বিজিএমইএ-বিকেএমইএর কাজটি ঠিক হয়নি: স্বাস্থ্যমন্ত্রী

দেশে নভেল করোনাভাইরাসে আক্রান্তের সংখ্যা যখন ক্রমশ বাড়ছে সেই সময়ে লাখ লাখ শ্রমিকের তৈরি পোশাক কারখানাগুলো খুলে দেওয়ার যে সিদ্ধান্ত বিজিএমইএ ও বিকেএমইএ নিয়েছিল তার সমালোচনা করেছেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 5 April 2020, 02:06 PM
Updated : 5 April 2020, 02:07 PM

রোববার স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের অনলাইন ব্রিফিংয়ে যুক্ত হয়ে এক প্রশ্নের জবাবে স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, “বিজিএমইএ, বিকেএমইএ তো আমাদের অধীনে নয়। সে বিষয়ে তারা আমাদের জিজ্ঞাসা করার প্রয়োজন মনে করে নাই। কিন্তু এ জিনিসটি সঠিক হয়নি- এটা আমরা মনে করি।”

অতি সংক্রামক নভেল করোনাভাইরাসের বিস্তার ঠেকাতে সারা দেশে যখন অবরুদ্ধ অবস্থা চলছে, সেই সময়ে কারখানা খোলার ঘোষণায় বিভিন্ন জেলা থেকে পায়ে হেঁটে ঢাকার পথ ধরেন হাজার হাজার পোশাক শ্রমিক। 

এই খবর প্রকাশের পর বিষয়টি নিয়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় সমালোচনা ঝড় শুরু হয়। শ্রম ঘন পোশাক কারখানায় করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ঘটলে কী হবে, তা নিয়ে উদ্বেগ জানান অনেকে।

সমালোচনার মুখে শনিবার রাতে সব ধরনের পোশাক কারখানা আগামী ১১ এপ্রিল পর্যন্ত বন্ধ রাখতে মালিকদের প্রতি আহ্বান জানান বিজিএমইএ ও বিকেএমইএর নেতারা।

বিজিএমইএ সভাপতি রুবানা হক এক বার্তায় কারখানা মালিকদের প্রতি ওই অনুরোধ জানানোর পর বিকেএমইএ সভাপতি এ কে এম সেলিম ওসমানও সব কারখানা বন্ধের সিদ্ধান্ত দেন।

মালিকপক্ষের কারখানা চালু ও বন্ধের এই দুই সিদ্ধান্তের কারণে হাজার হাজার শ্রমিকের ঘর থেকে বেরিয়ে দলবেঁধে রাস্তায় চলায় করোনাভাইরাস সংক্রমণের ঝুঁকি বেড়ে গেছে বলে মনে করছেন জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা। এর দায় বিজিএমইএ ও বিকেএমইএকেই নিতে হবে বলে মন্তব্য করেছেন তারা।

বাংলাদেশে বিজিএমইএর অধীনে ৩২০০ এবং বিকেএমইএর অধীনে ২২০০ কারখানা চালু আছে বলে দুই সমিতির পক্ষ থেকে বলা হয়ে থাকে। এসব কারখানায় ৪০ লাখের মতো শ্রমিক কাজ করেন বলে মালিকরা দাবি করে আসছেন।

নভেল করোনভাইরাসের প্রাদুর্ভাব দেখা দিলে সরকার যে জাতীয় কমিটি গঠন করেছে, তার প্রধান স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক।

শ্রমিকদের ঢাকায় আসা ঠেকাতে জাতীয় কমিটি কী ভূমিকা পালন করেছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, “এ বিষয়টি আমরা যখন বিভিন্ন গণমাধ্যমে দেখে জানতে পেরেছি, তখন বিভিন্ন সংস্থা ও বিভিন্ন জায়গায় বলেছি, যেখানে বললে পরে কার্যকর হবে। সে কারণে আশা করি, তারা ফ্যাক্টরি খোলার কাজটি থেকে বিরত থেকেছে। লোকগুলোও আবার ফিরে যাচ্ছে।”

উদ্ভূত পরিস্থিতিতে সরকার ১৪ এপ্রিল পর্যন্ত সাধারণ ছুটির মেয়াদ বাড়িয়েছে।

এই ছুটির মেয়াদ ফুরালে জাতীয় কমিটির ভূমিকা কী হবে তা জানতে চাইলে স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, “লকডাউন বা গাড়িঘুড়ি না চলা অন্যান্য মন্ত্রণালয় যারা এ কমিটিতে আছে তাদের দায়িত্বে তারা সেটা দেখবে। আমরা সমন্বয় করে কাজ করব।

“জনগণের বিভিন্ন রকমের কষ্ট, সেবা সমস্যা নিয়ে জাতীয় কমিটির ভূমিকা নিয়ে আমাদের আলোচনা হবে। আশা করি, ভালো সিদ্ধান্ত হবে। আশা করব, এমন ধরনের ঘটনার আর পুনরাবৃত্তি হবে না।”

স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের ভূমিকা নিয়ে চারপাশে নানা সমালোচনায় কাজের ‘আগ্রহ আরও বৃদ্ধি পাচ্ছে’ বলে জানান জাহিদ মালেক।

তবে বিএনপি নেতাদের সমালোচনার জবাব দিতে ছাড়েননি তিনি।

তাদের উদ্দেশে জাহিদ মালেক বলেন, “আমাদের এখানে কোনো কাজ হচ্ছে না। কিন্তু আমি বিএনপির ব্যক্তিবর্গদের বলতে চাই, আপনারা কি একটি মানুষের পাশে এসে দাঁড়িয়েছেন? কোনো সেবা এ পর্যন্ত দিয়েছেন? আমরা তো কোথাও দেখতে পাইনি।

“কাজেই আপনাদের আহ্বান করব, আপনারা মানুষের পাশে দাঁড়ান। মানুষকে সেবা দেন।”

এ সংক্রান্ত আরও খবর: