আগামী মাস থেকে বসছে ইএফডি মেশিন

ভ্যাট আইন বাস্তবায়নে আগামী অগাস্ট মাস থেকেই ইএফডি (ইলেক্ট্রনিক ফিসক্যাল ডিভাইস) মেশিন বসানো হবে বলে জানিয়েছেন জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) চেয়ারম্যান আবু হেনা মো. রহমাতুল মুনিম।

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 16 July 2020, 12:47 PM
Updated : 16 July 2020, 12:47 PM

বৃহস্পতিবার জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের সম্মেলন কক্ষে অভ্যন্তরীণ সম্পদ বিভাগের এই জ্যেষ্ঠ সচিব ও ই-পেমেন্ট সিস্টেমের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে এ তথ্য জানান।

এই অনুষ্ঠানে ই-পেমেন্ট সিস্টেম উদ্বোধন করেন তিনি।

এনবিআর চেয়ারম্যান বলেন, “প্রাথমিকভাবে পাইলট হিসেবে এক লাখ মেশিন দিয়ে শুরু করা হবে। এরপর প্রকল্পটি সফল হলে পর্যায়ক্রমে এটি সম্প্রসারণ করা হবে।”

ইএফডি হচ্ছে একটি কম্পিউটারাইজড যন্ত্র। ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানে পণ্য বেচাকেনায় দক্ষ ব্যবস্থাপনায় এটি ব্যবহার করা হয়। রাজস্ব বিভাগ এটির মাধ্যমে ব্যাবসায়িক লেনদেন বা কেনাবেচায় সরাসরি নজর রাখতে পারে। ফলে ভ্যাট ফাঁকি অনেকাংশে কমে যাবে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।

মুনিম বলেন, “কাগজের পেমেন্ট ঝুঁকিপূর্ণ বলে আমরা ইএফডি তথা স্বয়ংক্রিয় পদ্ধতির দিকে যাচ্ছি। আস্তে আস্তে এটা বাড়ানো হবে। আগামী আগস্ট মাস থেকে আমরা মুদি দোকানসহ বাচাই করা ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে এটি বসাব।”

এর আগে গত ১৬ ফেব্রুয়ারি থেকে পরীক্ষামূলকভাবে ঢাকা ও চট্টগ্রামে এই মেশিন বসানোর কথা ছিল। যন্ত্রটি ইতিমধ্যে দেশে চলেও এসেছে। কিন্তু নির্দিষ্ট সফটওয়্যার সন্নিবেশিত করার জন্য চীনা প্রকৌশলীরা করোনাভাইরাসের কারণে আসতে না পারায় ভ্যাট মেশিন চালু করা সম্ভব হয় নি।

ই পেমেন্ট প্রকল্প সম্পর্কে এনবিআর চেয়ারম্যান বলেন, ই পেমেন্টের মাধ্যমে স্বল্পতম সময়ে ও সহজে ভ্যাট পরিশোধ করা যাবে।

কর দেওয়ার নিয়ম তুলে ধরে তিনি বলেন, করদাতার একাউন্ট থেকে সংশ্লিষ্ট ব্যাংক ইন্স্ট্রাকশন দেবে। তার একাউন্ট থেকে এটি বাংলাদেশ ব্যাংকের আরটিজিএস সিস্টেমে চলে যাবে। ওই সিস্টেমের মাধ্যমে বাংলাদেশ ব্যাংক একটি চালান তৈরি করবে। এরপর সেটি আইএফআর সিস্টেমের মাধ্যমে সবার কাছে চলে যাবে এবং শেষে করদাতা একটি মেসেজ পাবেন।

“ওই মেসেজটি ট্রেজারি জমার দলিল হিসেবে গ্রহণ করার জন্য ইতিমধ্যেই একটি সার্কুলার ইস্যু করেছি। এবছর থেকেই ব্যক্তিকর ই চালানের মাধ্যমে করার ব্যবস্থা আমরা করব এবং আমাদের পরিকল্পনা রয়েছে, আগামী বছর থেকে ব্যক্তি করের ক্ষেত্রে ই-চালান বাধ্যতামূলক করার।”

প্রাথমিকভাবে এইচএসবিসি, প্রাইম ও মিডল্যান্ড এই তিন ব্যাংকের মাধ্যমে ই পেমেন্ট দেওয়া যাবে। আগামী ডিসেম্বরের মধ্যে আরও অনেক ব্যাংককে এটাই সম্প্রসারণ করা হবে বলে জানান এনবিআর চেয়ারম্যান।

এসময় তিনি আরও বলেন, “ইতিমধ্যেই ভ্যাট অনলাইন প্রশাসন ব্যবস্থা চালু করার কার্যক্রম হাতে নেওয়া হয়েছে। এর ১৬টি মডিউলের মধ্যে রেজিস্ট্রেশন, রিটার্ন ও করদাতার অ্যাকাউন্ট এই তিনটি মডিউল বাস্তবায়ন করা হয়ে গেছে। আজ অনলাইন ই পেমেন্ট মডিউলটি উদ্বোধন করা হচ্ছে।”

তিনি জানান, ইতোমধ্যেই ১ লাখ ৬৩ হাজার ৭২০ জন করদাতা অনলাইনে টিআইএন গ্রহণ করেছে এবং গত অক্টোবর থেকে অনলাইনে রিটার্ন দাখিল শুরু হয়েছে।

ভার্চুয়াল অনুষ্ঠানে যুক্ত হয়ে কম্পট্রোলার অ্যান্ড অডিটর জেনারেল মোহাম্মদ মুসলিম চৌধুরী, অর্থ মন্ত্রণালয়ের আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের জ্যেষ্ঠ সচিব মো. আসাদুল ইসলাম, অর্থ মন্ত্রণালয়ের অর্থ বিভাগের সচিব আব্দুর রউফ তালুকদার, পেট্রোবাংলার চেয়ারম্যান এবিএম আবদুল ফাত্তাহ, ভ্যাট অনলাইন প্রকল্পের পরিচালক কাজী মোস্তাফিজুর রহমান বক্তব্য রাখেন।