ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের পাঁচটি দল ও অধিদপ্তরের কর্মকর্তার সমন্বয়ে বাণিজ্য মন্ত্রলায়ের তিনটি মনিটরিং টিম ঢাকা মহানগরীর ১৬টি বাজারে চালের আড়ৎ, কেমিকেলের দোকানসহ বিভিন্ন সুপার শপে অভিযান চালায়। এসব অভিযানে ৩১টি প্রতিষ্ঠানকে চার লাখ ২৮ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়।
ভোক্তা অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক বিকাশ চন্দ্র দাস, সহকারী পরিচালক ফাহমিনা আক্তার, মাগফুর রহমান, আবদুল জব্বার মণ্ডল, প্রণব কুমার প্রামাণিক ও মাহমুদা আকতার অভিযানে ছিলেন।
রাজধানীর নিউমার্কেট, লালবাগ কেল্লার মোড়, বাবুবাজার চালের আড়ৎ, মিটফোর্ড, শ্যামবাজার, কারওয়ান বাজার, বনশ্রী, শান্তিনগর বাজার, খিলগাঁওয়ের তালতলা, এজিবি কলোনি, হাজারীবাগ, জিগাতলা, মিরপুর শাহ আলী পেঁয়াজের আড়ৎ, শাহ আলী চালের আড়ৎ, মিরপুর-১০ বাজার, গুলশান-২ বাজার এলাকায় এসব অভিযান চালানো হয়।
দুপুরে লালবাগ কেল্লার মোড়ে একজন পাইকারি চাল বিক্রেতাকে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা ও প্রতিষ্ঠান সিলগালা করা হয়।
চালের দাম কিছুটা বেড়ে যাওয়ার পর মিলগেট থেকে সর্বোচ্চ ২৪০০ টাকায় সবচেয়ে প্রচলিত রশিদ ব্রান্ডের চাল বিক্রি হচ্ছিল। সাধারণত অন্যান্য ব্র্যান্ডের চালগুলো রশিদের চেয়ে আরো কম দামে বিক্রি হয়ে থাকে। আর ঢাকার এই ধরনের পাইকারি দোকান গুলো সরাসরি মিল থেকে চাল সংগ্রহ করে থাকে।
গত শুক্রবার রাজধানীর বিভিন্ন পাইকারি ও খুচরা দোকানে রশিদ ব্রান্ডের মিনিকেট চালের ৫০ কেজির বস্তা ২৮০০ টাকা থেকে ৩৩০০ টাকার মধ্যে বিক্রি হতে দেখা গেছে।
জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের ঢাকা বিভাগীয় কার্যালয়ের পরিচালক মনজুর মোহাম্মদ শাহরিয়ার জানান, ওই ব্যবসায়ীসহ ওই এলাকার আরও কয়েকজন ব্যবসায়ীর বিরুদ্ধে বিভিন্ন সোর্স থেকে সুনির্দিষ্ট অভিযোগ এসেছে তার কাছে। চাল বেচা-বিক্রিতে বিভিন্ন ধরনের কারসাজির সুনির্দিষ্ট অভিযোগের ভিত্তিতেই এখানে অভিযান পরিচালনা করা হয়েছে। পরিস্থিতির সুযোগ নিয়ে বিনা কারণে এ ধরনের মূল্যবৃদ্ধি এক ধরনের ডাকাতি।
“আমরা আপাতত তাদেরকে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করলাম এবং দোকানটি সিলগালা করে রাখলাম। এটি অন্যান্য অসাধু ব্যবসায়ীদের প্রতি একটি কড়া বার্তা।”
প্রতিষ্ঠানটি সকালে ২৪৫০ টাকায় যে চাল বিক্রি করছিল বিকালে তা বিক্রি করে ২৫৫০ টাকায়। কেনা মূল্য বেড়ে যাওয়ার কারণে দাম বেড়ছে বলে দাবি করলেও এর প্রমাণ হিসেবে কোনো ভাউচার দেখাতে পারেনি তারা।
অধিদপ্তরের ঢাকা বিভাগীয় কার্যালয়ের পরিচালক মনজুর মোহাম্মদ শাহরিয়ার এর ফেইসবুক লাইভে এই দৃশ্য দেখা যায়।
মিটফোর্ডে অভিযানকালে স্যানিটাইজার তৈরির কাঁচামাল আইপিএ (আইসো প্রোপাইল অ্যালকোহল) বিক্রিতে জালিয়াতি করায় এক প্রতিষ্ঠানকে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়।
শান্তা বিজনেস অ্যাসোসিয়েশন নামের ওই দোকানটিতে গত ১০ মার্চ যে আইপিএ ১৮২ টাকা করে বিক্রি করা হচ্ছিল ১১ মার্চ সেটা আড়াইশ টাকায় বিক্রি হয়। ২১ মার্চ বিক্রি করা হয় ৪০০ টাকা দরে। প্রতিষ্ঠানটি দাম বাড়ার কোনো কাগজপত্র দেখাতে পারেনি।
এদিন রাজধানীর নিউমার্কেট ও শ্যাম বাজার এলাকায় ভোক্তা এবং বিক্রেতাদেরকে সচেতন করে মাইকিং করে জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর।
তিনি বলেন, ৬৫ টাকায় কেনা পেঁয়াজ কিনে ৮০ টাকায় বিক্রি করায় গুলশানে ডলি সুপার শপ নামের দোকানকে ২০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়।
এছাড়া মূল্য তালিকা না থাকায় কারওয়ান বাজারে কয়েকটি দোকানকে পাঁচ হাজার টাকা করে জরিমানা করা হয়।
বনশ্রী এলাকায় ক্রেতাদেরকে প্রয়োজনের অতিরিক্ত মালামাল কিনতে দেখে ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের পক্ষ থেকে তাদের কাউন্সিলিং করা হয়।