পেঁয়াজের ‘এলসি মার্জিন’ ন্যূনতম রাখার নির্দেশ

পেঁয়াজের অস্থির বাজার সুস্থির করতে নিত্য প্রয়োজনীয় এই পণ্যটির আমদানি ঋণপত্র খোলার (এলসি) ক্ষেত্রে মার্জিন বা নগদ জমার হার ‘ন্যূনতম পর্যায়ে’ রাখতে ব্যাংকগুলোকে নির্দেশ দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক।

প্রধান অর্থনৈতিক প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 17 Sept 2020, 09:01 AM
Updated : 17 Sept 2020, 09:01 AM

বৃহস্পতিবার সব ব্যাংকের প্রধান নির্বাহীদের কাছে পাঠানো এক সার্কুলারে বলা হয়েছে, “সাম্প্রতিককালে আন্তর্জাতিক বাজারে পেঁয়াজের মূল্য বৃদ্ধির কারণে স্থানীয় বাজারেও পেঁয়াজের মূল্যে ঊর্ধ্বগতি লক্ষ্য করা যাচ্ছে। এ প্রেক্ষাপটে, বাজারে পেঁয়াজের সরবরাহ স্বাভাবিক এবং মূল্য স্থিতিশীল রাখার লক্ষ্যে পেঁয়াজ আমদানি ঋণপত্র স্থাপনের ক্ষেত্রে মার্জিনের হার ন্যূনতম পর্যায়ে রাখার জন্য আপনাদেরকে পরামর্শ প্রদান করা হলো।”

এর আগে গত ২ মার্চ জারি করা এক সার্কুলারে পেঁয়াজসহ কিছু ভোগ্যপণ্যের আমদানিতে ঋণপত্র খোলার মার্জিন ন্যূনতম পর্যায়ে রাখার পরামর্শ দেওয়া হয়েছিল এক সার্কুলারে, কিন্তু তার মেয়াদ ৩০ মে পর্যন্ত বলবৎ ছিল।

বৃহস্পতিবারের সার্কুলারে বলা হয়েছে, পেঁয়াজের বাজার স্থিতিশীল রাখার স্বার্থে নতুন নির্দেশনা ‘অবিলম্বে’ কার্যকর হবে এবং ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত বলবৎ থাকবে।

আমদানীকারক যখন বিদেশ থেকে কোনো পণ্য আমদানি করতে চান, তখন তার পক্ষে তার ব্যাংক রপ্তানিকারকের পণ্যমূল্য পরিশোধের নিশ্চয়তা হিসেবে ‘লেটার অব ক্রেডিট’ বা এলসি ইস্যু করে। আর এল সি খোলার সময় আমদানি মূল্যের সম্পূর্ণ বা একটি অংশ নগদ অর্থে ‘মার্জিন’ হিসেবে জমা রাখে ব্যাংক।

আমদানি করা পণ্য খালাসের সময় আমদানিকারক বাকি অর্থ পরিশোধ করে অথবা ব্যাংকের ঋণের মাধ্যমে পণ্য খালাস করে। এলসি খোলার জন্য আমদানিকারকের কাছ থেকে ব্যাংক কমিশন বা সার্ভিস চার্জও নেয়। পাশাপাশি মার্জিন হিসাবে জমা রাখা টাকাও ওই সময়ের জন্য বিনিয়োগ করে আয় করতে পারে।

গত সোমবার ভারত আকস্মিকভাবে পেঁয়াজ রপ্তানি বন্ধের ঘোষণা দেওয়ার পর গতবছরের মতই লাগামহীন হয়ে উঠতে শুরু করেছে বাংলাদেশের পেঁয়াজের বাজার। রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন বাজারে দেশি পেঁয়াজের দাম রাতারাতি প্রায় দ্বিগুণ হয়ে গেছে। দাম আরও বাড়ার শঙ্কায় মানুষও প্রয়োজনের অতিরিক্ত পেঁয়াজ কিনতে শুরু করেছে।

একদিনের ব্যবধানে প্রতি কেজি দেশি পেঁয়াজের দাম ৬০ টাকা থেকে বেড়ে ৯০ বা ১০০ টাকা হয়েছে। আর ভারতীয় পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৭০ থেকে ৮০ টাকা কেজি দরে।

হুট করে পেঁয়াজ রপ্তানি বন্ধে উদ্বেগ জানিয়ে ফের তা চালু করতে ভারতের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে বাংলাদেশ সরকার।

পাশাপাশি পেঁয়াজ আমদানি বাড়িয়ে বাজার ঠাণ্ডা রাখতে বিদ্যমান ৫ শতাংশ শুল্ক প্রত্যাহারের বিষয়টিও বিবেচনা করা হচ্ছে বলে অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল জানিয়েছেন।

আর বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি বুধবার বলেছেন, এ মুহূর্তে দেশে মজুদ আছে সাড়ে পাঁচ লাখ টন পেঁয়াজ। আগামী জানুয়ারি পর্যন্ত সময়ে দেশে ১০ লাখ টন লাগবে। তাতে ঘাটতি থাকবে চার লাখ টনের মত।

“গত কয়েকদিন ধরে অন্যান্য দেশ থেকে পেঁয়াজ আমদানির প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। আমরা এক মাস সময় পেলে তুরস্ক, মিয়ানমার, চায়না থেকে পেঁয়াজ আমদানি করা যাবে। এ সময়টা যদি সহ্য করি, দেশের পেঁয়াজ দিয়ে চালাই, তাহলে সমস্যা হবে না। একটু সহ্য করতে হবে এক মাস।”

পুরনো খবর