মোটামুটি স্থিতিশীল থাকা মসলার বাজার গত সপ্তাহ থেকে চড়ছে। কোনো কোনো মসলার দাম কেজিতে সর্বোচ্চ ৫০০ টাকা পর্যন্ত বেড়েছে।
তবে ঢাকার খুচরা বাজারগুলোতে গত সপ্তাহের চেয়ে পেঁয়াজ, রসুন, শুকনা মরিচ ও হলুদের দাম কিছুটা কমেছে বলে দাবি করছেন বিক্রেতারা।
এলাচি কেজিতে ২০০ টাকা থেকে ৩০০ টাকা বেড়ে তিন হাজার থেকে চার হাজার ২০০ টাকায় পাইকারি বিক্রি হচ্ছে। আর খুচরায় সাড়ে তিন হাজার থেকে পাঁচ হাজার টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
দারুচিনির কেজি পাইকারিতে ৪০০ টাকা ও খুচরায় ৪৫০ থেকে ৫০০ টাকা। আর লবঙ্গ পাইকারিতে ৭৫০ টাকা থেকে ৮০০ টাকা ও খুচরা বাজারে এক হাজার টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
কারওয়ানবাজারের অ্যারাইট স্টোরের স্বত্বাধিকারী ও মসলা আমদানীকারক আবদুল মতিন বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “ঈদ খুব নিকটবর্তী, যে কারণে জেলা-উপজেলা থেকে ব্যবসায়ীদের অর্ডার বেড়ে গেছে। সেইজন্য স্টকে মাল কমে গেছে বলে দাম কিছুটা বেড়েছে।”
মালিবাগের মার্জিয়া স্টোরের বিক্রেতা খুরশেদ আলম বলেন, “গরম মসলার পাইকারি দাম বেড়েছে। এলাচি ৪০০-৫০০ টাকা কেজিতে বেড়েছে। আর দারুচিনি ও লবঙ্গের দাম বেড়েছে। জিরার দাম বাড়েনি।”
এই দোকানি জানান, গত সপ্তাহের চেয়ে দারুচিনি কেজিতে সর্বোচ্চ ১০০ টাকা বেড়েছে। লবঙ্গ কেজিতে বেড়েছে ৫০ থেকে ৮০ টাকা।
শুক্রবার নগরীর বিভিন্ন খুচরা বাজারে পেঁয়াজের কেজি ৪০ টাকা থেকে ৪৫ টাকা বিক্রি হচ্ছে। রসুন ৯০ থেকে ১১০ টাকা, হলুদ ১৮০ থেকে ২২০ টাকা, শুকনা মরিচ ২৫০ থেকে ৩২০ টাকা কেজি বিক্রি হচ্ছে।
গত সপ্তাহে প্রতি কেজি পেঁয়াজ বিক্রি হয়েছে ৪৫ টাকা থেকে ৫০ টাকা, রসুন ১০০ টাকা থেকে ১২০ টাকা, হলুদ ১৯০ টাকা থেকে ২২০ টাকা, শুকনা মরিচ ২৫০ টাকা থেকে ৩৫০ টাকা কেজি বিক্রি হয়েছে।
রামপুরা বাজারের তাহের স্টোরের স্বত্বাধিকারী আবু তাহের বলেন, “পেঁয়াজের দর কিছুটা কমেছে। আমরা এখন ৫০ টাকার নিচে বিক্রি করতেছি। আমদানি পেঁয়াজটা ৩৫ টাকা থেকে ৪০ টাকা, আর দেশি ৪৫-৫০ টাকা বিক্রি করছি।”
যদিও পাইকারী বাজারে পেঁয়াজের দাম দুই সপ্তাহ ধরে স্থিতিশীল রয়েছে বলে জানিয়েছেন আমদানিকারক ও রাজধানীর শ্যামবাজারের ব্যবসায়ী আব্দুল কুদ্দুস।
তিনি বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে জানান, দেশি পেঁয়াজ কেজি ৩০ টাকা থেকে ৩২ টাকা এবং আমদানি করা পেঁয়াজ ২০ টাকা থেকে ২১ টাকা পাইকারি দরে বিক্রি হচ্ছে। আর রসুন ৬০ টাকা থেকে ৬২ টাকা বিক্রি হচ্ছে।
“পেঁয়াজ রসুনের দাম নতুন করে বাড়েনি, কমেওনি। তবে মজুদ যথেষ্ট আছে বলে আড়তদাররা ঘরে না রেখে বাজারে ছেড়ে দিচ্ছে। আর কয়েক দিন পর যেহেতু ঈদ সেজন্য ঘরে রাখতে চায় না কেউ। এই কারণে হয়তো কেউ কেউ দুই-এক টাকা কমে ছেড়ে দিচ্ছে।”
বাজার ভেদে আলুর দাম কেজিতে তিন থেকে পাঁচ টাকা বেড়েছে। ব্রয়লার মুরগি প্রতি কেজিতে ১৫ থেকে ২০ টাকা ও ডিমের ডজনে ৫-৭ টাকা কমেছে বলে ব্যবসায়ীরা জানিয়েছেন।
বাজারগুলোতে আলু প্রতি কেজি ৩৫ থেকে ৩৮ টাকা পর্যন্ত বিক্রি হচ্ছে, যা গত সপ্তাহে ছিল ৩৫ টাকার মধ্যে।
আর গত সপ্তাহে প্রতি কেজি ব্রয়লার মুরগি ১৫০ টাকা থেকে ১৬০ টাকা বিক্রি হলেও তা এখন বিক্রি হচ্ছে ১৩৫ থেকে ১৪৫ টাকা।
সেগুনবাগিচা বাজারের মুরগি ব্যবসায়ী মো. সোহেল বলেন, “মুরগির দাম হঠাৎ করে কমে গেছে। কেজিতে ১৫ টাকা পর্যন্ত কমেছে। পাইকারী দাম কমেছে বলে আমরা ১৩৫-১৪০ টাকা কেজি বিক্রি করছি।”
কাপ্তানবাজারের মেসার্স ওমর ফারুক ট্রেডার্সের মালিক ওমর ফারুক বলেন, “ঈদ এগিয়ে আসায় পোল্ট্রি খামারিরা খামারে আর মুরগি রাখবে না। কারণ এগুলো থেকে গেলে আর বিক্রি করা সম্ভব হবে না। তখন লস বেশি গুণতে হবে। সেই কারণে মুরগি এবং খামারিরা দাম কিছুটা কমিয়ে দিয়েছে। প্রতিবছর কোরবানির ঈদ আসলে এমনই হয়।”
একই কারণে ডিমের দামও কমছে বলে জানান তিনি।