এবার টাকা দেবে গ্রামীণফোন, আশা বিটিআরসির

নিরীক্ষা দাবির এক হাজার কোটি টাকা সোমবারের মধ্যে পরিশোধ করতে আপিল বিভাগের নির্দেশনার পর গ্রামীণফোন এবার টাকা দিয়ে দেবে বলে আশা প্রকাশ করেছেন নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিটিআরসির প্রধান।

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 20 Feb 2020, 10:54 AM
Updated : 20 Feb 2020, 07:35 PM

বৃহস্পতিবার নিরীক্ষা দাবির টাকা পরিশোধ নিয়ে আদালতের নির্দেশনার পর এক প্রতিক্রিয়ায় বিটিআরসি চেয়ারম্যান জহুরুল হক সাংবাদিকদের এ কথা বলেন।

টাকা না দিলে বিটিআরসির পদক্ষেপের বিষয়ে জানতে চাইলে বিটিআরসি প্রধান বলেন, “আমার যতটুকু মনে হয় টাকাটা তারা দিয়ে দেবে, যদি না দেয় আইন যেসব ক্ষমতা বিটিআরসিকে দিয়েছে…বিটিআরসি কখনও কোনো বেআইনি কাজ করে না, করবেও না।”

“তারা তো কোর্টে গেল, রিভিউ আদেশে বলে দিল এক হাজার কোটি টাকা দিতে হবে। আর তো কোনো যাওয়ার জায়গা নেই, আর কোনো যাওয়ার জায়গা আছে বলে আমার মনে হয় না ।“

আপিল বিভাগ গত ২৪ নভেম্বর গ্রামীণফোনকে দুই হাজার কোটি টাকা পরিশোধ করতে নির্দেশ দিয়েছিল। সেজন্য তাদের দেওয়া হয়েছিল তিন মাস সময়, যা ২৪ ফেব্রুয়ারি শেষ হচ্ছে।

ওই সময় শেষ হওয়ার আগে বিটিআরসিকে ১০০ কোটি টাকা দিয়ে আলোচনা চালু রাখার প্রস্তাব দিয়েছিল গ্রামীণফোন। কিন্তু নিয়ন্ত্রক সংস্থা তাতে রাজি হয়নি।

সে বিষয়টি তুলে ধরে বৃহস্পতিবার আপিল বিভাগে রিভিউ শুনানিতে ছয় মাসের কিস্তিতে ওই দুই হাজার কোটি টাকা পরিশোধের অনুমতি চাওয়া হয়। কিন্তু শুনানি শেষে আদালত সোমবারের মধ্যে এক হাজার কোটি টাকা পরিশোধের নির্দেশ দেয়।

বিটিআরসি চেয়ারম্যান জহুরুল হক বলেন, “গতকাল ১০০ কোটি টাকা নিয়ে তারা এসেছিল, বলছে যে এটা আমরা শুরু করলাম, বিগিনিং। আমরা বললাম এই বিগিনিংটা যদি আগে শুরু করতেন তাহলে সকলের জন্য ভালো হতো। যেহেতু মামলার ব্যাপার, আপিল বিভাগের দুই হাজার কোটি টাকা দেওয়ার নির্দেশ আছে, আমরা টাকা নেইনি।

“আদালত পরিষ্কারভাবে বলে দিয়েছে আগামী সোমবারের মধ্যে এক হাজার কোটি টাকা জমা দিতে হবে। এক হাজার কোটি টাকা জমা দেওয়ার পরে কিস্তির কি হয়, না হয় দেখবে।”

তিনি বলেন, “এক হাজার কোটি টাকা দেওয়ার পরে আদালত যে আদেশ দেয় সেই আদেশ আমরা মানব। এখন বলটা গেছে কোর্টে, আমাদের কাছে নেই। আমরা অনেকদিন চেষ্টা করেছি আলোচনার জন্য।”

যদি টাকা না দেয় প্রশ্নে বিটিআরসি চেয়ারম্যান বলেন, “সুপ্রিম কোর্ট বলে দিয়েছে না দিলে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। আইনে যা যা ক্লজ আছে তা করা হবে। ওরা যদি টাকা না দেয় আমরা অ্যাডমিনিস্ট্রেটর নিয়োগ করব। সরকারের সঙ্গে আলোচনা করে সবচেয়ে যোগ্য, অভিজ্ঞ ও সৎ মানুষকে আমরা এডমিনিস্ট্রেটর নিয়োগ করব।” 

প্রশাসকের কাজের বর্ণনা দিয়ে জহুরুল হক বলেন, “উনার কাজ হবে এই ইন্ডাস্ট্রি চালানো। তাদের বেতন-ভাতা যা যা আছে সব দেবে, সব করবে। এরপর টাকা যা বেশি হবে সেই টাকা সরকারের কাছে জমা দেবে। সে টাকা যখন জমা দেওয়া শেষ হয়ে যাবে তখন মেয়াদ শেষ হবে।”

গ্রামীণফোন এক হাজার কোটি টাকা জমা দিলে এনওসি বন্ধের যে নির্দেশনা তা প্রত্যাহার করা হবে কিনা জানতে চাইলে বিটিআরসি প্রধান বলেন, “২৪ তারিখে আদালত কি নির্দেশ দেয়, তার উপর নির্ভর করবে, এনওসির বিষয়ে সিদ্ধান্ত ২৪ তারিখেরর পর, টাকা তো ২৪ তারিখের মধ্যে দেবে, কাল তো ব্যাংক বন্ধ, আজ টাকা দেবে কিনা আমি জানি না।”

এদিকে রিভিউ আবেদনে ‘প্রত্যাশিত ফলাফল’ না পাওয়ার কথা বলেছে গ্রামীণফোন।

“আপিলেট ডিভিশনের আদেশের বিষয়ে আমরা অবগত। রিভিউ পিটিশানের মাধ্যমে আমরা প্রত্যাশিত ফলাফল পাইনি। এই মুহূর্তে আমাদের কোনো মন্তব্য নেই,” এক বিবৃতিতে জানিয়েছে গ্রামীণফোন।