ট্রান্সশিপমেন্টে ভারতের কাছ থেকে যৌক্তিক মাশুল: নৌসচিব

ট্রান্সশিপমেন্টের আওতায় চট্টগ্রাম ও মংলাবন্দর ব্যবহারে জন্য ভারতের কাছ থেকে ‘যৌক্তিক’ হারে মাশুল নেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন নৌ পরিবহন মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. আবদুস সামাদ।

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 5 Dec 2019, 07:53 PM
Updated : 5 Dec 2019, 07:53 PM

ঢাকায় দুই দেশের নৌসচিব পর্যায়ের দুদিনব্যাপী বৈঠকে শেষে বৃহস্পতিবার হোটেলে ইন্টারকন্টিনালে সাংবাদিকদের এতথ্য জানান তিনি।

দ্বিপক্ষীয় এই বৈঠকে ভারতের জোগিগোপা ও বাংলাদেশের জামালপুরের বাহাদুরাবাদকে ‘পোর্ট অব কল’ ভুক্তির সিদ্ধান্ত হয়।

ভারতের পক্ষে এই বৈঠকে নেতৃত্ব দেন দেশেটির নৌ-সচিব গোপাল কৃ্ষ্ণ।

দুই সচিবই বলেন, আলোচনায় উভয় পক্ষ সন্তুষ্ট।

চট্টগ্রাম ও মোংলা বন্দর ব্যবহার করে ভারতীয় পণ্য পরিবহনের বিষয়ে সামাদ বলেন, “বাংলাদেশ ও ভারত গ্যাটে স্বাক্ষরকারী হিসেবে ট্রান্সশিপমেন্ট পণ্যের উপর শুল্ক প্রযোজ্য নয়। তবে অপারেশনাল ও সার্ভিস চার্জ প্রযোজ্য। মোংলা ও চট্টগ্রাম বন্দর ব্যবহারে বিদ্যমান স্বস্ব ট্যারিফ সিডিউল অনুযায়ী চার্জ আদায় করা হবে। নিয়ম অনুযয়ী সড়ক চার্জও আরোপ হবে। তবে সকল চার্জই হবে র‌্যাশনাল ও লজিক্যাল ওয়েতে।”

তিনি বলেন, চুক্তির আওতায় পণ্যবাহী যানে ই-লক ব্যবহার হবে। অর্থাৎ ভারত থেকে কোনো পণ্য চট্টগ্রাম বন্দরে আসার পর কাস্টমস সেটা আনলক করবে। পণ্য বন্দর থেকে আখাউড়া দিয়ে গেলে সেই বন্দরে ওই লক কাস্টমস খুলে দেবে।

সড়ক পথে ট্রান্সশিপমেন্টের পণ্য পরিবহনে প্রতি টনে কত টাকা মাশুল আরোপ করা হচ্ছে- এ প্রশ্নের জবাবে সচিব বলেন, “বন্দরের বিভিন্ন ধরনের ট্রারিপ সিডিউল রয়েছে। প্রতি টনে কত টাকা চার্জ আসবে সেটা ক্যালকুলেশন করিনি।”

মাশুল নিয়ে আলোচনা হয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, “জানুয়ারিতে ভারত ট্রায়াল রান করে দেখবে পথে কোনো সমস্যা আছে কি না।”

বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয়েছে, ভারতের ইছামতি নদীকে প্রটোকল অন ইনল্যান্ড ওয়াটার ট্রানজিট এন্ড ট্রেড (পিআইডব্লিউটিটি) রুটে আনার লক্ষ্যে সম্ভাব্যতা যাচাই হবে। আত্রাই নদীর ভারতের অংশের ৪২ কিলোমিটার ভারতীয় কর্তৃপক্ষ খননের ব্যবস্থা করবে।

সচিব বলেন, “চিলমারী-ধুবরি নৌপথে কম গভীরতার জাহাজ চলার বিষয়ে সম্মত হয়েছি।  আত্রাই নদীর ভারতীয় অংশে ৪২ কিলোমিটার খননের আলোচনা হয়েছে। আমরা নওগাঁ থেকে দিনাজপুর খনন করেছি। তাদেরকে ওই ৪২ কিলোমিটার খননের বিষয়ে অনুরোধ জানিয়েছি।”

বৈঠকে অন্যান্য বিষয়ের সঙ্গে রাজশাহী থেকে পাকশী পর্যন্ত ৭৪ কিলোমিটার নৌপথের নাব্যতার জন্য আগের মতো ভারত ও বাংলাদেশ কর্তৃক যথাক্রমে ৮০ : ২০ অনুপাতে খরচ বহন সাপেক্ষে ড্রেজিং; কলকাতার বজবজ এলাকায় পর্যাপ্ত বয়া স্থাপন, ঘোড়ামারা নামখানা-হেমনগর এলাকায় চ্যানেল মার্কিং স্থাপন, নামখানা, হলদিয়া, বজবজ এলাকায় ভেসেল অবস্থানকালে প্রয়োজনীয় দ্রব্যাদি ক্রয়ের জন্য প্রয়োজনীয় পারমিট ইস্যু এবং ডিউরেশন অব শোর লিভ বৃদ্ধি; ভিসা সহজীকরণ, কাস্টমস্ ও ইমিগ্রেশন ব্যবস্থা, বার্দিং সুবিধা বৃদ্ধি, নাইট নেভিগেশন বিষয়; ক্রুদের এমবারকেশন এবং ডিসএমবারকেশন; নাকুগাঁও স্থলবন্দর ও ভারতের ডালু আইসিপি-ভুটানের গেলেপু পর্যন্ত কানেকটিং; বাংলাদেশের ক্রু এবং মেরিন অফিসারদেরকে নির্দিষ্ট পোর্ট উল্লেখ না করে ভারতীয় ভিসা প্রদান; কোস্টাল শিপিং এগ্রিমেন্টের আওতায় সামিট এলায়েন্স পোর্ট লিমিটেড, মুক্তারপুরকে পোর্ট অব কল ঘোষণা, বাংলাদেশি নাবিকদের বিশ্রাম ও চিত্তবিনোদনের জন্য কলকাতায় ড্রপ-ইন-সেন্টার চালু; স্ট্যান্ডার্ড অপারেটিং প্রসিডিউর (এসওপি) অনুযায়ী ভেসেল মেরামত; বাংলাদেশের কক্সবাজার (মাতারবাড়ী পোর্ট) এবং ভারতের ধামারা (চব্বিশ পরগুনা) পোর্টকে পোর্ট অব কল হিসেবে অন্তর্ভুক্ত করা; সমুদ্র এলাকায় জাহাজের সমস্যা দূর করতে নেভাল টেলেক্স সুবিধা স্থাপন নিয়ে আলোচনা হয়।