চীনের ভাইরাস নিয়ে ‘আতঙ্ক ছড়াচ্ছে’ পশ্চিমারা

করোনাভাইরাস নিয়ে চীনের বিরুদ্ধে পশ্চিমারা অপপ্রচার চালাচ্ছে বলে দাবি করা হয়েছে ঢাকায় ব্যবসায়ীদের এক আলোচনা অনুষ্ঠান থেকে।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 17 Feb 2020, 06:01 PM
Updated : 17 Feb 2020, 06:01 PM

সোমবার জাতীয় প্রেস ক্লাবে বাংলাদেশ-চায়না বিজনেস অ্যাসোসিয়েশেন আয়োজিত ‘চীনে করোনা ভাইরাস আক্রমণ ও আমাদের করণীয়’ শীর্ষক এই আলোচনা অনুষ্ঠানে চীনের রাষ্ট্রদূত লি জিমিংও ছিলেন।

ভাইরাস নিয়ে পশ্চিমা গণমাধ্যমে ‘মিথ্যা খবর’ প্রকাশ করে মানুষের মধ্যে আতঙ্ক সৃষ্টি করার চেষ্টা করছে বলে অভিযোগ করেন অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি যাদব দেবনাথসহ অন্যরা।

যাদব বলেন, ভাইরাসের কারণে ব্যবসায়ীদের মধ্যে আতঙ্ক সৃষ্টি হয়েছে, তাই তারা বিকল্প আমদানি বাজার খোঁজা শুরু করেছে, যার কোনো প্রয়োজন নেই। এতে করে কোনো লাভও হবে না।

তিনি বলেন, “ভাইরাস পৃথিবীতে নতুন কিছু নয়। চীনের এটি একটি সাময়িক সমস্যা। তাছাড়া উহান থেকে কেবল ইলেক্ট্রনিক্স সামগ্রী আমদানি করা হয়। গার্মেন্টসসহ অন্যান্য শিল্পের কাঁচামাল আমদানি করা হয় উহানের বাইরের রাজ্যগুলো থেকে। উহানের বাইরে বেশ কিছুদিন ব্যবসায়িক কাজ বন্ধ থাকার পর আগামী ১৫ দিনের মধ্যেই তা আবার চালু হবে।”

ভাইরাস মোকাবেলায় তিনি চীনের কাজের প্রশংসা করে বলেন, “এধরনের ভাইরাসকে একটি নির্ধারিত স্থানে সীমাবদ্ধ করে রাখতে ইতোমধ্যেই চীন তার সক্ষমতার প্রমাণ দিয়েছে। অচিরেই তা পুরোপুরি নির্মূল করা যাবে বলে আমাদের বিশ্বাস।”

চীনের রাষ্ট্রদূত লি জিমিং বলেন, ভাইরাস একটি বৈশ্বিক সমস্যা। তাই এর মোকাবেলা করতে সবাইকে এগিয়ে আসতে হবে।

“এটা ঠিক যে করোনাভাইরাসের খবর প্রথম উহান শহর থেকে ছড়িয়েছে। তবে চীনেই যে এই ভাইরাসের উৎপত্তি সে বিষয়ে এখনও কোনো অকাট্য বৈজ্ঞানিক প্রমাণ পাওয়া যায়নি। চীন এর উৎপত্তিস্থল চিহ্নিত করার কাজ করছে।”

ভাইরাস সংক্রমণ মোকাবেলায় বাংলাদেশের অকুণ্ঠ সমর্থনের জন্য সরকারকে ধন্যবাদ জানান চীনের রাষ্ট্রদূত।

চীনের করোনাভাইরাসের কথা বলতে গিয়ে পৃথিবীর ইতিহাসে অন্যান্য মহামারী বা ভাইরাস আক্রমণের প্রসঙ্গ টেনে চীনা দূত বলেন, চতুর্দশ শতাব্দিতে ব্ল্যাক প্লেগে ইউরোপের মোট জনসংখ্যার এক-তৃতীয়াংশ মারা গিয়েছিল। প্রথম বিশ্বযুদ্ধের সময় স্পেন থেকে জন্মলাভ করা স্পেনিশ ফ্লুতে  প্রথম বিশ্বযুদ্ধের চেয়ে বেশি মানুষ মারা গেছে। মৃত্যুর হার ছিল আড়াই শতাংশ থেকে ৫ শতাংশ।

সাম্প্রতিক সময়ে বিভিন্ন মহাদেশে ছড়িয়ে পড়া জিকা, ইবোলা ভাইরাসের কথাও বলেন চীনা দূত।

সাবেক রাষ্ট্রদূত মোহাম্মদ জমির বলেন, করোনাভাইরাস নিয়ে দুই দেশে যেন কোনো ভুল তথ্য ছড়িয়ে না পড়ে সেদিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। ঢাকায় চীনা দূতাবাস একটি ওয়েবসাইট চালু করে সেখানে প্রতিদিনকার তথ্য প্রকাশ করতে পারে। পাশাপাশি বাংলাদেশিদের জন্য একটি মোবাইল হট লাইন চালু করতে পারে।

আওয়ামী লীগের তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক সেলিম মাহমুদ বলেন, এধরনের দুর্যোগের কোনো রাজনৈতিক রূপ নেই। এটা একটা বৈশ্বিক সমস্যা। কিন্তু এনিয়ে পশ্চিমা গণমাধ্যমে কিছু নেতিবাচক প্রচার চলছে।

সাংবাদিক শ্যামল দত্ত বলেন, করোনাভাইরাসের ক্ষয়ক্ষতি বিষয়ে প্রকৃত চিত্র থাকা দরকার। চীন যেন বৈশ্বিক রাজনীতির শিকার না হয়, সেদিকেও লক্ষ্য রাখতে হবে।

বাংলাদেশ-চায়না বিজনেস এসোসিয়েশনের ভাইস প্রেসিডেন্ট তরুণ কান্তি দাস ও কুতুব উদ্দিন অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন।