গার্মেন্ট বন্ধ করার মতো পরিস্থিতি হয়নি: বাণিজ্যমন্ত্রী

বাংলাদেশে নভেল করোনাভাইরাসের রোগী ধরা পড়লেও তৈরি পোশাক কারখানা বন্ধ করার মতো পরিস্থিতি এখনও হয়নি বলে মনে করেন বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি।

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 15 March 2020, 12:47 PM
Updated : 15 March 2020, 12:47 PM

কভিড-১৯ বৈশ্বিক মহামারী রূপ নেওয়ায় দেশের শ্রমঘন শিল্প তৈরি পোশাক কারখানাগুলো বন্ধ করা হবে কি না, রোববার এক অনুষ্ঠানে সাংবাদিকরা তা জানতে চান বাণিজ্যমন্ত্রীর কাছে।

জবাবে তিনি বলেন, “এখনও সে রকম কোনো সমস্যা হয়নি যে গার্মেন্ট ফ্যাক্টরিতে এ ধরনের..

“প্রতিটি গার্মেন্ট ফ্যাক্টরিতে একটা অ্যাওয়ারনেস বিল্ডআপ করা হয়েছে। অধিকাংশ ফ্যাক্টরিতে মাস্ক ও হাত ধোয়ার জন্য সাবান দেওয়া হয়েছে এবং সচেতন করা হয়েছে।”

“কোনো ফ্যাক্টরিতে এমন অবস্থা হয়নি, যাতে করে বন্ধ করে দিতে হবে। আমরা তেমনটা চিন্তা করিনি। স্কুলগুলোও বন্ধের চিন্তা করিনি।”

করোনাভাইরাসের প্রতিরোধ ও নিয়ন্ত্রণে শ্রমঘন শিল্পখাতের মালিকদের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে ইতোমধ্যে নির্দেশনা দিয়েছে শ্রম ‍ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়।

বিশেষত তৈরি পোশাক, চামড়া ও চামড়াজাত পণ্য, হিমায়িত ও প্লাষ্টিক পণ্য শ্রমঘন শিল্পখাতের সব কর্মীকে থার্মাল স্ক্যানার দিয়ে পরীক্ষার পর কারখানায় ঢোকাতে বলা হয়েছে।

কারও মধ্যে উপসর্গ দেখা দিলে তাৎক্ষণিকভাবে ওই কর্মীকে বাধ্যতামূলক ছুটি দিতে বলা হয়েছে। কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন অধিদপ্তরের যুগ্ম-মহাপরিদর্শক ডা. মো. মোস্তাফিজুর রহমানকে এ বিষয়ক ফোকাল পয়েন্ট কর্মকর্তা হিসেবে নির্ধারণ করা হয়েছে। তার মোবাইল নম্বর-০১৭১১৬৪১৩৪৫।

বিশ্ব ভোক্তা অধিকার দিবস উপলক্ষে রোববার সচিবালয়ে আয়োজিত অনুষ্ঠানে করোনাভাইরাস নিয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের মুখোমুখি হন বাণিজ্যমন্ত্রী।

‘হাঁচিতেও মরে ১০-২০ জন’

করোনাভাইরাস নিয়ে আতঙ্ক সৃষ্টি না করার আহ্বান জানিয়ে টিপু মুনশি বলেন, “১৭ কোটি মানুষের দেশে তিনজন রোগী পাওয়া গেছে। গতকাল দেখলাম ৮ জনকে তারা সন্দেহভাজন রোগী করেছে।

“এদেশে তো হাঁচি দিয়েই মারা যায় প্রতিদিন ১০-২০ জন করে, তাই না? এত ভয় পাওয়ার কিছু নেই। সরকার যথেষ্ট ভালো অবস্থান নিয়েছেন।”

তবে বিশ্বব্যাপী করোনাভাইরাস সংক্রমণের কারণে পোশাক শিল্পে কাঁচামালে টান পড়েছে বলে জানান টিপু মুনশি।

তিনি বলেন, “রেডিমেট গার্মেন্ট সেক্টর যেখানে ৬০ পার্সেন্ট ম্যাটারিয়েল দেশের বাইরে থেকে আনা হয়, সেখানে আমরা কিছুটা স্লো দেখছি। সুখের বিষয় চায়না আবার ফ্যাক্টরিতে ফিরে গেছে, কিছুটা প্রভাব পড়েছে আমাদের ইম্পোর্টে উপর সেটা সত্যি কথা সেটা কিভাবে কাভার করা যায়, সেটা চেষ্টা করা হচ্ছে।”

কিছু দেশ তৈরি পোশাকের ক্রয় আদেশ বাতিল করতে চাচ্ছে জানিয়ে বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, “আমার মনে হয় সেটা নিয়ে আমাদের সমস্যা কিছুটা হবে।”

কোন কোন দেশ ক্রয় আদেশ বাতিল করতে চাচ্ছে- জানতে চাইলে তিনি বলেন, “সকালে খবর পেলাম ইতালি কিছু কিছু ক্রয় আদেশ বাতিল করতে চেয়েছে।

“একটা বড় সমস্যা হচ্ছে সঠিক সময়ে মাল না পাওয়ার কারণে ফাইনাল সেলার যারা তারা ক্যানসেল করতে চাচ্ছে বা তারা বলতে চাচ্ছে প্লেনে করে পাঠাও। প্লেনেও সমস্যা তৈরি হয়েছে। যেসময় মালটা বিক্রি হবে তা যদি পিছিয়ে যায় বা যেসময় মালটা নেবে তারা তো করোনার ভয়ে আক্রান্ত। সারা পৃথিবী এখন অস্থির সময় পার করছে।”

পরিস্থিতি মোকাবেলায় বাণিজ্য মন্ত্রণালয় ‘খুব শক্তভাবে’ কাজ করছে বলে জানান টিপু মুনশি।

পেঁয়াজ চাষিদের স্বার্থ ‘রক্ষা করা হবে’

ভারত পেঁয়াজ রপ্তারি শুরু করেছে এ অবস্থায় পেঁয়াজ আমদানি করা হবে কি না- জানতে চাইলে বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, “আমাদের উৎপাদকদের সন্তুষ্ট করতে হবে।

“আমাদের দেশের উৎপাদন খরচ ১৬ থেকে ১৭ টাকা, এর মধ্যে ২০ শতাংশ লাভ করলে তাহলে ২০ থেকে ২১ টাকায় .. আমরা লক্ষ্য রাখবো আমাদের গ্রোয়াররা যাতে ২০ থেকে ২৫ টাকার মধ্যে বিক্রি করতে পারে।”

“যখনই দেখব, এই দামটা তারা পাচ্ছে না তখনই যে কোনোভাবে রক্ষা করার জন্য যা যা করণীয় তা সবকিছু করব,” বলেন তিনি।

টিপু মুনশি বলেন, “আমরা প্রতিনিয়ত আমাদের মার্কেটসহ ভারতের মার্কেটও ফলো করছি, আমাদের দেশেও কিন্তু ৪০ থেকে ৪৫ টাকায় চলে আসছে। প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, আগামী ৩ বছরের মধ্যে পেঁয়াজ রপ্তানি করতে চান, সে লক্ষ্যে কাজ করা হচ্ছে।”

কৃষিমন্ত্রী আব্দুর রাজ্জাক ভরা মৌসুমে পেঁয়াজ আমদানি বন্ধের পক্ষে বলে আসছেন।