সব ধরনের রেনিটিডিন ওষুধে নিষেধাজ্ঞা

ভারত থেকে আমদানি করা কাঁচামালে গ্রহণযোগ্য মাত্রার চেয়ে বেশি এন-নিট্রোসডিমিথাইলামাইন (এনডিএমএ) পাওয়ার পর দেশে সব ধরনের রেনিটিডিন জাতীয় ওষুধের উৎপাদন, বিক্রি, বিতরণ ও রপ্তানি স্থগিত রাখতে বলেছে সরকার।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 14 Nov 2019, 07:58 AM
Updated : 14 Nov 2019, 05:54 PM

ওষুধ প্রশাসন অধিদপ্তর বৃহস্পতিবার পত্রিকায় গণবিজ্ঞপ্তি দিয়ে বিষয়টি জানিয়েছে।

সেখানে বলা হয়, ভারতের মেসার্স সারাকা ল্যাবরেটরিজ লিমিটেড এবং মেসার্স এসএমএস লাইফসায়েন্স থেকে আমদানি করা রেনিটিডিন হাইড্রোক্লোরাইড কাঁচামাল (এপিআই) এবং ওই কাঁচামাল দিয়ে উৎপাদিত ওষুধের নমুনা পরীক্ষা ও বিশ্লেষণ করেছে অধিদপ্তর।

“পরীক্ষার ফলাফলে পরীক্ষাকৃত কাঁচামাল ও ফিনিশড প্রডাক্টে NDMA impurity গ্রহণযোগ্য মাত্রার চেয়ে বেশি পাওয়া যায়।”

এ কারণে জনস্বার্থে দেশে সব ধরনের রেনিটিডিন জাতীয় ওষুধ উৎপাদন, বিক্রি, বিতরণ ও রপ্তানি স্থগিত করার কথা জানানো হয় গণবিজ্ঞপ্তিতে।

ওষুধ প্রশাসন অধিদপ্তরের একজন কর্মকর্তা বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “ভারতের দুটি কোম্পানির কাঁচামালে গ্রহণযোগ্য মাত্রার বেশি এনডিএমএ পেয়েছি আমরা। তবে বাংলাদেশে মূল এসব কোম্পানি থেকে কাঁচামাল এনেই রেনিটিডিন বানানো হয়। তাই রেনিটিডিনেই নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়েছে।” 

অ্যাসিড নিঃসরণ প্রতিরোধসহ পেটের পীড়ার নানা উপসর্গের চিকিৎসায় বিশ্বজুড়ে বহুল প্রচলিত ওষুধ রেনিটিডিনে ‘সম্ভাব্য ক্যান্সার সৃষ্টিকারী উপাদান’ পাওয়ার পর গত দুই মাস ধরেই আলোচনা চলছে।

যুক্তরাষ্ট্র স্যান্ডোজের তৈরি রেনিটিডিন ক্যাপসুলের মধ্যে ‘এন-নিট্রোসডিমিথাইলামাইন (এনডিএমএ)’ এর উচ্চমাত্রার উপস্থিতি নিশ্চিত হওয়ার পর গত সেপ্টেম্বরে কোম্পানিটি তাদের এই ওষুধ বাজার থেকে তুলে নেওয়ার ঘোষণা দেয়।

পরে আরও কয়েকটি দেশের ওষুধ প্রশাসন এ বিষয়ে সতর্কতা জারি করে এবং বিভিন্ন কোম্পানি তাদের রেনিটিডিন ওষুধ বাজার থেকে সরিয়ে নেয়। 

এই পরিস্থিতিতে বাংলাদেশও গত ২৯ সেপ্টেম্বর ভারতের সারাকা ল্যাবরেটরিজ ও মেসার্স ডা. রেড্ডির  কাঁচামালে বাংলাদেশে তৈরি রেনিটিডিন ট্যাবলেট নিষিদ্ধ করে।  আর এবার দেশের বাজারে সব ধরনের রেনিটিডিন বিক্রির ওপরই নিষেধাজ্ঞা এল।

রেনিটিডিন বিক্রি বন্ধ হলে রোগীদের ওপর তেমন কোনো প্রভাব পড়বে বলে মনে করছেন না চিকিৎসকরা। 

শেখ রাসেল গ্যাস্ট্রোলিভার ইনস্টিটিউট অ্যান্ড হসপিটালের কনসালটেন্ট রাজ দত্ত বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “এটা এখন আর জরুরি ওষুধ নয়। আরও অনেক বিকল্প এবং তুলনামূলকভাবে বেশি কার্যকর ওষুধ এখন বাজারে আছে।” 

উদাহরণ দিতে গিয়ে তিনি বলেন, “ওমিপ্রাজল, প্যান্টোপ্রাজল ও ইসোমিপ্রাজল একই ধরনের চিকিৎসায় ব্যবহার করা যায়। অবশ্য রেনিটিডিনের দাম সামান্য কম ছিল।”