পেঁয়াজের দাম কমেছে

সপ্তাহের ব্যবধানে ঢাকার বাজারে পেঁয়াজের দাম কেজি ৫০ টাকার মতো কমেছে।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 10 Jan 2020, 03:52 PM
Updated : 10 Jan 2020, 03:55 PM

শুক্রবার দেশি পেঁয়াজের কেজি ১৪০-১৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে, যেখানে গত সপ্তাহে তা বেড়ে ২০০ টাকার কাছাকাছি পৌঁছেছিল।

বিক্রেতারা বলছেন, এখন বাজারে আমদানি করা পেঁয়াজের চেয়ে দেশি নতুন পেঁয়াজই বেশি। দামও কমেছে কেজিতে ৪০ থেকে ৫০ টাকা।

গত সেপ্টেম্বরে ভারত পেঁয়াজ রপ্তানি বন্ধ করার পর বাংলাদেশের বাজারে ৩০-৪০ টাকার এই পণ্যের দাম বাড়তে বাড়তে আড়াইশ টাকায় ওঠে। এরপর মিশর, তুরস্ক ও চীন থেকে পেঁয়াজের বড় চালান আমদানির পাশাপাশি বাজারে দেশি নতুন পেঁয়াজ ওঠায় দাম কমতে থাকে। ডিসেম্বরের শেষার্ধে দেশি নতুন পেঁয়াজের দাম ১০০ টাকার আশপাশে আসে। গত সপ্তাহে হঠাৎ করে পেঁয়াজের দাম বেড়ে কেজিতে ২০০ টাকা পর্যন্ত উঠে যায়।

মালিবাগ বাজারের বিক্রেতা আবু তাহের বলেন, “গত সপ্তাহে হঠাৎ বৃষ্টি ও কৃষকের মাঠ থেকে বাজারে পেঁয়াজ আসতে দেরির কারণে দাম বেড়ে গিয়েছিল। বাজারে আরও বেশি করে পেঁয়াজ আসতে শুরু করেছে, এ কারণে দাম কমতে শুরু করেছে। দাম আরও কমবে বলে মনে হচ্ছে।”

দেশি পেঁয়াজ ছাড়া বাজারে আমদানি করা পাকিস্তানি পেঁয়াজের কেজি ১৪০ টাকা এবং মিশর ও তুরস্কের পেঁয়াজ ৮০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

এদিকে বাজারে বেশ কয়েক ধরনের চালের দাম কমেছে বলে বিক্রেতারা জানিয়েছেন। তাদের ভাষ্যমতে, নাজিরশাইল, গুটি স্বর্ণা ও পায়জাম জাতের চালের দাম কমেছে।

শান্তিনগর বাজারের দুলাল রাইস স্টোরের মালিক দুলাল ভূঁইয়া জানান, নাজিরশাইল সবচেয়ে ভালো চাল (পুরাতন) কেজি প্রতি ৫৮ থেকে ৬০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। আর নতুন চাল বিক্রি হচ্ছে ৫২ থেকে ৫৪ টাকায়। নাজির নিম্নমানের চাল ৪৫ থেকে ৫০ টাকার মধ্যেও বিক্রি হচ্ছে।

চালের এই দাম গত সপ্তাহের চেয়ে কেজিতে ৪ থেকে ৫ টাকা কম বলে রামপুরা বাজারের বিক্রমপুর রাইস হাউজের বিক্রেতা মো. সাখাওয়াত জানিয়েছেন।

তিনি বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “এক নম্বর নাজিরশাইলের ৫০ কেজি বস্তা ২৭৫০ টাকায় বিক্রি করে থাকি। আর একটু নিম্নমানের চালের বস্তা ২১০০ টাকায় বিক্রি করা হয়। পাইকারি বাজারে প্রতি বস্তা ১০০ থেকে ১৫০ টাকা কম।”

আর মিনিকেট চালের বস্তা ২২৯০ টাকা পাইকারি দাম। বিক্রি করা হয় ২৩৯০ থেকে ২৪০০ টাকা। এই চাল প্রতি কেজি ৪৮ থেকে ৫০ টাকা বিক্রি করা হচ্ছে বলে জানান সাখাওয়াত।

তিনি বলেন, “মোটা জাত পায়জাম চালের বস্তা পাইকারি বিক্রি হচ্ছে ১৪৫০ টাকা, আর খুচরায় ১৫০০ টাকা। এই চাল প্রতি কেজি বিক্রি করা হয় ৩২ থেকে ৩৩ টাকা। অন্যদিকে বিআর আঠাই কেজি বিক্রি হচ্ছে ৩৮ থেকে ৪০ টাকা। এ চাল প্রতি বস্তা পাইকারি বিক্রি হচ্ছে ১৮০০ টাকা।”

বাজারে মুরগি ও মাংসের দাম স্থিতিশীল রয়েছে। তবে ডিমের দাম গত সপ্তাহের চেয়ে সামান্য বেড়েছে বলে শান্তিনগর বাজারের ডিম বিক্রেতা আমান উল্লাহ জানিয়েছেন।

বাজার ভেদে প্রতিকেজি পোল্ট্রি মুরগি ১২০ থেকে ১৩৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। আর পাকিস্তানি কক মুরগি কেজি ২৪০ থেকে ২৫০ টাকা এবং লেয়ার মুরগি ২৪০ টাকা কেজি বিক্রি হচ্ছে।

গত কয়েক সপ্তাহ ধরে মুরগির দাম একই রকম রয়েছে বলে রামপুরা বাজারের মুরগি ব্যবসায়ী আবদুল আলিম জানিয়েছেন।

অন্যদিকে গরুর মাংসের কেজি হাড়সহ বিক্রি হচ্ছে ৫৫০ থেকে ৬০০ টাকা। আর খাসির মাংস ৮৫০ থেকে ৯০০ টাকা।

এছাড়া বাজার ও মানভেদে প্রতি কেজি টমেটো ৫০ থেকে ৬০ টাকা, বেগুন ৫০ থেকে ৬০ টাকা, বরবটি ৮০ টাকা, সিম ৫০ থেকে ৬০ টাকা, মূলা ৩০ থেকে ৪০ টাকা, পটল ১০০ টাকা। উচ্ছে ৮০ থেকে ১০০ টাকা, ঝিঙ্গা ৮০ টাকা, ধুন্দল ৮০ টাকা, পেঁপে ৪০ থেকে ৫০ টাকায় কেজি বিক্রি হচ্ছে।

এছাড়া প্রতিটি লাউ ৫০ থেকে ৬০ টাকা, ফুলকপি ৩০ থেকে ৪০ টাকা, বাঁধাকপি ৩৫ থেকে ৪০ টাকা করে বিক্রি হচ্ছে।

শাহজাহানপুর কাঁচাবাজারের ব্যবাসায়ী মো. শাহজালাল বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “বেগুন, লাউ, পটল ও পেঁপের দাম বেড়েছে। তবে বেশ কিছু সবজির দাম কমেছে, কোনো কোনোটির দাম স্থিতিশীল রয়েছে।”