কিছু ব্যাংকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা চাইল এফবিসিসিআই

করোনাভাইরাস মহামারীর কারণে অর্থনীতির ক্ষতি সামলাতে ঘোষিত প্রণোদনা প্যাকেজের ঋণ বিতরণে অনেক ব্যাংক অনীহা দেখাচ্ছে অভিযোগ করে সেগুলোর সরকারি আমানত প্রত্যাহারের দাবি জানিয়েছে ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠন এফবিসিসিআই।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 27 June 2020, 12:08 PM
Updated : 27 June 2020, 12:38 PM

প্রণোদনার প্যাকেজের অর্থ ছাড়ে বারবার তাগিদেও কাজ না হওয়ায় শনিবার ২০২০-২১ অর্থবছরের বাজেট নিয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এফবিসিসিআই সভাপতি শেখ ফজলে ফাহিম এই দাবি জানান।

তিনি বলেন, প্রণোদনার ঋণ বিতরণে অনেক ব্যাংক এগিয়ে এলেও কারও কারও মধ্যে ’অনীহা’ দেখা গেছে।

“যে সকল ব্যাংক মানুষের পাশে দাঁড়াচ্ছে উনাদের সরকারি আমানত বৃদ্ধি করার, আর যে সব ব্যাংক মানুষের পাশে দাঁড়াচ্ছে না, উনাদের সরকারি আমানত প্রত্যাহার করার প্রস্তাব করছে এফবিসিসিআই, সরকারের কাছে।”

মানুষের পাশে দাঁড়ানোর ব্যাংকগুলোর ক্ষেত্রে ‘বিশেষ কোনো ব্যবস্থায়’ ১% করপোরেট ট্যাক্স ছাড় দেওয়া যা কি-না, সে প্রস্তাবও করেছেন এফবিসিসিআই সভাপতি।

করোনাভাইরাস মহামারীতে অর্থনীতি পুনরুদ্ধারে সরকার যে লক্ষ কোটি টাকা প্রণোদনা তহবিল ঘোষণা করেছে, তা ব্যাংক থেকে ঋণ হিসেবে যাবে, যার সুদের একটি অংশ দেবে সরকার।

আর ঋণ দিতে ব্যাংকগুলোকে অর্থ জোগাচ্ছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। প্রণোদনার ঋণ  দ্রুত ছাড় করতে ব্যাংকগুলোকে তাগিদ দিয়ে আসছে বাংলাদেশ ব্যাংক।

এক প্রশ্নে এফবিসিসিআই সভাপতি বলেন, প্রণোদনা প্যাকেজের অগ্রগতি এবং ব্যাংকগুলোর অনীহার বিষয়ে অর্থমন্ত্রীকে চিঠি দেবেন তারা।

প্রণোদনা তহবিলের অর্থ পাওয়ার ক্ষেত্রে ঋণখেলাপিদের পাশে এফবিসিসিআই ‘দাঁড়াবে না’ বলে জানান শেখ ফাহিম।

“ইচ্ছাকৃত ঋণখেলাপি বা অর্থনৈতিক স্ক্যামস্টারদের বিষয়ে কোনো সুপারিশ এফবিসিসিআই করবে না।”

ক্ষুদ্র ও মাঝারি এবং কুটির শিল্পের ঋণ পাওয়ার ক্ষেত্রে বিশেষ ব্যবস্থাপনা তৈরির প্রস্তাব করে তিনি বলেন, এসব শিল্পের ৮৪ শতাংশই অনানুষ্ঠানিক খাতে। তাদের ৯৯ ভাগ ব্যাংকগুলোর ঋণের শর্তের উপযোগী হবে না।

“এ কারণে যারা এ খাতে আগে থেকে বিনিয়োগ করে থাকে এবং বাংলাদেশের বাস্তবতার নিরিখে পদক্ষেপ নেওয়ার কথা আমরা বলেছি।”

ফাইল ছবি

অর্থনৈতিক সবচেয়ে বড় চালিকাশক্তি ক্ষুদ্র-মাঝারি শিল্পকে অনানুষ্ঠানিক খাত থেকে আনুষ্ঠানিক খাতে নিয়ে আসার ক্ষেত্রে এখনই ‘বড় সুযোগ’ হিসাবে দেখছেন এফবিসিসিআই সভাপতি।

তিনি বলেন, ”২০২১ ও ২২ সালের মধ্যে তারা ফরমাল মার্কেটে প্রবেশ করে যাবে। পরের বছর এলডিসি গ্রাজুয়েশনের সময় গ্লোবাল মার্কেটেও ঢুকে যাবে।

“এর মাধ্যমে অ্যাক্সেস অব ক্যাপিটাল, কস্ট অব ক্যাপিটালের গণতন্ত্রায়ন হবে। কিন্তু এখনো আমরা ক্ষুদ্র, কুটির শিল্প এবং মাঝারি শিল্পের কাছে সেভাবে পৌঁছতে পারিনি। ব্যাংক-ক্লায়েন্ট রিলেশনশিপের দিকে তারা নাইও। ফলে অন্য জায়গায় বেশি সুদে ঋণ নিলেও ব্যাংকের কাছে যান না।”

ফজলে ফাহিম বলেন, “তিন বছরের অ্যাডভান্স ইনকাম ট্যাক্সগুলো বিলুপ্ত করে ট্যাক্স, ভ্যাট, ট্যারিফ কমিয়ে নেট বাড়িয়ে ইনটিগ্রেটেড অটোমেটেড রেভিনিউজ সিস্টেম বাস্তবায়ন করার প্রস্তাব এফবিসিসিআই করছে।

“অ্যাডভান্স ইনকাম ট্যাক্স আমরা ৫% থেকে ৩% এ কমানোর প্রস্তাব আমরা করেছি। সামনের দিনগুলোতে এটা বিলুপ্ত করেছি।”

ভ্যাট-ট্যাক্স আদায়ের অনিয়ম কমাতে মানুষের সংযোগ কমানোর প্রস্তাব করে তিনি বলেন, “আমরা ইনটিগ্রেটেড অটোমেটেড ট্যাক্স ও কাস্টমস রেজিমের দিকে আগাচ্ছি। যেটা সমাজের সকল শ্রেণির মানুষকে সহযোগিতা করবে, হয়রানি থেকে রক্ষা করবে এবং ট্যাক্স-জিডিপি রেশিও বাড়াবে।”