পুনর্ব্যবহারযোগ্য মাস্ক উৎপাদন করছে ব্র্যাক

নভেল করোনাভাইরাস প্রতিরোধে ব্র্যাক স্বাস্থ্যসম্মত প্রক্রিয়ায় দুই লাখের বেশি পুনর্ব্যবহারযোগ্য মাস্ক উৎপাদন শুরু করেছে।

নিউজ ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 24 March 2020, 06:47 PM
Updated : 24 March 2020, 06:47 PM

এছাড়া সংস্থাটি ইতোমধ্যে পার্সোনাল প্রোটেকটিভ ইকুইপমেন্ট বা সুরক্ষা উপকরণ তৈরির বিষয়েও পরীক্ষা-নিরীক্ষা শুরু করেছে বলে মঙ্গলবার এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে।

এতে বলা হয়, “আশা করা যায়, খুব শিগগিরই এর উৎপাদন শুরু করা সম্ভব হবে। দেশে উৎপাদিত এই সুরক্ষা পোশাক চিকিৎসকসহ দেশের বিভিন্ন পর্যায়ে স্বাস্থ্যসেবা প্রদানকারী ও অন্যান্য জরুরি সেবা প্রদানকারীদের কাছে পৌঁছানো সম্ভব হবে।”

এ প্রসঙ্গে ব্র্যাকের নির্বাহী পরিচালক আসিফ সালেহ্ বলেন, “কোভিড-১৯-এর ঝুঁকি মোকাবেলায় ব্র্যাক অতি দ্রুত তার সামর্থ্য বৃদ্ধির সর্বোচ্চ চেষ্টা করে যাচ্ছে। লাখ লাখ মানুষের কাছে স্বাস্থ্যবার্তা পৌঁছে দেওয়ার পাশাপাশি স্বাস্থ্যসম্মত উপায়ে মাস্ক তৈরি করতে শুরু করেছি আমরা। এখন আমরা দেশেই পিপিই বা সুরক্ষা পোশাক তৈরির বিষয়টি নিয়ে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করছি।

কোভিড-১৯ সংক্রমণের বিপুল বিস্তারের ফলে শিল্পোন্নত দেশগুলোতেও সুরক্ষা পোশাকের ঘাটতি দেখা দিয়েছে ফলে তা আমদানি করাও কঠিন হয়ে পড়েছে।

“আমরা আশা করছি, পরীক্ষা-নিরীক্ষায় সফল হয়ে অচিরেই আমরা এর উৎপাদনে যেতে পারব। এতে বিজিএমইএসহ সংশ্লিষ্টরা এগিয়ে আসবেন এবং বাংলাদেশ সরকারের তত্ত্বাবধানে এর উৎপাদন ও বিতরণ নিশ্চিত করা সম্ভব হবে।”

সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ইতোমধ্যে ব্র্যাকের ৫০ হাজারেরও বেশি মাঠপর্যায়ের স্বাস্থ্যকর্মী দেশের ৬১ জেলায় তৃণমূল মানুষের কাছে কোভিড-১৯ সংক্রমণ মোকাবেলার লক্ষ্যে প্রয়োজনীয় স্বাস্থ্যবার্তা ও স্বাস্থ্যসুরক্ষা উপকরণ পৌঁছে দেওয়ার কাজ করে যাচ্ছেন। এর পাশাপাশি, ব্র্যাক তার ঋণকর্মসূচির কিস্তি জমাদান ২৪ মার্চ থেকে ২ এপ্রিল পর্যন্ত স্থগিত রেখেছে এবং সরকারের নির্দেশনা মোতাবেক কাজ করে যাচ্ছে। কক্সবাজারের রোহিঙ্গা ক্যাম্প এবং স্থানীয় জনগোষ্ঠীর মধ্যেও সংক্রমণ মোকাবেলায় স্বাস্থ্যবার্তা ও সাবানসহ অন্যান্য উপকরণ বিতরণ করা হচ্ছে।

এ পর্যন্ত ব্র্যাকের ৮ হাজার ৫০০ কর্মীকে কোভিড-১৯ সংক্রমণ প্রতিরোধে করণীয় সম্পর্কে বিশেষ প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে, তারা তৃণমূল পর্যায়ে ব্র্যাকের সচেতনতা অভিযানে নেতৃত্ব দিয়ে যাচ্ছেন। সাধারণ জনগণের পাশাপাশি ব্র্যাকের উন্নয়ন কর্মসূচিগুলোতে অংশগ্রহণকারী ১ লাখ ৭০ হাজার জনের কাছে এসব বার্তা পৌঁছে দেওয়া হয়েছে যাতে তারা স্থানীয়ভাবে সংক্রমণ মোকাবেলায় অগ্রণী ভূমিকা পালন করতে পারেন।

কোভিড-১৯ মোকাবেলার বার্তা সম্বলিত ১২ লাখের ওপর লিফলেট এবং পাঁচ লাখের ওপর স্টিকার বাড়িতে বাড়িতে দেওয়া হয়েছে। এর পাশাপাশি ৭ হাজার ৫০০-এর বেশি প্যাকেট তরল সাবান, স্যানিটাইজার ও সাবান বিতরণ করা হয়েছে। ব্র্যাকের স্বাস্থ্যকর্মী ও সাধারণ মানুষের মধ্যে মাস্ক ও গ্লাভসের মতো প্রায় ১৮ হাজার সুরক্ষা পরিধেয় বিতরণ করা হয়েছে। সিটি করপোরেশনগুলোর সহযোগিতায় শহরের বিভিন্ন বস্তি এলাকা এবং জনসমাগমস্থলে হাত ধোয়ার সুবিধা ও গণপরিবহনে জীবাণুনাশক প্রয়োগের উদ্যোগও নেওয়া হয়েছে।

এই ভাইরাস মোকাবেলায় সমন্বিত উদ্যোগ গ্রহণের ওপর জোর দিয়েছেন ব্র্যাকের নির্বাহী পরিচালক আসিফ সালেহ্।

“বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে পড়া এই সংক্রমণ মোকাবেলায় আরো বেশি যৌথ উদ্যোগ গ্রহণের কোনো বিকল্প নেই। সুখের কথা, আমাদের ডাকে সাড়া দিয়ে বাংলাদেশ সরকার, দাতা সংস্থা, ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ও উন্নয়ন সংস্থাগুলো ক্রমশ এগিয়ে আসছে এবং সমন্বিত উদ্যোগ নিচ্ছে। আমরা ভবিষ্যতে এ ধরনের আরো যৌথ উদ্যোগ গ্রহণের চেষ্টা করে যাব এবং অন্যদেরও এক্ষেত্রে অনুপ্রাণিত করব,” বলেন তিনি।