আদা-রসুনে বিকল্প বাজারে নজর রাখছে সরকার: বাণিজ্যমন্ত্রী

নতুন করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাব দীর্ঘমেয়াদী হলে এর প্রভাব দেশের বাজারে পড়বে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি।

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 10 Feb 2020, 01:28 PM
Updated : 10 Feb 2020, 01:28 PM

তিনি বলেছেন, প্রয়োজনে আদা-রসুন ও অন্যান্য মসলা আমদানির জন্য বিকল্প বাজারের দিকে সরকার ‘নজর রাখছে’।

সোমবার সচিবালয়ে কানাডার সাচকাচোয়ান প্রদেশের কৃষিমন্ত্রী ডেভিড মারিটের নেতৃত্বে একটি প্রতিনিধিদলের সঙ্গে মতবিনিময়ের পর বাণিজ্যমন্ত্রী সাংবাদিকদের সঙ্গে এ বিষয়ে কথা বলেন।

করোনাভাইরাসের প্রভাবে দেশের বাণিজ্যে কী পরিমাণ ক্ষতি হতে পারে জানতে চাইলে বণিজ্যমন্ত্রী বলেন, “এখনও বলার সময় হয়নি কী পরিমাণ ক্ষতি হতে পারে। আমাদের অনেক আইটেম আছে যেগুলো চায়নার ওপর নির্ভরশীল। বিশেষ করে রেডিমেট গার্মেন্টসের অধিকাংশ ফ্রেব্রিকস চায়না থেকে আসে, এটার ওপর প্রভাব পড়ছে কিনা দেখতে হবে।

“তবে এখন পর্যন্ত খুব একটা সমস্যার সৃষ্টি হয়নি। কারণ এখন চীনে শুধুমাত্র একটি প্রদেশেই চাপ পড়েছে। এদিকে এখন ওদের বার্ষিক ছুটিও চলছে।”

চীন থেকে পেঁয়াজ আমদানি করতে না পারলে সমস্যা হবে কিনা জানতে চাইলে বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, “এখন পেঁয়াজ আসছে মিয়ানমার, তুরস্ক, মিশর, পাকিস্তান থেকে। চীনের জন্য পেঁয়াজের বাজারে প্রভাব পড়বে না।

“তবে রসুন-আদাসহ অন্যান্য মসলার সমস্যা হবে কিনা সেটি দেখছি। সমস্যা হলে আমাদের বিকল্প মার্কেটে যেতে হবে। এই মুহূর্তে তেমন পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়নি। তবে আমরা লক্ষ্য রাখছি যে কি ধরনের সমম্যা আসতে পারে।”

রসুনের দাম বেড়ে ২০০ টাকা হয়ে গেছে- এ বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করলে বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, “আমরা এ বিষয়ে খুব সিরিয়াসলি নজর রাখছি। পেঁয়াজেও সুযোগ নিয়েছিল, এখনো ব্যবসায়ীরা সুযোগ নিচ্ছে। সমস্যা একটু হলেই তারা সুযোগ নেয়।

“আগামীকাল নিজেরা বসে আমরা এ বিষয়টি ঠিক করতে চাই। আদা-রসুন নিয়ে কী করা যায় সেটা কালকে আলোচনা করব। কনসার্ন হয়ে পড়েছে মসলা-টসলা…। পেঁয়াজ নিয়ে চীনের উপর নির্ভরশীল নই, ১০ শতাংশও চীন থেকে আসছে না। আরো দুই তিনটা আইটেম আছে এটা কী দাঁড়ায় অন্য মার্কেট দেখতে হবে।“

চীনে নতুন করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাব দেখা দেওয়ার পর গত ছয় সপ্তাহে অন্তত ৯১০ জনের মৃত্যু হয়েছে, আক্রান্তের সংখ্যা ছাড়িয়েছে ৪০ হাজার।

বিভিন্ন কোম্পানি চীনে তাদের কার্যক্রম বন্ধ রেখেছে, চীনের সঙ্গে বিমান পরিবহন ও জাহাজ চলাচলে কড়াকড়ি আরোপ করায় বৈশ্বিক পণ্য পরিবহন ব্যবস্থা মারাত্মকভাবে ব্যাহত হচ্ছে।

করোনাভাইরাসের বিস্তার নিয়ন্ত্রণে রাখতে চীন কয়েক দফা ছুটি বাড়িয়েছে, তাতে বাংলাদেশের পোশাক খাতের কাঁচামাল আনতে সমস্যা হবে কিনা জানতে চাইলে মন্ত্রী বলেন, “আমি মনে করি তারা আবার ছুটি বাড়ালে গার্মেন্ট সেক্টরে প্রভাব পড়বে। গার্মেন্ট সেক্টরের ব্যবসায়ীরা কী রিপোর্ট দেয় সেটা দেখতে হবে। তবে রাতারাতি এই সেক্টরে বিকল্প মার্কেট পাওয়া যাবে না।”

করোনাভাইরাসের সম্ভাব্য প্রভাব নিয়ে এফবিসিসিআইকে তিন দিনের মধ্যে যে প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছিল, তা সরকার হাতে পেয়েছি কি না জানতে চাইলে মন্ত্রী বলেন, “গার্মেন্ট সেক্টরের যারা ব্যবসায়ী তারা জানেন যে এ সময়টায় তাদের কোনো আমদানি হবে না চায়নিজ নিউ ইয়ার বলে। … ১৩ তারিখ সেখানকার ছুটি শেষ হলে বোঝা যাবে প্রভাব পড়বে কিনা।”

সম্ভাব্য ক্ষতির বিষয়ে ব্যবসায়ী সংগঠনগুলোর কাছে জানতে চাওয়া হয়েছে জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, “তারা এ বিষয়ে জানাতে দুই-তিন দিন সময় চেয়েছে। আশা করছি কালকের মধ্যে তারা হয়ত একটা আইডিয়া দিতে পারবে, সত্যিকার অর্থে কোনো ক্ষতি হবে কিনা।”