জেলার শ্রীপুর উপজেলার কেওয়া গ্রামের দেলোয়ার হোসেনের খামারে এই ফুল ফুটেছে। এতে বাংলাদেশে বাণিজ্যিক উদ্দেশ্যে টিউলিপ চাষের সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে বলে কৃষি কর্মকর্তারা জানিয়েছেন।
বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউটের উদ্যানতত্ত্ব বিভাগের প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ফুল গবেষক ফারজানা নাসরিন খান বলেন, টিউলিপ শীতপ্রধান অঞ্চলের ফুল। বাংলাদেশে শীত মৌসুমে অনেকেই বাড়িতে শখের বশে টিউলিপ ফোটানোর চেষ্টা করে। কিন্তু কদাচিৎ ফুল ফোটে।
“দেলোয়ার তার বাগানে টিউলিপ ফোটাতে পেরেছেন। এতে দেশের উত্তরের জেলাগুলোয় শীত মৌসুমে এই ফুললের বাণিজ্যিক চাষের সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে।”
বিদেশি অন্যান্য ফুল এবং বিদেশি সবজিও চাষ করেন দেলোয়ার হোসেন। তাদের মধ্যে আছে রঙিন ক্যাপসিকাম, লিলিয়াম, স্ট্রবেরি ইত্যাদি।
দোলোয়ার বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, ছোটবেলা থেকে কৃষিকাজের প্রতি তার ঝোঁক ছিল। ২০০৪ সালে এসএসসি পাসের পর পেশা হিসেবে ফুল চাষ করেন।
“ধীরে ধীরে বিদেশি ফুল ও সবজি চাষ শুরু করি। ২০১৯ সালের ৮ ডিসেম্বর নেদারল্যান্ডস থেকে এক প্রজাতির চার রংয়ের এক হাজার বাল্ব (কন্দ) এনে ১৫ ডিসেম্বর প্রথম আমার বাগানে রোপণ করি। ফুল ফুটলে অনেকেই দেখার জন্য ভিড় জমান।”
প্রতিটি টিউলিপ তিনি ৭০-৮০ টাকায় বিক্রি করেন বলে জানান।
তিনি তিন শতক জমিতে ক্যাপসিকাম চাষ করেছেন জানিয়ে বলেন, এখন তার খামারে লাল, সবুজ ও হলুদ রংয়ের ক্যাপসিকাম রয়েছে।
“প্রতি একরে প্রায় ৩৬ হাজার কেজি ক্যাপসিকাম ফলে। এক কেজি ১০০ টাকা দরে ৩৬ হাজার কেজির বিক্রয়মূল্য হয় ৩৬ লাখ টাকা।”
দেলোয়ার বলেন, তিনি তার বাগানে তিন বছর ধরে নেদারল্যান্ডস থেকে সংগ্রহ করা বাল্ব দিয়ে তিন রংয়ের ওরিয়েন্টাল লিলিয়াম ফুল চাষ করছেন। নেদারল্যান্ডস থেকে টিউলিপ ছাড়াও লিলিয়ামের ৬০ হাজার বাল্ব সংগ্রহ করেছেন।
প্রতিটি লিলিয়াম ফুল ৯০ থেকে ১০০ টাকায় বিক্রি করেন জানিয়ে তিনি বলেন, প্রতি মৌসুমে ছয় মাসে খরচ বাদে লিলিয়াম থেকে ৩৫-৪০ লাখ টাকা আয় হয়।
দেলোয়ার এসএসসি পাসের পর ২০০৪ সালে ফুল চাষ শুরু করেন বলে জানান। তার খামারের নাম মৌমিতা ফ্লাওয়ার্স।
তিনি বলেন, বর্তমানে তার ১৮ বিঘা জমিতে খামার রয়েছে। নিজের তিন বিঘা আর ১৫ বিঘা লিজ নেওয়া।
“মাত্র চার হাজার টাকা নিয়ে ফুল চাষ শুরু করি। ধীরে ধীরে বাড়ে। ফুলের সঙ্গে শুরু করি সবজির চাষ। লাভ আর আসল মিলে বর্তমানে আমার খামারের বাজার দর প্রায় তিন কোটি টাকা। সফল ফুল চাষি হিসেবে ২০১৭ সালে পেয়েছি বঙ্গবন্ধু কৃষি পদক।”