দুর্গম এলাকায় এ বছরই টেলিটকের উচ্চগতির ইন্টারনেট

এ বছরের ডিসেম্বরের মধ্যে দেশের দুর্গম এলাকায় উচ্চগতির ইন্টারনেট ও ভয়েস সেবা পৌঁছে দিতে চায় রাষ্ট্রায়ত্ত মোবাইল ফোন অপারেটর টেলিটক।

শামীম আহমেদ জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 2 July 2020, 11:37 AM
Updated : 2 July 2020, 11:49 AM

এই লক্ষ্য সামনে রেখে নেটওয়ার্ক নেই এমন এলাকায় ৪০০ বিটিএস স্থাপন করা হচ্ছে বলে ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার জানিয়েছেন।

বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “ইতিমধ্যে ২০০ বিটিএস স্থাপন করা হয়েছে। চলতি বছরের মধ্যে এ প্রকল্প শেষ হবে। টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রক বিটিআরসির সামাজিক দায়বদ্ধতা তহবিল বা এসওএফ ফান্ড থেকে এ প্রকল্প বাস্তবায়ন করা হচ্ছে।”

প্রকল্পটি বাস্তবায়ন হলে দুর্গম এলাকার সেবা বঞ্চিতরা উচ্চগতির ইন্টারনেট ও ভয়েস সেবা পাওয়ায় শিক্ষা, ব্যবসাসহ ক্ষমতায়নে এগিয়ে যাবে বলে আশা প্রকাশ করেন মোস্তফা জব্বার।

দেশের হাওর, বিল, প্রত্যন্ত এলাকা ও দুর্গম পাহাড়ি অঞ্চলের প্রায় ৭৭২টি ইউনিয়ন এখনও উচ্চগিতর ইন্টারনেট সেবা থেকে বঞ্চিত রয়েছে জানিয়ে তিনি  বলেন, “অন্য একটি প্রকল্পের কাজ চলছে, প্রকল্পটির কাজ শেষে হলে ২০২১ সাল নাগাদ এসব ইউনিয়নে উচ্চগিতর ইন্টারনেট দেয়া সম্ভব হবে।”

আগামী ডিসেম্বরের মধ্যে দুর্গম এলাকার প্রায় পাঁচ লাখ মানুষ টেলিটকের উচ্চগতির ইন্টারনেট সুবিধার আতায় আসছে বলে জানিয়েছেন অপারেটরটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক সাহাব উদ্দিন।

তিনি বলেন, “দুর্গম এলাকা নেটওয়ার্কের আওতায় আনতে ৪০০টি বিটিএস স্থাপন করা হচ্ছে। কাজ অর্ধেক শেষ হয়েছে। তবে দুর্গম এলাকায় বর্ষায় কাজ কিছুটা ধীরগতিতে চলছে। বর্ষা শেষ হওয়ার পরপরই আগামী ডিসেম্বরের মধ্যে ওইসব এলাকার লোকজন এ সেবা পাবে।

কিশোরগঞ্জ, নেত্রকোণা, সুনামগঞ্জ, হবিগঞ্জ, মৌলভীবাজার, পার্বত্য এলাকা, নোয়াখালী ও কয়েকটি ছিটমহলে এ নেটওয়ার্ক সম্প্রসারণে কাজ করা হচ্ছে।

ব্যবসার সুযোগ না থাকলেও নেটওয়ার্ক স্থাপনের কারণ জানতে চাইলে সাহাব উদ্দিন বলেন, “সরকার তো ব্যবসা করতে চায় না, জনগণের সুবিধায় এ সেবা নিয়ে আসা হচ্ছে।”

এ প্রকল্পে প্রায় ৩৮০ কোটি টাকা খরচ হচ্ছে জানিয়ে টেলিটক ব্যবস্থাপনা পরিচালক বলেন, “এসব সাইটে উচ্চগতির ইন্টারনেট সেবা নিশ্চিত করা হবে ফোরজি প্রযুক্তির মাধ্যমে।

ফাইল ছবি

“দুর্গম এলাকায় বিটিএস স্থাপন কষ্টসাধ্য এবং বিটিএসগুলো চালু রাখতে কমার্শিয়াল, জেনারেটর ও সোলারের মত ব্যবস্থা থাকতে হবে। এছাড়া ওইসব এলাকায় নেটওয়ার্ক ট্রান্সমিশন সেবাদাতা এনটিটিএন প্রতিষ্ঠান বা টাওয়ার কোম্পানিগুলো নেই। মাইক্রোওয়েভ ব্যবহার করে এক টাওয়ার থেকে অন্য টাওয়ারে নেটওয়ার্ক সম্প্রসারণ করা হবে।”

যেসব স্থানে নেটওয়ার্ক সম্প্রসারণ খুবই জটিল হবে সেসব স্থানে ভি-স্যাট এবং বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইটের মাধ্যমে নেটওয়ার্ক সচল করা হবে বলে জানান সাহাব উদ্দিন।

উচ্চগতির ইন্টারনেট সুবিধার সাথে ফ্রি ওয়াইফাই জোন স্থাপনের পরিকল্পনার কথা জানিয়ে সাহাব উদ্দিন বলেন, “দুর্গম এলাকার স্কুল ও কলেজগুলোতে টেলিটকের নেটওয়ার্ক ব্যবহার করে ফ্রি ওয়াইফাই স্পট গড়ে তোলা হবে যাতে শিক্ষার্থীরা খুব সহজে ইন্টারনেট সেবা পেতে পারে।”

বর্তমানে দেশের সব বড় শহরগুলোতে টেলিটকের ফোরজি সেবা রয়েছে এবং উপজেলা পর্যায়ে ফোরজি সেবা সম্প্রসারণে উদ্যোগ নেয়া হচ্ছে বলেও জানান তিনি।

বিটিআরসির হিসাবে, এপ্রিল শেষে দেশে মোট মোবাইল গ্রাহক ছিল ১৬ কোটি ২৯ লাখ ২০ হাজার। এর মধ্যে সাত কোটি ৪৩ লাখ ৬১ হাজার গ্রাহক নিয়ে শীর্ষে রয়েছে গ্রামীণফোন।

এছাড়া রবির ৪ কোটি ৮৮ লাখ ৪৩ হাজার, বাংলালিংকের ৩ কোটি ৪৮ লাখ ৭৬ হাজার এবং টেলিটকের ৪৮ লাখ ৪০ হাজার গ্রাহক রয়েছে।