ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় সূর্যমুখীর হাসি আশা জাগাচ্ছে চাষির

ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় প্রথমবারের মতো সূর্যমুখী চাষ শুরু হয়েছে। ভাল ফলনের সম্ভাবনা আশা জাগাচ্ছে চাষিদের মনে।

ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 19 Feb 2020, 08:12 AM
Updated : 23 Feb 2020, 01:06 PM

জেলার নয়টি উপজেলার সব কয়টিতে কৃষি বিভাগের সহযোগিতায় দৃষ্টিনন্দন এই ফসলের চাষ হচ্ছে।

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মো. রবিউল হক মজুমদার বলেন, এ বছরই প্রথম এ জেলার সব উপজেলায় প্রায় ৪০ হেক্টর জমিতে ৩০০ কৃষক একযোগে হাইসান-৩৩ জাতের সূর্যমুখি চাষ শুরু করেছেন। এর আগে ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় সূর্যমুখির চাষ হয়ে থাকলেও তা বিচ্ছিন্নভাবে কেউ করে থাকবেন।

কৃষি অফিস থেকে বিনামূল্যে বীজ, সার ও পরিচর্যার উপকরণ দেওয়া হয়েছে বলে চাষিরা জানিয়েছেন।

সদর উপজেলা ও আশুগঞ্জের বিভিন্ন ক্ষেতে গিয়ে দেখা গেছে, ফুটে থাকা হলুদ সূর্যমসুখীর সমাহারে নয়নাভিরাম দৃশ্যের অবতারণা হয়েছে। চারদিকে হলুদ ফুলের মনমাতানো ঘ্রাণ আর মৌমাছির গুঞ্জনে মুখরিত হয়ে উঠেছে কৃষকের জমি। এ যেন ফসলি জমি নয়, দৃষ্টিনন্দন এক বাগান।

আশুগঞ্জ উপজেলার লালপুর ইউনিয়নের বায়েক গ্রামের চাষি সারোয়ার আলম বলেন, আগে তিনি তার জমিতে বিভিন্ন ধরনের সবজির চাষ করতেন। এ বছর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তার পরামর্শে প্রথমবারের মতো তিনি ও তার ভাই ৬৬ শতাংশ জমিতে সূর্যমুখী চাষ করেছেন।

“কৃষি অফিস বিনামূল্যে বীজ ও সার দিয়েছে। এখন পর্যন্ত সবকিছু ভাল মনে হচ্ছে। ভাল লাভ হবে বলে আশা করছি।”

সূর্যমুখীর বীন বোনার পর ৯০ থেকে ১০৫ দিনে ফসল তোলা যায় বলে কৃষি কর্মকর্তারা জানিয়েছেন।

কৃষি কর্মকর্তা রবিউল বিডিনিউজ টুয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, যদি প্রাকৃতিক দুর্যোগে কোনো প্রকার ক্ষতি না হয় তাহলে প্রতি বিঘা জমিতে ছয় থেকে সাড়ে ছয় মণ তেলবীজ পাওয়া যায়। এক মণ বীজ থেকে ১৮ কেজি তেল হয়। প্রতি কেজি তেল বাজারে খুচরা ২৮০ টাকা দরে বিক্রি হয়।

তিনি জানান, তেল ছাড়াও এ থেকে খৈল হয় যা দিয়ে মাছের খাবার বানানো হয়। আর গাছ ব্যবহৃত হয় জ্বালানি হিসেবে। সূর্যমুখি চাষের পরও কৃষক যথাসময়ে আউশ ধান চাষ করতে পারবেন।

স্থানীয়ভাবে ভোজ্যতেলের চাহিদা মেটানোর পদক্ষেপ হিসেবে সরকার সূর্যমুখির চাষ সম্প্রসারণের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে বলে তিনি জানান।

কৃষি কর্মকর্তা বলেন, সূর্যমুখির তেল প্রক্রিয়া ও বাজারজাত করার জন্য কৃষি অফিসের পক্ষ থেকে কৃষকদের প্রয়োজনীয় সহযোগিতা করা হবে। ফেনীর সোনাগাজীতে সূর্যমুখি বীজ থেকে তেল তৈরির কারখানা আছে। তাদের সঙ্গে চুক্তি হয়েছে। কৃষকদের তেলবীজ তারা কৃষকদের কাছ থেকে সরাসরি কিনে নেবে। কৃষি অফিস মাধ্যম হিসেবে কাজ করবে।