বিনিয়োগের আকর্ষণীয় পরিবেশ তৈরি করতে হবে: প্রধানমন্ত্রী

করোনাভাইরাস সংকটের মধ্যেই দেশের অর্থনীতিকে এগিয়ে নিতে সবাইকে কাজ করার আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 6 August 2020, 03:25 PM
Updated : 6 August 2020, 03:28 PM

বৈশ্বিক এই মহামারীর কারণে সংকটের পাশাপাশি ব্যবসা-বাণিজ্য টানার যে সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে, তাকে কাজে লাগাতে বিনিয়োগের আকর্ষণীয় পরিবেশ তৈরির পরামর্শ দিয়েছেন তিনি।

বৃহস্পতিবার গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সে বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (বিআডিএ) গভর্নিং বোর্ডের সভায় যোগ দিয়ে প্রধানমন্ত্রী এই পরামর্শ দেন।

তিনি বলেন, “আজকে বিনিয়োগের যে-ই পরিবেশ আমাদের রয়েছে করোনাভাইরাসের কারণে সব দেশেই সমস্যা হচ্ছে, কিন্তু এই সমস্যার মধ্য দিয়েই আমরা কীভাবে আমাদের দেশের অর্থনীতিকে এগিয়ে নিয়ে যাব সেদিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। সেদিকে লক্ষ্য রেখে আমাদের কাজ করতে হবে এবং আমাদের বিনিয়োগের পরিবেশটাকে আকর্ষণীয় করতে হবে।

“আমাদের থেমে থাকলে চলবে না। সীমিতভাবে হলেও আমাদের কাজ করতে হবে। ২০০৮ এ ঘোষণা দিয়েছিলাম ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ে তুলব। ওটাও একটা বিনিয়োগের লক্ষ্য নিয়েই, দেশের ভেতরে মানুষের ব্যবসা-বাণিজ্য শিক্ষা সব কিছু সহজ করার জন্য। সেই ডিজিটাল বাংলাদেশ করতে পেরেছি বলেই এই ধরনের একটা অস্বাভাবিক পরিস্থিতিতেও আমরা আজ এখানে বসে গভর্নিং বোর্ডের সভাটা করতে পারছি।”

বিনিয়োগ বৃদ্ধির লক্ষ্যে দেশজুড়ে একশটা অর্থনৈতিক অঞ্চল প্রতিষ্ঠার কথা তুলে ধরে সরকার প্রধান বলেন, “ইতোমধ্যে আমাদের গৃহীত পদক্ষেপে বিনিয়োগও বৃদ্ধি পেয়েছে। এই যে উন্নতিটা করোনাভাইরাস না আসলে হয়ত এটা আরও সামনের দিকে এগিয়ে নিয়ে যেতে পারতাম।

“করোনাভাইরাসের একটা ধাক্কা আমাদের মাঝে এসেছে এটা ঠিক, কিন্তু এখন আবার একটা সুযোগও সৃষ্টি হয়েছে। সেটাও আমাদের একটু মাথায় রাখতে হবে। কাজেই কারা বিনিয়োগ করতে চায় সেদিকে লক্ষ রেখে সেই বিনিয়োগ যাতে আমাদের দেশে আসে সেই অনুযায়ী ব্যবস্থা নিতে হবে।”

দক্ষতার সাথে সহস্রাব্দ উন্নয়ন লক্ষ্য-এমডিজি অর্জন করে এখন এসডিজি (সাসটেইনঅ্যাবল ডেভেলপমেন্ট গোল) অর্জনের প্রচেষ্টা চলছে বলেও উল্লেখ করেন তিনি।

অবকাঠামোগত উন্নয়নে গুরুত্ব দেওয়ার কারণ ব্যাখ্যায় প্রধানমন্ত্রী বলেন, “কারণ অবকাঠামো উন্নয়ন না হলে কখনোই বিনিয়োগ আসতে পারে না। রাস্তাঘাট থেকে শুরু করে নৌপথ, রেল, আকাশ পথ সবই যাতে উন্নত হয় সেজন্য যথাযথ ব্যবস্থা নিতে আমরা কাজ করে যাচ্ছি।

“বিদ্যুতের সমস্যা ছিল তীব্র। আজকে বিদ্যুতে আমাদের উদ্বৃত্ত আছে। গ্যাসের সমস্যাটাও আমরা সমাধান করে নিয়ে এসেছি। আর সেই সাথে সাথে বিনিয়োগের জন্য আমরা যেই সমস্ত পদক্ষেপগুলো নিয়েছি তার ফলাফল ইতোমধ্যেই মানুষ পেতে শুরু করেছে।”

দেশের ব্যবসা-বাণিজ্য সহজ করতে সরকারের নেওয়া বিভিন্ন পদক্ষেপের কথাও তুলে ধরেন প্রধানমন্ত্রী।

বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের গভর্নিং বোর্ডের সভায় গণভবন প্রান্তে অন্যদের মধ্যে প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ উপদেষ্টা সালমান ফজলুর রহমান, প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব ড. আহমদ কায়কাউস, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সচিব মো. তোফাজ্জল হোসেন মিয়া, প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব ইহসানুল করিম উপস্থিত ছিলেন।

প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় প্রান্তে বিডা’র গভর্নিং বোর্ডের সদস্যদের মধ্যে অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল, শিল্পমন্ত্রী নুরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ুন, বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি, বস্ত্র ও পাটমন্ত্রী গোলাম দস্তগীর গাজী, পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান, কৃষিমন্ত্রী আব্দুর রাজ্জাক, বিদ্যুৎ-জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ, গৃহায়ন ও গণপূর্ত প্রতিমন্ত্রী শরীফ আহমেদ, বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ফজলে কবির, অভ্যন্তরীণ সম্পদ বিভাগের সিনিয়র সচিব আবু হেনা মো. রহমাতুল মুনিম, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগের সিনিয়র সচিব মোস্তাফা কামাল উদ্দীন এবং সুরক্ষা ও সেবা বিভাগের সচিব মো. শহিদুজ্জামান, এফবিসিসিআই সভাপতি শেখ ফজলে ফাহিম, চট্টগ্রাম চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজের সভাপতি মাহবুবুল আলম, বাংলাদেশ উমেন চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজের সভাপতি সেলিমা আহমাদ উপস্থিত ছিলেন।