মহামারীতে ‘বিলম্ব ফি’ নিয়ে ভাবনায় বিটিআরসি

করোনাভাইরাস মহামারীর সময়ে পাওনা পরিশোধ করতে না পারা টেলিকম সেবাদাতা প্রতিষ্ঠানগুলোর বিলম্ব ফি মওকুফের বিষয়ে সরকারের কাছে সিদ্ধান্ত চাইবে টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিটিআরসি।

শামীম আহমেদ জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 3 June 2020, 03:43 PM
Updated : 3 June 2020, 03:43 PM

বুধবার বিটিআরসি কার্যালয়ে কমিশন বৈঠকে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।

বিটিআরসি চেয়ারম্যান জহুরুল হক বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন,“মহামারীর জন্য অনেক প্রতিষ্ঠানই সময়মতো বিটিআরসির পাওনা পরিশোধ করতে পারছে না। পরে এ পাওনা পরিশোধ করতে হলে বিলম্ব ফিসহ জমা দেওয়ার নিয়ম রয়েছে।”

ইতো্মধ্যে কয়েকটি আইজিডব্লিউ অপারেটরসহ অন্যান্য সেবাদাতা কোম্পানি বিলম্ব ফি প্রত্যাহারের আবেদন করেছে।

বিটিআরসি চেয়ারম্যান বলেন,“বিলম্ব ফি মওকুফের ক্ষমতা বিটিআরসির নেই। তবে কেউ আবেদন করলে তা সরকারকে জানানো হবে এবং এ বিষয়ে সহযোগিতা করা হবে। সরকার যদি বিলম্ব ফি ছাড় দেয়, তাহলে অবশ্যই তারা এ সুবিধা পাবে।“

লাইসেন্সের শর্তানুযায়ী বিভিন্ন টেলিকম সেবাদাতা প্রতিণ্ঠানগুলোকে রাজস্ব ভাগাভাগি করতে হয় বিটিআরসির সঙ্গে।

টেলিকম সেবাদাতা প্রতিষ্ঠানগুলো লাইসেন্স নাবায়ন না করলে বা ঠিক সময়ে পাওনা না দিলে প্রায়ই তাদের লাইসেন্স বাতিলসহ নানা আইনি পদক্ষেপে যায় বিটিআরসি।

বিটিআরসির রাজস্ব আয়ের সিংহভাগ আসে মোবাইল ফোন অপারেটরদের কাছ থেকে। অপারেটররা প্রতি তিনমাস পরপর তাদের রাজস্ব আয়ের ৫ দশমিক ৫ শতাংশ, এসওএফ ফান্ডে রাজস্ব আয়ের এক শতাংশ ও তরঙ্গ ফি দিয়ে থাকে। টাকার অঙ্কে যা কয়েক হাজার কোটি টাকা।

বিটিআরসির হিসেবে টেলিযোগাযোগ সেবায় বর্তমানে আইএসপি, আইজিডব্লউ, আইআইজি, এনটিটিএন, মোবাইল অপারেটর, ভিএসপি, কলসেন্টার লাইসেন্স মিলিয়ে মোট ৩ হাজার ৪৬৮টি লাইসেন্স রয়েছে।

রবি আজিয়াটা লিমিটেডের চিফ করপোরেট অ্যান্ড রেগুলেটরি অফিসার শাহেদ আলম বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন,“বিলম্ব ফি মওকুফ করা হলে টেলিকম সেবাদাতা প্রতিষ্ঠান বিশেষ করে ছোট ছোট অপারেটর যেমন আইএসপিগুলো সুবিধা পাবে।“

বিটিআরসির এক ঊর্ধবতন কর্মকর্তা বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন,“মহামারীর কারণে অনেক প্রতিষ্ঠানই সময়মত তাদের ফি জমা দিতে পারেনি। পরে এ টাকা জমা দিতে হলে আইন অনুযায়ী প্রায় ১৫ শতাংশ বিলম্ব ফি দিতে হবে। “

ইন্টারনেট সার্ভিস প্রোভাইডার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (আইএসপিএবি) সভাপতি এম এ হাকিম বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন,“আইএসপিদের বছরে একবার লাইসেন্স ফি জমা দিতে হয়,এ সময় যাদের লাইসেন্স ফি জমা দিতে হত তাদের ব্যাংকে যেতে হত তাতে সংক্রমণের ঝুঁকি তৈরি হওয়া স্বাভাবিক। এজন্যও অনেকে ফি জমা দিচ্ছে না। তবে পরিস্থিতি বিবেচনা করে বিলম্ব ফি প্রত্যাহার করা উচিত।”

ইন্টারনেট গেইটওয়ে আইআইজি প্রতিষ্ঠানের স্বত্বাধিকারী ও আইএসপিএবি সাধারণ সম্পাদক সাধারণ সম্পাদক ইমদাদুল হক বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন,“আইআইজি প্রতিষ্ঠানগুলোকে রাজস্ব আয়ের ১০ শতাংশ বিটিআরসিকে দিতে হয়। প্রতি তিন মাস অন্তর অন্তর এ টাকা বিটিআরসিতে জমা দিতে হয়। তবে অনেকেই সময়ের মধ্যে এ টাকা জমা দিতে পারেনি। পরিস্থিতি স্বাভাবিক হওয়ার পর যদি বিলম্ব ফি দিতে হয় তাহলে আরো চাপে পড়বে প্রতিষ্ঠানগুলো।”