বুধবার রাজধানীর মহাখালীতে ব্র্যাকের প্রধান কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলন করে প্রাদুর্ভাব মোকাবেলায় প্রস্তুতি তুলে ধরেন সংস্থাটির নির্বাহী পরিচালক আসিফ সালেহ।
তিনি বলেন, “মহাখালীতে ব্র্যাকের প্রধান কার্যালয়ে দুই হাজার কর্মী কাজ করেন। এদের মধ্যে যারা বর্তমান পরিস্থিতিতে জরুরি কাজে নিয়োজিত নয় (নন এসেনশিয়াল স্টাফ) তারা আগামী রবিবার থেকে অফিসে আসবেন না। সামনের সপ্তাহ পুরোটাই এভাবে চলবে। ২৮ মার্চ পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করে কর্তৃপক্ষ নতুন সিদ্ধান্ত জানাবেন।”
প্রধান কার্যালয়ের বাইরে সারা দেশে ২৫ হাজার শাখা অফিসে ৪৫ হাজার কর্মী রয়েছে; এর বাইরে সারা দেশে ৫০ হাজারের মতো স্বাস্থ্যকর্মী রয়েছে ব্র্যাকের।
উচ্চ মাত্রায় ছোঁয়াচে এই ভাইরাসের প্রাদুর্ভাবে মধ্যে কর্মসূচি সংকুচিত করারও সিদ্ধান্ত নিয়েছে বিশ্বের সবচেয়ে বড় এই এনজিও।
ঠাণ্ডা জ্বর, সর্দি-কাশিসহ করোনা ভাইরাসের কারণে হোম কোয়ারিন্টনে থাকতে সরকারের পক্ষ থেকে যে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে, তা যেন যথাযথভাবে পালন করা হয়, তাতে ব্র্যাক সহযোগিতা করতে প্রস্তুত রয়েছে বলে তিনি জানান।
“করোনাভাইরাস পরিস্থিতি বিবেচনায় অনলাইনে গণসচেতনা তৈরিতে কাজ করছে ব্র্যাক। মাঠপর্যায়ে সচেতনতা বাড়াতে ৫ এপ্রিল সারা দেশে ৫০ হাজার বাড়িতে গিয়ে গণসচেতনা কার্যক্রম পরিচালনার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে ব্র্যাক।”
ব্র্যাকের নির্বাহী পরিচালক বলেন, শিক্ষা বা ক্ষুদ্র ঋণ বিভাগে যারা কাজ করছেন, করোনাভাইরাস পরিস্থিতির কারণে তাদের সবাইকে এই সচেতনামূলক কার্যক্রমে যুক্ত করা হবে।
“আগামী দুই সপ্তাহ পার্টিকুলারলি কাজ করব, জনগণের মধ্যে সত্যিকারের সামাজিক দূরত্ব কতটা বাড়ানো যায়।”
নতুন করোনাভাইরাস পরিস্থিতিতে সহায়তায় জন্য সকালে বেসরকারি প্রতিষ্ঠানগুলোর সঙ্গে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরে বৈঠক হয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, “আমরা এখন তাকিয়ে আছি, সরকারের দিক নির্দেশনার জন্য।”
নভেল করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে বুধবারই দেশে প্রথম একজনের মৃত্যু হয়েছে। এখন ১৪ জন আক্রান্ত হওয়ার খবর জানিয়েছে সরকারের রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের (আইইডিসিআর)। দেশে ১৬ জন আইসোলেশনে আছেন এবং ৪২ জন সরকারি ব্যবস্থাপনায় কোয়ারেন্টিনে আছেন।
ইউনিলিভারসহ দেশের বেসরকারি সব টেলিকম কোম্পানিগুলো তাদের কর্মীদের বাসা থেকে কাজ করতে নির্দেশ দিয়েছে। তারই ধারাবাহিকতায় ব্র্যাকও তাদের সিদ্ধান্তের কথা জানায় বুধবার।
অল্টারনেটিভ পপ আপ ফ্যাসিলিটি
নতুন করোনাভাইরাসের লক্ষণধারীদের চিকিৎসার জন্য বড় আকারের বিকল্প স্বাস্থ্যসেবা কেন্দ্র খোলার পরামর্শ দেন ব্র্যাকের নির্বাহী পরিচালক।
তিনি বলেন, “অল্টারনেটিভ পপ আপ ফ্যাসিলিটি, আইসোলেশন ফ্যাসিলিটি তৈরি করতে হবে। সেটা ইনডোর স্টেডিয়াম হতে পারে, গভর্নমেন্টের বড় কোনো ট্রেনিং সেন্টারে হতে পারে, কমিউনিটি সেন্টারে হতে পারে….যেখানে আমরা জাস্ট বেড বসিয়ে দিতে পারব। এসব সে জিনিস এনশিউর করা জরুরি।”
এখন করোনাভাইরাসের উপসর্গ দেখা গেলে নমুনা সংগ্রহের কাজটি করছে আইইডিসিআরের ভ্রাম্যমাণ ইউনিট। সে প্রক্রিয়াটিকেও বিকেন্দ্রীকরণ করা জরুরি বলে মনে করেন তিনি।
পাশাপাশি সরকারি ও বেসরকারি হাসপাতাল ও ক্লিনিকে কর্মরত চিকিৎসক ও নার্সদের জন্য হেলথ কেয়ার ইকুইপমেন্ট (পিপিই) সরবরাহ দ্রুত নিশ্চিত করারও অনুরোধ জানান তিনি।