সাইবার অপরাধ দমনে বাংলাদেশ- কম্বোডিয়া চুক্তি সই

দেশের স্টার্ট-আপ প্রকল্প এগিয়ে নিতে ও সাইবার অপরাধ দমনে এক সাথে কাজ করার লক্ষ্যে দুটি চুক্তি সই করেছে বাংলাদেশ ও কম্বোডিয়া।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 20 Jan 2020, 05:34 PM
Updated : 20 Jan 2020, 05:34 PM

তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক এবং কম্বোডিয়ার পোস্টস অ্যান্ড টেলিকমিউনিকেশনস মন্ত্রণালয়ের সেক্রেটারি অব স্টেট (প্রতিমন্ত্রী) কান চ্যানমেতার উপস্থিতিতে এই চুক্তি সই হয় বলে সোমবার এক সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়েছে।

রাজধানীর আগারগাঁওয়ের আইসিটি টাওয়ারে আইডিয়া ফ্লোরে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে প্রতিমন্ত্রী পলক বলেন,  তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের অধীন স্টার্টআপ বাংলাদেশ- আইডিয়া প্রকল্পের সাথে কম্বোডিয়ার ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব পোস্টস, টেলিকমিউনিকেশনস অ্যান্ড আইসিটির একটি চুক্তি সই হয়।

এই সমঝোতা স্মারকে নিজ নিজ পক্ষে স্বাক্ষর করেন স্টার্টআপ বাংলাদেশে-আইডিয়া প্রকল্পের প্রকল্প পরিচালক সৈয়দ মজিবুল হক এবং কম্বোডিয়ার এনআইপিটিআইসিটির ভাইস প্রেসিডেন্ট হেন স্যামবওয়েন।

এই সমঝোতা স্মারকের আওতায় একে অপরকে স্টার্টআপ সংস্কৃতি তৈরিতে সহযোগিতা করবে দুই দেশ।

এছাড়াও সফটওয়ার ডেভেলপমেন্ট ও ফ্রন্টিয়ার টেকনোলজি বিষয়ক গবেষণা ও উন্নয়ন, ডিজিটাল ট্যালেন্ট ও শিক্ষার উন্নয়নের মাধ্যমে ক্যাপাসিটি বিল্ডিং, সংক্ষিপ্ত সময়ভিত্তিক বিভিন্ন কার্যক্রম যেমন- কনফারেন্স, সেমিনার, ওয়ার্কশপ, শিক্ষা সফর, কম্বোডিয়ার তথ্য ও প্রযুক্তি বিষয়ক স্টার্টআপে বিনিয়োগ ও বিভিন্ন উন্নয়নমূলক কাজ করবে উভয় দেশ। 

অপর চুক্তিটি সই হয় বাংলাদেশের ডিজিটাল সিকিউরিটি এজেন্সি এবং কম্বোডিয়ার কম্পিউটার ইমারজেন্সি রেসপন্স টিমের মধ্যে। 

এতে বাংলাদেশের ডিজিটাল সিকিউরিটি এজেন্সির মহাপরিচালক মো. রেজাউল করিম এবং কম্বোডিয়ার ডিরেক্টর জেনারেল অব আইসিটি চুনভাট নিজ নিজ প্রতিষ্ঠানের পক্ষে সই করেন।

এই চুক্তির ফলে সাইবার অপরাধ দমনের লক্ষ্যে কাজ করবে বাংলাদেশ ও কম্বোডিয়া।

সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, সাইবার ক্রাইম নিরসনে স্ট্যান্ডার্ড অপারেশন পদ্ধতি, ব্রডার ফ্রেমওয়ার্ক চালুকরণ, জাতীয় তথ্য সুরক্ষা ব্যবস্থাপনার উন্নয়ন, মানবসম্পদের দক্ষতা বৃদ্ধি এবং বিশেষজ্ঞদের আদান-প্রদান করবে দুই দেশ।

২০১৭ সালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কম্বোডিয়া সফরকালে দুই দেশের মধ্যে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিষয়ে সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরিত হয়। ওই সমঝোতা স্মারক অনুযায়ী গঠিত হয় জয়েন্ট ওয়ার্কিং গ্রুপ। এদিন ছিল ওই জয়েন্ট ওয়ার্কিং গ্রুপের দ্বিপক্ষীয় প্রথম সভা।

পলক বলেন, এই সভায় ২০১৭ সালে উভয় দেশের সমঝোতা স্মারকের আওতায় ই-গভর্নমেন্ট, ই-পাবলিক সার্ভিস ডেলিভারি, ই-লার্নিং, টেলিমেডিসিন, সাইবার সিকিউরিটি, ক্যাপাসিটি বিল্ডিং, তথ্য ও প্রযুক্তি খাতে গবেষণা ও উন্নয়ন ইত্যাদি বিষয়ে বেস্ট প্র্যাক্টিসগুলো বিনিময় করার মাধ্যমে দুই দেশের আইসিটি খাতের উন্নয়নে কাজ করার বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়।

সভায় কম্বোডিয়ার পোস্টস অ্যান্ড টেলিকমিউনিকেশনস মন্ত্রণালয়ের সেক্রেটারি অব স্টেট কান চ্যানমেতা চার সদস্যবিশিষ্ট প্রতিনিধি দলের নেতৃত্ব দেন। আর বাংলাদেশের ১০ সদস্য বিশিষ্ট প্রতিনিধি দলের নেতৃত্ব দেন আইসিটি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক।

কম্বোডিয়ার প্রতিনিধি দলের অন্যান্য সদস্যদের মধ্যে আরও উপস্থিত ছিলেন ডিরেক্টর জেনারেল অব টেলিকম টল ন্যাক এবং বোর্ড অব ক্যাপাসিটি বিল্ডিং অ্যান্ড রিসার্চ অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট ফান্ড সেক্রেটারিয়েটের কর্মকর্তা ভিথ ভিউথ।

আর বাংলাদেশের প্রতিনিধি দলে ছিলেন আইসিটি বিভাগের সিনিয়র সচিব এন এম জিয়াউল আলম, বাংলাদেশ হাই-টেক পার্কের ব্যবস্থাপনা পরিচালক হোসনে আরা বেগম, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি অধিদপ্তরের মহাপরিচালক এ বি এম আরশাদ হোসেন, কন্ট্রোলার অব সার্টিফাইং অথরিটির নিয়ন্ত্রক আবুল মানসুর মোহাম্মদ সার্ফ উদ্দিন, ডিজিটাল সিকিউরিটি এজেন্সির মহাপরিচালক মো. রেজাউল করিম। 

আগামী সেপ্টেম্বরে জয়েন্ট ওয়ার্কিং গ্রুপের দ্বিতীয় বৈঠক কম্বোডিয়ায় অনুষ্ঠিত হবে।

বিদেশিরাও পাবেন বঙ্গবন্ধু ইনোভেশন গ্রান্ট

সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, বিদেশিরাও এখন থেকে তথ্যপ্রযুক্তিতে হার্ডওয়্যার অ্যান্ড আরঅ্যান্ডডি খাতের উদ্যোক্তাদের উৎসাহ দিতে তথ্যপ্রযুক্তি অধিদপ্তরের চালু করা বঙ্গবন্ধু ইনোভেশন গ্রান্ট পাবেন।  

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী উপলক্ষে তথ্যপ্রযুক্তি অধিদপ্তর এ উদ্যোগ নিতে যাচ্ছে উল্লেখ করে জুনাইদ আহমেদ পলক বলেন, “তথ্যপ্রযুক্তি খাতের ১০০ জন উদ্যোক্তাদের ১০ লাখ থেকে ৫ কোটি টাকা পর্যন্ত মূলধন জোগাবে তথ্য প্রযুক্তি বিভাগ।

“এবার থেকে বঙ্গবন্ধু ইনোভেশন গ্রান্ট পাবেন আমাদের বন্ধুপ্রতীম দেশগুলোর সদস্যরাও। বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকী উপলক্ষে আমরা চাইছি, আমাদের যে ১০০ জন এই গ্রান্ট পাবেন, তাদের একটি পারসেন্টেজ বিদেশ থেকেও আসুক। “

গত বছরের অক্টোবরে চালু হওয়া আইসিটি বিভাগের বঙ্গবন্ধু ইনোভেশন গ্রান্ট পেয়েছে ঝুপরি ডটকম, ভিশন আইটি, ওয়ার্ল্ড এক্সাম্পল, ইলেকট্রিক স্কেটেবল অ্যান্ড ওয়াকেবল শু, এডুবট, অবসর, ডিজিটং, ক্রস রোড ইনিশিয়েটিভ, ব্ল্যাকবোর্ড ও কগনিশন ডট এআই।

এই ১০ প্রকল্পের প্রতিটিকে ১০ লাখ টাকা করে অনুদান দেওয়া হয়েছে। সব মিলিয়ে দেওয়া হয়েছে কোটি টাকা।

বঙ্গবন্ধু ইনোভেশন গ্রান্ট প্রকল্পে উদ্যোক্তারা মূলধন হিসেবে ১০ লাখ টাকা থেকে ৫ কোটি টাকা পর্যন্ত পেতে পারেন।