ইন্টারনেট সচল রাখতে ৬১০ কোটি টাকা অনুদান চায় আইএসপিএবি

করোনাভাইরাস সঙ্কটে বিরূপ পরিস্থিতিতেও নিরবচ্ছিন্ন ইন্টারনেট সেবা চালিয়ে যেতে সরকারের কাছে ৬১০ কোটি টাকা অনুদান চেয়েছে ইন্টারনেট সার্ভিস প্রোভাইডার অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (আইএসপিএবি)।

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 5 April 2020, 03:06 PM
Updated : 5 April 2020, 03:07 PM

দেশে ইন্টারনেট সেবাদানকারী কোম্পানিগুলোর এই সংগঠন বলছে, ‘জরুরি সেবা খাত’ হিসাবে আইএসপিগুলো সচল রাখতে আগামী ৬ মাসের বেতন ও অফিস ভাড়া বাবদ তাদের এ অর্থ প্রয়োজন।

করোনাভাইরাস মহামারীর মধ্যে অর্থনৈতিকভাবে ঝুঁকির পাশাপাশি এ খাতের প্রায় দুই লাখ মাঠকর্মীর কর্মহীন হয়ে পড়ার শঙ্কা তৈরি হয়েছে বলে আইএসপিএবির ভাষ্য।

সংগঠনের সভাপতি আমিনুল হাকিম রোববার বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, নিরবচ্ছিন্ন ইন্টারনেট সেবা সচল রাখতে ৬১০ কোটি অনুদানসহ নয়টি দাবি সম্বলিত একটি চিঠি তারা ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার বরাবরে পাঠিয়েছেন।

সেখানে বলা হয়, করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাবের মধ্যেও ২৪ ঘণ্টা সেবা সচল রাখতে মাঠ পর্যায়ে ফাইবার টিম ও নেটওর্য়াক টিম কাজ করে যাচ্ছে।

এ পরিস্থিতিতে আগামী অন্তত দুই বছর সব ইন্টারনেট সেবাদানকারী কোম্পানির আয়কর প্রত্যাহার এবং ইন্টারনেট সেবার সকল পর্যায়ে (আইটিসি, সাবমেরিন, আইআইজি, আইএসপি) ভ্যাট প্রত্যাহার করার দাবি জানানো হয়েছে চিঠিতে।

টেলিযোগোযোগ নিয়ন্ত্রক সংস্থার হিসেবে গত ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত দেশে ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট সংযোগ সংখ্যা ছিল ৫৭ লাখ ৪৩ হাজার। আর করোনাভাইরাসের কারণে লকডাউনের মধ্যে সবাই বাসায় থাকায় বাসাবাড়িতে ইন্টারনেট ডেটা ব্যবহার প্রায় ৫০ শতাংশ এবং ব্যান্ডউইডথ চাহিদা ১৫ থেকে ২০ শতাংশ বেড়েছে বলে আইএসপি ও আইআইজিগুলোও জানিয়েছে।

আইএসপিএবি বলছে, দেশে চলমান লকডাউন পরিস্থিতির কারণে গ্রাহকের কাছ থেকে মাসিক বিল আদায়ে ভাটা পড়েছে। এর ফলে ইন্টারন্যাশনাল ইন্টারনেট গেটওয়ে (আইআইজি)  এবং নেশনওয়াইড টেলিকমিউনিকেশন ট্রান্সমিশন নেটওয়ার্কের (এনটিটিএন) মাসিক বিল দেওয়া সম্ভব হচ্ছে না।  

এ কারণে আগামী ছয় মাসের ব্যান্ডউইথ ও এনটিটিএন বিল দেওয়ার ক্ষেত্রে সরকারের সহযোগিতা চেয়েছে সংগঠনটি।

আইএসপিএবির চিঠিতে অন্য যেসব দাবি এসেছে-

>> বর্তমান পরিস্থিতিতে মোবাইল ব্যাংকিংয়ের (নগদ/বিকাশ/রকেট) মাধ্যমে বিল পরিশোধের ক্ষেত্রে সার্ভিস/ট্রানজেকশন চার্জ মওকুফ করা।

>> আইএসপিএবি স্বীকৃত ইন্টারনেট সেবাদাতা প্রতিষ্ঠানগুলোকে সহজ শর্তে ২% সুদে জামানতবিহীন স্বল্প/দীর্ঘ মেয়াদী ঋণ দেওয়া, যার গ্রেস পিরিয়ড হবে এক বছর।

>> গ্রাহক প্রর্যায়ে সেবার জন্য প্রয়োজনীয় ফাইবার কেবল ও নেটওয়ার্ক পণ্যের ওপর থেকে আমদানি শুল্ক দুই বছরের জন্য প্রত্যাহার।

>> ইন্টারনেটের ঝুলন্ত তার অপসারণ কার্যক্রম আগামী দুই বছরের জন্য বন্ধ রাখতে হবে।

ইন্টারনেট সেবাকে জরুরি সেবার আওতায় আনার পাশাপাশি এই খাতের মাঠকর্মীদের সরকারি স্বাস্থ্য ঝুঁকিভাতায় আওতায় আনারও দাবিও জানিয়েছে আইএসপিএবি।

পাশাপাশি এই সময় দেশের টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রক সংস্থা-বিটিআরসির সঙ্গে সব ধরনের রেভিনিউ শেয়ারিংয়ের শর্তও স্থগিত রাখার অনুরোধ জানিয়েছে সংগঠনটি।