করোনাভাইরাস: বাসায় থেকে কাজ করবেন টেলিকমকর্মীরা  

নভেল করোনাভাইরাস সংক্রমণ থেকে কর্মীদের রক্ষায় বিশেষ ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে বাংলাদেশের টেলিকম অপারেটরগুলো।

শামীম আহমেদ জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 16 March 2020, 02:21 PM
Updated : 16 March 2020, 04:17 PM

দেশের সবচেয়ে বড় অপারেটর গ্রামীণফোন ইতোমধ্যে তাদের প্রায় দুই হাজার ৩০০ কর্মীর মধ্যে যারা সরাসরি গ্রাহক সেবার সঙ্গে জড়িত নন, তাদের বাসা থেকে কাজ করতে উৎসাহিত করছে।

রবি ও বাংলালিংকও একই প্রক্রিয়া গ্রহণ করেছে।

গ্রামীণফোনের হেড অব এক্সটার্নাল কমিউনিকেশন মুহাম্মদ হাসান এক বার্তায় বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “নিরাপত্তা আমাদের কাছে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ।

“আমাদের এমপ্লয়ি এবং ব্যবসায়িক পার্টনারদের নিরাপদ রাখতে আমরা সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের গাইডলাইন বিবেচনায় নিয়ে ইতোমধ্যে প্রস্তুতি গ্রহণ করেছি।”

“সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনায় নিয়ে আমাদের এমপ্লয়িদের নিরাপত্তা বিবেচনায় নিয়ে আমরা একটি পরিকল্পনা করেছি, আমাদের এমপ্লয়ি যারা সরাসরি গ্রাহক সেবার সাথে জড়িত নন তাদেরকে বাসা থেকে অফিস করার জন্য উৎসাহিত করছি।”

তবে ৭ কোটি ৬৫ লাখ গ্রাহকের চলমান সেবা নিশ্চিত করার বিষয়টিও অগ্রাধিকার দেওয়ার কথা জানিয়ে হাসান বলেন, “যারা সরাসরি গ্রাহক সেবা দেবেন, তাদের জন্য যথাযথ নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে উৎসাহিত করছি।”

রবি আজিয়াটা লিমিটেডের চিফ করপোরেট অ্যান্ড রেগুলেটরি অফিসার শাহেদ আলম বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “বাসা থেকে কাজ রবির কর্মীরা আগে থেকেই করে থাকে। এক্ষেত্রে আমাদের কর্মীদের আরও সচেতন করা হয়েছে। নিরবিচ্ছিন্ন নেটওয়ার্ক রাখতে সব ধরনের প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে।”

সারা দেশে রবির কর্মী রয়েছে প্রায় এক হাজার ৩০০।

বাংলালিংকের চিফ কর্পোরেট অ্যান্ড রেগুলেটরি অ্যাফেয়ার্স অফিসার তাইমুর রহমান বলেন, বাংলালিংক (নেটওয়ার্কের অপারেশন, গ্রাহক সেবা, এলআইসির সহায়তা ইত্যাদি) প্রয়োজনীয় পরিষেবাগুলি বাদ দিয়ে ২০ মার্চ থেকে বেশিরভাগ কর্মচারীর জন্য দুই সপ্তাহের জন্য 'বাড়ি থেকে কাজ' বাস্তবায়নের সিদ্ধান্ত নিয়েছে।

সারা দেশে বাংলালিংকের প্রায়  এক হাজার ১০০ কর্মী রয়েছে।

টেলিটক বাংলাদেশের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সাহাব উদ্দিন বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “কর্মীদের বাসা থেকে কাজ করার কোনো নির্দেশনা এখনও দেওয়া হয়নি। তবে টেলিটকের প্রায় ৫০০ কর্মীকে করোনাভাইরাস সচেতনতায় বিশেষ ব্যবস্থার আওতায় মাস্ক ও হ্যান্ড স্যানিটাইজার ব্যবহারে উৎসাহিত করা হয়েছে।”

চীন থেকে ছড়িয়ে পড়া নভেল করোনাভাইরাস ইতোমধ্যে বৈশ্বিক মহামারী রূপ নিয়েছে। এতে আক্রান্তের সংখ্যা দেড় লাখ ছাড়িয়েছে, মৃতের সংখ্যা ছাড়িয়েছে ৬ হাজার।

ছোঁয়াচে কভিড-১৯ রোগ বাংলাদেশেও সংক্রমিত হয়েছে। দেশে মোট আটজনের দেহে নভেল করোনাভাইরাস ধরা পড়েছে। 

ইউনিলিভারের কর্মীরাও

কর্মীদের বাসায় বসে অফিসের কাজ চালানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে ইউনিলিভারসহ কয়েকটি বহুজাতিক কোম্পানিও।

পরবর্তী ঘোষণা দেওয়ার আগ পর্যন্ত এ সিদ্ধান্ত কার্যকর থাকবে বলে জানিয়েছে ইউনিলিভার বাংলাদেশ।

ইউনিলিভারের হেড অব করপোরেট অ্যাফেয়ার্স শামীমা আকতার বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “আমাদের কর্মীরা এখন থেকে বাসায় বসেই অফিসের কাজ করবেন। এটা আমাদের গ্লোবালি ডিসিশন হয়েছে।

“এটা শুধু আমাদের কর্মীদের নিরাপত্তার জন্যই নয়; বরং সামাজিক দায়বদ্ধতার অংশ হিসাবে এমন সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। কর্মীরা নিজ নিজ বাসায় থেকে প্রযুক্তির সাহায্য অফিসের কাজ চালাবেন।”

বাংলাদেশে ইউনিলিভারের উৎপাদন ও কারখানার কার্যক্রম চালু থাকবে বলে জানান তিনি।

“আমাদের ফ্যাক্টরিগুলো অতটা এক্সেসেবল না। সেখানে এমনিতেই বেশ সুরক্ষিত অবস্থায় কাজ চলে। তাছাড়া এই মুহূর্তে ফ্যাক্টরি বন্ধ করলে বাজারে একটা পণ্য সঙ্কট ‍সৃষ্টি হবে।”

এই সিদ্ধান্তের আওতায় বাসায় বসে অফিসের কাজ করবেন ইউনিলিভারের অন্তত চারশ কর্মী।

এদিকে ও রেকিট অ্যান্ড বেনকিজার গ্রুপের কর্মীদেরকেও বাসায় বসে ফোন, ইমেইল ও হোয়াটসআপের মাধ্যমে অফিসের কাজ সারতে নোটিস দিয়েছে কর্তৃপক্ষ।