রতি ভরি সবচেয়ে ভালো মানের সোনা ৭৬ হাজার ৪৫৭ টাকায় বিক্রি হবে।

বাড়তে বাড়তে চূড়ায় উঠে দুই দফা কমার পর গত ৯ সেপ্টেম্বর ভরিতে এক হাজার ৭৫০ টাকা বাড়ানোর পর বৃহস্পতিবার আরেক দফা বাড়ল।

যুক্তরাষ্ট্রের মুদ্রা ডলারের তেজিভাবের কারণে সোনার দাম আবার বাড়ানো হয়েছে বলে জানিয়েছেন বাজুসের সভাপতি এনামুল হক খান দোলন।

তিনি বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, কোভিড-১৯ মহামারীর মধ্যে বেশ কিছু দিন ধরে আন্তর্জাতিক বাজারে স্বর্ণের দাম খুব উঠা-নামা করছিল। কিন্তু গত তিন সপ্তাহ ধরে প্রায় একই জায়গায়ই রয়েছে।

গত ৯ সেপ্টেম্বর যখন দেশে সোনার দাম বেড়েছিল, তখন বিশ্ব বাজারে প্রতি আউন্সের (৩১.১০৩৪৭৬৮ গ্রাম) দাম ছিল ১৯৪৪ ডলার। এখনও (বৃহস্পতিবার রাত ১০টা) দাম প্রায় একই (১৯৪৫ ডলার) রয়েছে।

দোলন বলেন, “করোনাভাইরাসের আগে প্রতিদিন ব্যাগেজ রুলসের আওতায় ছয় হাজার থেকে আট হাজার ভরি সোনা দেশে আসত। কিন্তু করোনাকালে সেটি শূন্যের কোটায় নেমে যায়। তবে সম্প্রতি আন্তর্জাতিক ফ্লাইট চলতে শুরু করায় বর্তমানে প্রতিদিন দুই হাজার থেকে আড়াই হাজার ভরি সোনা আসছে। সরবরাহ ভালো থাকলেও শুধু ডলারের বিপরীতে টাকার বিনিময় হার দুর্বল হওয়ায় সোনার দাম বাড়াতে বাধ্য হয়েছি আমরা।”

পরিসংখ্যান দিয়ে তিনি বলেন, ব্যাগেজ রুলসের আওতায় সবচেয়ে বেশি সোনা আসে দুবাই, সিঙ্গাপুর ও কাতার থেকে। কোভিড-১৯ এর আগে ১ দিরহাম কিনতে ২৩ টাকা ৪০ পয়সা লাগত। বর্তমানে লাগছে প্রায় ২৪ টাকা। ফলে দাম না বাড়ালে প্রবাসীদের কোনো মুনাফা হয় না।

“যদিও আন্তর্জাতিক বাজারে সোনার যে দাম, তাতে বর্তমানে বাড়ানোর প্রয়োজন ছিল না।”

মহামারীর এই কঠিন সময়ে জুয়েলারি ব্যবসা সম্পর্কে জানতে চাইলে এনামুল হক বলেন, “বেচাবিক্রি ৮০ শতাংশ কমে গেছে। সারা দেশের ব্যবসায়ীরা সোনার অলংকার বিক্রি করে কোনোরকমে টিকে আছেন।

“বর্তমানে প্রতি ভরি সোনার যে দাম, তার থেকে কমপক্ষে ১৫ হাজার টাকা কমানো না গেলে জুয়েলার্স ব্যবসা ঘুরে দাঁড়াবে না। সোনার দাম কমানো না গেলে মধ্যবিত্তের ক্রয়ক্ষমতা বৃদ্ধি ছাড়া ব্যবসা আগের অবস্থায় যাবে না।”

শুক্রবার থেকে প্রতি ভরি (১১.৬৬৪ গ্রাম) সবচেয়ে ভালো মানের (২২ ক্যারেট) সোনা ৭৬ হাজার ৪৫৭ টাকায় বিক্রি হবে।

২১ ক্যারেটের সোনা বিক্রি হবে ৭৩ হাজার ৩০৮ টাকায়। ১৮ ক্যারেটের বিক্রি হবে ৬৪ হাজার ৫৬০ টাকায়।

আর সনাতন পদ্ধতির সোনা বিক্রি হবে ৫৪ হাজার ২৩৮ টাকায়।

বৃহস্পতিবার পর্যন্ত প্রতি ভরি সবচেয়ে ভালো মানের (২২ ক্যারেট) সোনা ৭৪ হাজার ৮ টাকায় বিক্রি হয়েছে।

২১ ক্যারেটের সোনা বিক্রি হচ্ছে ৭০ হাজার ৮৫৯ টাকায়। ১৮ ক্যারেটের সোনার গহনা ৬২ হাজার ১১১ টাকায় বিক্রি হয়েছে।

আর সনাতন পদ্ধতির সোনা অলংকার বিক্রি হয়েছে ৫১ হাজার ৭৮৮ টাকায়।

মহামারীর মধ্যে অস্থির বাজারে বাড়তে বাড়তে দেশে সোনার ভরি ৭৭ হাজার ২১৬ টাকায় উঠেছিল। দেশের বাজারে সোনার দর এটাই সর্বোচ্চ।

এরপর গত ১৩ অগাস্ট সব ধরনের সোনার দাম ভরিতে সাড়ে ৩ হাজার টাকা কমিয়েছিল বাজুস। তার এক সপ্তাহ পর ২১ অগাস্ট কমানো হয় ভরিতে ১ হাজার ৪৫৮ টাকা।