হোটেলের গ্যাস-বিদ্যুৎ বিল মওকুফ, কর ছাড়ের দাবি  

কোভিড-১৯ মহামারীতে সঙ্কটে পড়া হোটেল মালিকরা ব্যবসা টিকিয়ে রাখতে সরকারের সহায়তা চাইছেন।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 22 July 2020, 12:23 PM
Updated : 22 July 2020, 12:28 PM

বুধবার এক সংবাদ সম্মেলনে তারা আগামী ডিসেম্বর পর্যন্ত হোটেলে গ্যাস-বিদ্যুৎসহ ইউটিলিটি বিল মওকুফ এবং বিভিন্ন ক্ষেত্রে কর ছাড় চেয়েছে।

বাংলাদেশ ইন্টারন্যাশনাল হোটেল অ্যাসোসিয়েশনের (বিহা) ব্যানারে ঢাকার একটি হোটেলে এই সংবাদ সম্মেলন হয়।

সভাপতি এইচএম হাকিম আলীসহ সংগঠনের নেতারা সংবাদ সম্মেলনে ছিলেন। মূল বক্তব্য উপস্থাপন করেন সংগঠনের ডিজাস্টার ম্যানেজমেন্ট কমিটির কো-চেয়ারম্যান খালেদ উর রহমান সানি।

সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, দেশের জিডিপিতে হোটেল খাতের অবদান ৪.৪ শতাংশ। কিন্তু মহামারীর প্রভাবে এ খাতে প্রায় ২ হাজার ৫০০ কোটি টাকার ক্ষতি এরই মধ্যে হয়ে গেছে। এ অবস্থা চলতে থাকলে চলতি বছর ক্ষতির অঙ্ক ৭ হাজার কোটি টাকা ছাড়িয়ে যাবে।

প্যাসিফিক এশিয়া ট্রাভেল অ্যাসোসিয়েশনের (পিএটিএ) তথ্য তুলে ধরে সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, দেশে বেকার হয়ে পড়ার হুমকির মুখে রয়েছে ৩ লাখ ১০ হাজারের বেশি হোটেল শ্রমিক ও কর্মচারী।

সানি বলেন, “প্রধানমন্ত্রীর ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ার লক্ষ্যে ভিশন-২০২১ ও ভিশন-২০৪১ বাস্তবায়নেও পর্যটন শিল্প গুরুত্বপূর্ণ।

“অথচ এখন বেশির ভাগ হোটেলের অতিথিসংখ্যা ২-৩ শতাংশে নেমে এসেছে, যা স্মরণকালে সর্বনিম্ন। অনেক হোটেল অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ হয়ে গেছে। এ অবস্থায় হোটেলগুলো পক্ষে অপারেশন কার্যক্রম পরিচালনা করা সম্ভব নয়।”

করোনাভাইরাস মহামারীতে প্রায় অচল বিশ্ব; বিদেশি পর্যটক নেই বলে ঢাকার নামি হোটেলগুলোও এখন নিস্তব্ধ। ছবি: মাহমুদ জামান অভি

“দুঃসহ এ পরিস্থিতি থেকে উত্তরণের লক্ষ্যে শেষ ভরসা হিসেবে আমরা এই খাতকে বাঁচাতে সরকারের সরাসরি হস্তক্ষেপ কামনা করছি,” বলেন তিনি।

বিহার দাবি

>> বর্তমানে বাংলাদেশের আন্তর্জাতিক মান সম্পন্ন আবাসিক হোটেল ও অন্যান্য হোটেল এবং রিসোর্টের বিপরীতে বিদ্যমান ঋণের লভ্যাংশ বা সুদ মার্চ থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত মওকুফ এবং চলমান কিস্তি আগামী জুন, ২০২১ হতে চালু করা।

>> হোটেল এবং রিসোর্ট ব্যবসা প্রতিষ্ঠানকে সরকার ঘোষিত প্রণোদনা প্যাকেজের আওতায় ৩০ হাজার কোটি টাকা বরাদ্দের উপর অর্পিত মোট ৯ শতাংশ লভ্যাংশ/সুদ হারে (যাহা ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ৪শতাংশ এবং সরকার ৫শতাংশ) পরিশোধের সময়সীমা ৩ বছর মেয়াদী করা এবং ঋণ বিতরণের তারিখ হতে ১ বছর গ্রেস পিরিয়ড রেখে পরবর্তী দুই বছরে পরিশোধের সময়সীমা নির্ধারণ করা।
>> সরকারি আদেশ অনুযায়ী লকডাউনে ছুটিতে যাওয়া হোটেলের কর্মকর্তা কর্মচারীদের সরকারের নিজস্ব তহবিল হতে ৫০০ কোটি টাকা তহবিল মাসিক বেতন ভিত্তিতে তাদের ব্যাংক হিসাবে সরাসরি অথবা ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে প্রদান করা।

>> আবাসিক হোটেলগুলোর মার্চ, ২০২০ হতে ডিসেম্বর, ২০২০ পর্যন্ত সমস্ত ইউটিলিটি বিল (ইলেকট্রিক/ওয়াসা/গ্যাস) মওকুফ করা।

>> সিটি কর্পোরেশন এবং পৌরসভার আওতাধীন আবাসিক হোটেল এবং রিসোর্টের হোল্ডিং ট্যাক্স ২০২০-২১ পর্যন্ত মওকুফ করা।

>> আবাসিক হোটেল এবং রিসোর্টের কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের বেতন থেকে কর কর্তন মওকুফ করা।