ক্ষতি পোষাতে ১০ সিদ্ধান্ত বিমানের

নভেল করোনাভাইরাস মহামারীতে আকাশ পথ প্রায় বন্ধ হয়ে যাওয়ায় লোকসান পোষাতে কর্মকর্তাদের বেতন কাটা ও ওভারটাইম ভাতা বাতিলসহ ১০টি সিদ্ধান্ত নিয়েছে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 23 March 2020, 07:05 PM
Updated : 23 March 2020, 07:05 PM

বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের প্রশাসন পরিদপ্তর রোববার এক আদেশে জানিয়েছে, গত ১৫ মার্চ বিমানের নির্বাহী পরিচালকদের এক সভায় এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।

বিমানের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মোকাব্বির হোসেন সোমবার বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, সঙ্কট মোকাবেলায় এছাড়া তাদের বিকল্প ছিল না।

ফাইল ছবি

নভেল করোনাভাইরাস মহামারীর কারণে নিজেদের সুরক্ষিত রাখার চেষ্টায় অধিকাংশ দেশ আন্তর্জাতিক ফ্লাইট বন্ধ করে দেওয়ায় বিশ্বে বিমান চলাচল সীমিত হয়ে পড়েছে। বিমানের ১৫টি আন্তর্জাতিক রুটে ফ্লাইট পরিচালনা বন্ধ হয়ে ব্যবসায়িক কার্যক্রম সঙ্কুচিত হয়ে গেছে।

এই পরিস্থিতিতে রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থাটি সিদ্ধান্ত নিয়েছে, ষষ্ঠ থেকে উপরের গ্রেডের কর্মকর্তাসহ ককপিট এবং কেবিন ক্রুদের চলতি মার্চ মাস থেকে মূল বেতনের ১০ শতাংশ হারে অর্থ কেটে নেওয়া হবে।

সব প্রশাসনিক, কারিগরি ও অপারেশনাল কর্মচারী এবং প্রকৌশল কর্মকর্তাদের মার্চ মাস থেকে পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত ওভারটাইমের কোনো অর্থ দেওয়া হবে না।

এছাড়া কেবিন ক্রুদের প্রকৃত উড্ডয়ন ঘণ্টার ভিত্তিতেই প্রতি ঘণ্টায় ২১ দশমিক ৪৩ মার্কিন ডলার হারে আউটস্ট্যান্ডিং মিল অথবা ওভারসিজ অ্যালাউন্স ভাতা দেওয়া হবে।

কেবল লন্ডন স্টেশনের ক্ষেত্রে ওভারটাইম ভাতা প্রদান করার বিষয়টি বিবেচনা করা যেতে পারে বলে সিদ্ধান্ত হয়েছে।

চলতি মাস থকে নির্বাহী পরিচালক, মহাব্যবস্থাপক ও সমমানের মর্যাদার কর্মকর্তা, উপমহাব্যবস্থাপক বা সমমর্যাদার কর্মকর্তাসহ অন্যদের আপ্যায়ন ভাতা বিদ্যমান হারের ৫০ শতাংশ দেওয়া হবে। চলতি মাস থেকে কোনো মিল্ক অ্যালাউন্স দেওয়া হবে না।

চলতি মাস থেকে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা-কর্মচারীদের জন্য প্রযোজ্য ফুড সাবসিডি ভাতা বন্ধ, পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত পূর্ত ও সেবামূলক কাজের অর্থ পরিশোধ স্থগিত, বিমানের প্রকৌশল পরিদপ্তর ও অন্যান্য পরিদপ্তরের কর্মকর্তাদের ব্যক্তিগত গাড়ির জন্য জ্বালানি বা জ্বালানি ব্যয় বাবদ কোনো অর্থ দেওয়া হবে না।

মোকাব্বির বলেন, “এই সঙ্কটে বিমান যে সিদ্ধান্ত নিয়েছে, তা অত্যন্ত যৌক্তিক ও বাস্তবসম্মত। কারণ মার্চ মাসে বিমানের টিকিটের কোনোই বিক্রি নেই। আজ সাড়ে ৩হাজার কর্মকর্তা-কর্মচারী ছুটিতে গেছেন।

“সব কিছুর পরও এখন উড়োজাহাজগুলোর রক্ষণাবেক্ষণ খরচ বেড়ে গেছে বহুগুণ, যার জন্য দরকার বাড়তি লোকবল। বিভিন্ন দেশে বিমানের ১৭টি অফিসও চালাতে হচ্ছে।”

জানুয়ারি ও ফেব্রুয়ারি মাসে বিমানের ১৫০ কোটি টাকা লোকসানের পর মার্চ মাসেই এখনই ৩২০ কোটি টাকা ক্ষতি হয়েছে বলে জানান সংস্থার নির্বাহী প্রধান।

“করোনার প্রভাবে অনেক বিমান সংস্থা তো বন্ধই হয়ে গেছে, আমরা তো তবু বেতন দিচ্ছি,” বলেন তিনি।