ই-কমার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ই-ক্যাব) সাধারণ সম্পাদক আব্দুল ওয়াহেদ তমাল বলছেন, প্রচলিত হাটের সঙ্গে অনলাইন মার্কেট প্লেসগুলোতে দামের পার্থক্য দেখে প্রচুর ক্রেতা এখন ডিজিটালি গরু কিনছেন।
গত দুই দিনে অনলাইন মার্কেট প্লেসগুলো থেকে হাজারের বেশি গরু বিক্রি হয়েছে বলে জানান তিনি।
তমাল বুধবার বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “ক্রেতাদের অনলাইন হাট থেকে পশু কেনার আগ্রহ দেখা যাচ্ছে গত ২ দিন ধরে। বিশেষ করে রাজধানীর গরুহাটগুলো চালু হওয়ার পর।
“যখনি ক্রেতারা হাটে গিয়ে এবং অনলাইন ভিজিট করে গরুর দামের পার্থক্য দেখছে তখনি প্রচুর ক্রেতা সমাগম ও বিক্রি বেড়ে গেছে অনলাইনে।”
করোনাভাইরাস মহামারীকালে কোরবানির পশু কেনাবেচায় গত ১১ জুলাই থেকে অনলাইন প্ল্যাটফর্ম ‘ডিজিটাল হাট’র যাত্রা শুরু হয়।
ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগ, ই-কমার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ই-ক্যাব) ও বাংলাদেশ ডেইরি ফার্ম অ্যাসোসিয়েশনের উদ্যোগে বাস্তবায়িত হয়েছে এই ডিজিটাল হাট।
অনলাইন হাটগুলোতে গরুর দাম নিয়ে শুরু থেকে অসস্তোষ ছিল ক্রেতাদের। এ বিষয়ে অনলাইন বিক্রেতারা বলছেন, ক্রেতারা এখনও অনলাইনে কেনাকাটার ‘সুবিধা বুঝতে পারছেন না’।
বর্তমানে ক্রেতাদের ধারণা পাল্টে গেছে দাবি করে তমাল বলেন, “অনেকের ধারণা ছিল, ঢাকার গরুর হাটগুলো শুরু হলে অনলাইনে বেচাকেনা কমে যাবে। কিন্তু বাস্তবে দেখা যাচ্ছে সাধারণ হাটের চেয়ে ই-কমার্স শপগুলোতে দাম কম। তাই হাট চালু হওয়ার পর ই-কমার্স শপগুলোর বেচাকেনা দ্বিগুণ হয়ে গেছে।”
প্রায় দুই হাজার পশু কোরবানি এবং মাংস প্রক্রিয়াজাত করে ঢাকায় হোম ডেলিভারি দিতে প্রস্তুতি নিয়েছে ‘ডিজিটাল হাট’। প্রচলিত হাটে পশু কেনায় হাসিল দিতে হলেও এখানে ক্রেতাদের কোনো হাসিল দিতে হচ্ছে না।
গতবারের তুলনায় এবার অনলাইনে কয়েকগুণ বেশি গরু বিক্রি হচ্ছে জানিয়ে তিনি বলেন, ছোট আকারের গরু বেশি বিক্রি হচ্ছে। বড় গরুর বিক্রি নেই বললেই চলে।
লাইভ ওয়েটের উপর কেজিতে ২৯০ টাকা থেকে শুরু করে ৪০০ টাকার মধ্যে গরু বিক্রি করা হচ্ছে অনলাইনগুলোতে। অনেকে গরুর ছবি দিয়ে সরাসরি দাম দিয়ে রেখেছেন। অনলাইন হাটে দরদাম করার তেমন সুযোগ নেই বলে জানান ব্যবসায়ীরা।
গ্রামীণফ্রেন্ডস এর সিইও জুনায়েদ আহমেদ বলেন, ‘আমরা লাইভ ওয়েটের উপর ২৯০ টাকা ৩৩০ টাকার মধ্যে আমাদের গরুগুলো রয়েছে। এরমধ্যে কোনো হাসিল নেই। এমনকি আমরা হোম ডেলিভারির দায়িত্ব নিয়েছি।
“ডিজিটাল হাটের ইনভয়েসে গরুর ছবি দেওয়া রয়েছে। ক্রেতারা গরু ডেলিভারি নেওয়ার সময় অবশ্যই সব তথ্য মিলিয়ে নিতে পারবেন।”
ডিএনসিসির ডিজিটাল হাটের সাথে যেসব অনলাইনশপ যুক্ত হয়েছে যেগুলো হলো- দারাজ, ইভ্যালী, আজকেরডিল, গরুহাট, কোরবানি হাট, দেশিগরু, সবজিবাজার, গ্রামীণফ্রেন্ডস, জারিফা বাণিজ্যালয়, আহনাফ এগ্রো, বিডিসেল, ই-সদাই, রেইনফরেস্ট, যাচাই, আনন্দমেলা, ঢাকা বস, ঢাকার দোকান, ফার্ম এগ্রো, ফ্যামিলি বাজার।
এছাড়া রয়েছে পরানবাজার, ভিআইডি বাজার, হাংরি নাকি, একশপ, ফুড ফর নেশন, ফ্রেসবিঙ্গার, হাম্বাফার্ম, হাম্বাহাম্বা ডট কম, নন্দনা, বিশালহাট, উডল্যান্ড, জিনিসমার্ট, শপআপ, সওদাগর, সেরাবাংলা৬৪, সবকিছু, সাদিক এগ্রো, খাটি, প্রিয়শপ, পারমিদা, প্রগা এগ্রো, অনলাইন মুদি, কাজী টেকনোলোজি সহ ৫৫টি অনলাইন।
ডিজিটাল হাট ও অন্যান্য অনলাইন হাট থেকে গরু কেনায় দামের ১০ থেকে ২৫ শতাংশ পরিশোধ করলে খামারে গরু রাখার ব্যবস্থা করা হচ্ছে। ক্রেতার ইচ্ছা অনুযায়ী ঈদের এক থেকে দুই দিন আগে এসব গরু সরবরাহ করা হবে। তবে পশু সরবরাহের আগেই বাকি মূল্য পরিশোধ বা ক্যাশ অন ডেলিভারির সুযোগও দিচ্ছেন অনেকে।
ব্যবসায়ীরা জানান, ঢাকায় বেশিরভাগ ক্রেতাদের পশু রাখার জায়গা না থাকায় ঈদের একদিন আগে পশু নিতে চান।