করোনাভাইরাস মহামারী শুরুর পর পোশাক শ্রমিকদের বেতন-ভাতা দিতে পাঁচ হাজার কোটি টাকার প্রণোদনা তহবিল গঠন করেছিল সরকার।
সেই তহবিল থেকে ২ শতাংশ ‘সার্ভিস চার্জে’ (সুদে) ঋণ নিয়ে এপ্রিল, মে ও জুন মাসে শ্রমিকদের বেতন-ভাতা দিয়েছেন মালিকরা।
ওই তহবিলের মেয়াদ ফুরোলেও সঙ্কট এখনও না কাটায় পোশাক খাতের জন্য শিল্প ও সেবা খাতের ৩০ হাজার কোটি টাকার প্রণোদনা তহবিল থেকে ঋণের ব্যবস্থা করা হয়েছে। এজন্য ওই তহবিলের আকার ৩ হাজার কোটি টাকা বাড়িয়ে ৩৩ হাজার কোটি টাকা করা হয়েছে।
বাংলাদেশ ব্যাংক বৃহস্পতিবার এ সংক্রান্ত একটি চিঠি সব ব্যাংকের প্রধান নির্বাহীদের পাঠিয়েছে।
চিঠিতে বলা হয়েছে, শেষবারের মতো চলতি জুলাই মাসের মজুরি দিতে এই তহবিল থেকে ঋণ পাবেন পোশাক শিল্প মালিকরা। গত জুনে যে সব উদ্যোক্তা ঋণ পেয়েছিলেন, এর বাইরে নতুন কেউ পাবেন না।
তবে এই তহবিলের ঋণে ৯ শতাংশ সুদ, যার অর্ধেক বা সাড়ে ৪ শতাংশ সরকার ভর্তুকি দেবে, বাকিটা ঋণগ্রহীতা পরিশোধ করবেন।
ফলে জুলাই মাসে শ্রমিকদের বেতন দিতে পোশাক শিল্প মালিকরা ব্যাংক থেকে এই তহবিলের ঋণ নিলে সাড়ে ৪ শতাংশ সুদ গুণতে হবে।
মহামারীতে বিপুল সংখ্যক ক্রয়াদেশ স্থগিত ও বাতিল হওয়ায় শ্রমিকদের বেতন দিতে ৫ হাজার কোটি টাকার প্রণোদনা তহবিলের বড় অংশই নিয়েছেন পোশাক শিল্প মালিকরা।
এরপর গত ২২ জুন মালিকদের দুই সংগঠন বিজিএমইএ ও বিকেএমইএর সভাপতি যৌথভাবে জুলাই, আগস্ট ও সেপ্টেম্বরে মজুরি দিতে সহজ শর্তে ঋণ চেয়ে অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামালকে চিঠি দেন। তারা বলেন, বর্তমান পরিস্থিতিতে অধিকাংশ কারখানার মজুরি দেওয়ার সক্ষমতা নেই।
মহামারীর পর সব মিলিয়ে পোশাক শিল্পে ৩১৮ কোটি ডলারের ক্রয়াদেশ বাতিল ও স্থগিত হয়। এপ্রিলে মাত্র ৩৬ কোটি ডলারের পোশাক রপ্তানি হয়। পরের মাসে তা ১২৩ কোটি ডলারে ওঠে। জুনে তা আরও বেড়ে ২২৫ কোটি ডলারে পৌঁছে। চলতি জুলাই মাসের প্রথম ১২ দিনে ৯৮ কোটি ডলারের পোশাক রপ্তানি হয়েছে।
বিকেএমইএ সহসভাপতি মোহাম্মদ হাতেম বৃহস্পতিবার বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “আমরা দুই সংগঠনের পক্ষ থেকে জুলাই, আগস্ট ও সেপ্টেম্বর মাসের বেতনের জন্য ঋণ চেয়েছিলাম এরমধ্যে এক মাসের বেতন-ভাতা পরিশোধের জন্য ঋণ দিতে রাজি হয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক।
“পরিস্থিতি আস্তে আস্তে উন্নতি হচ্ছে। তবে কতোদিনে স্বাভাবিক হবে তা নিশ্চিত করে কেউ কিছুই বলতে পারছে না। আমরা আশা করবো, সরকার অগাস্ট ও সেপ্টেম্বর মাসের বিষয়টিও বিবেচনা করবে।”