পর্দা উঠল বাণিজ্যমেলার

প্রতিবছরের মতো এবারও নতুন বছরের প্রথম দিন শুরু হলো ঢাকা আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মেলা, যাতে এবার ২১ দেশের বিভিন্ন বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠান অংশ নিচ্ছে।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 1 Jan 2020, 07:12 AM
Updated : 1 Jan 2020, 08:01 AM

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বুধবার সকালে বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে ফিতা কেটে এবং বেলুন ও পায়রা উড়িয়ে এ মেলার উদ্বোধন ঘোষণা করেন।

তিনি বলেন, “২০২০ সাল আমাদের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। ইজ অব ডুয়িং বিজনেস, এটা আমরা আরও সহজ করে দিচ্ছি, যারা ব্যবসা এ দেশে করতে চান। আমি এটুকু বলতে পারি, আমরা নিজেরা ব্যবসা করি না, কিন্তু আমরা ব্যবসাবান্ধব সরকার। আমরা ব্যবসা করার জন্য অন্যকে সুযোগ করে দিই।”

উদ্বোধন শেষে প্রধানমন্ত্রী বাণিজ্যমেলার বিভিন্ন স্টলও ঘুরে দেখেন।

মাসব্যাপী এ মেলা প্রতিদিন সকাল ১০টা থেকে রাত ১০টা পর্যন্ত খোলা থাকবে। প্রাপ্তবয়স্করা ৪০ টাকায় এবং শিশু ও কিশোররা ২০ টাকায় টিকিট কিনে মেলায় ঢুকতে পারবে।

বাংলাদেশ ছাড়াও ভারত, ভুটান, নেপাল, মালদ্বীপ, পাকিস্তান, চীন, দক্ষিণ কোরিয়া, হংকং, থাইল্যান্ড, সিঙ্গাপুর, মালয়েশিয়া, ইরান, তুরস্ক, মরিশাস, ভিয়েতনাম, রাশিয়া, যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, জার্মানি ও অস্ট্রেলিয়ার বিভিন্ন ব্যবসা প্রতিষ্ঠান বাণিজ্য মেলার ২৫তম এই আসরে অংশ নিচ্ছে।

তবে সার্বিকভাবে এবার বাণিজ্য মেলার স্টলের সংখ্যা কমেছে। প্যাভিলিয়ন, মিনি-প্যাভিলিয়ন, প্রিমিয়ার প্যাভিলিয়ন, রেস্তোরাঁ ও স্টলসহ মোট ৪৫০টি জায়গা বরাদ্দ রেখে মেলার আঙ্গিনা সাজানো হয়েছে; যা গতবছর ছিল ৫৫০টি।

সবচেয়ে বেশি কমেছে সাধারণ স্টল। গত বছর ২৫০টি সাধারণ স্টল থাকলেও এবার মাত্র ৫০টি স্টল রাখা হয়েছে।

এ নিয়ে কর্তৃপক্ষের ভাষ্য, প্রথম দফায় স্টল বরাদ্দ পেয়েও কয়েকজন ব্যবসায়ী শেষ মুহূর্তে মেলায় না আসার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। সে কারণে তাদের ছেড়ে দেওয়া স্টলগুলোতে দ্বিতীয় দফায় বরাদ্দ চাওয়া হয়েছে। সেখানেও প্রয়োজনীয় শর্ত পূরণ না হওয়ায় পাঁচটি স্টল ফাঁকা রয়েছে।

ব্যবসায়ীরা তাদের ব্যক্তিগত সমস্যার কারণেই এমন সিদ্ধান্ত নিয়েছেন বলে মেলার আয়োজক কমিটির সদস্য সচিব আব্দুর রউফের ভাষ্য।

দর্শনার্থীদের মনোরঞ্জনে ও অন্যান্য সুযোগ-সুবিধার জন্য এবার দুটি ফোয়ারা, ইকোপার্ক, বিশ্রামাগার, মা ও শিশু কেন্দ্র, দুটি শিশু পার্ক রাখা হয়েছে মেলার ভেতরে। জনপ্রতি ১৫ টাকা করে টিকেট কিনে শিশু পার্কে খেলতে পারবে মেলায় আসা শিশুরা। 

৩২ একর জমিতে ওপর এ মেলায় এবার স্টল সংখ্যা কমে যাওয়ায় মেলায় চলাফেরা, ঘোরাঘুরি ও বিশ্রামাগারের পরিসরও বেড়েছে বলে আয়োজক কর্তৃপক্ষ রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো-ইপিবির কর্মকর্তারা জানিয়েছেন।

এবারের মেলার প্রধান ফটক তৈরি করা হয়েছে বাংলাদেশের অভ্যুদয় ও সরকারের উন্নয়ন কর্মকাণ্ডের প্রতীক সামনে রেখে। ফটকের দুই পাশে দুটি জাতীয় স্মৃতিসৌধের প্রতীকের মধ্যে সেতুবন্ধন হয়েছে পদ্মা সেতুর প্রতীকী কাঠামো।

এর ব্যাখ্যা দিয়ে মেলার আয়োজক কমিটির সদস্য সচিব আব্দুর রউফ বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বাধীনতা সংগ্রাম আর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার অর্থনৈতিক মুক্তির সংগ্রামকে স্মৃতিসৌধের মাধ্যমে প্রতীকীভাবে উপস্থাপন করা হয়েছে। দুই স্মৃতিসৌধকে যুক্ত করছে পদ্মা সেতু।”

গতবছর এ মেলায় ২০০ কোটি টাকার রপ্তানি আদেশ পেয়েছিলেন বাংলাদেশের ব্যবসায়ীরা।  এবার তা আরও বাড়বে বলেই আয়োজকদের প্রত্যাশা।