এই পদক্ষেপের ফলে নতুন পেঁয়াজ ওঠার আগে অস্থিরতার এই শেষ পর্যায়ে এসে বাজারে কিছুটা স্বস্তি ফিরবে বলে আশা করছেন তারা।
বৃহস্পতিবার রাতে পেঁয়াজের দাম নির্ধারণের জন্য জরুরি বৈঠকে বসে আড়ৎদার সমিতি। সেখানে সিদ্ধান্ত হয়, শুক্রবার থেকে আপাতত মিশর, চীন ও তুরস্কের পেঁয়াজ প্রতি কেজি ৫৫ থেকে ৬০ টাকা, মিয়ানমারের পেঁয়াজ ৮০ থেকে ৮৫ টাকা এবং দেশি পেঁয়াজ ৯০ টাকার মধ্যে বিক্রি করবেন এই বাজারের ব্যবসায়ীরা।
সমিতির সহ-সভাপতি হাজী আব্দুল মাজেদ বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “সরবরাহ সঙ্কটের কারণে বাজার অস্থিতিশীল হওয়াটা খুবই স্বাভাবিক। কিন্তু এর জন্য আড়ৎদারদের জেল-জরিমানা করা হচ্ছে। প্রচুর বদনাম রটানো হচ্ছে।
“তাই আমরা বাধ্য হয়ে আলোচনা করে মূল্য নির্ধারণ করে দিয়েছি। এই কাজটি আরও এক মাস আগে করতে পারলে আরও ভালো হত।”
ব্যবসায়ীদের এই সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন হচ্ছে কি না, তা দেখতে শুক্রবার শ্যামবাজারে ভ্রম্যমাণ আদালত নিয়ে অভিযানে যায় জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর।
এদিন মাত্র চারটি আড়ৎ ছাড়া অধিকাংশ আড়তেই বেঁধে দেওয়া দামে পেঁয়াজ বিক্রি করা হচ্ছিল বলে জানান অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক আব্দুল জব্বার মণ্ডল।
তিনি বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “অধিকাংশ দোকানেই সঠিক মূল্যে পণ্য বিক্রি করছিল। কেবল চারটা দোকানের মধ্যে ঝামেলা পেয়েছি। এদেরকে ২০ হাজার টাকা করে জরিমানা করা হয়েছে।
“এক দোকানে দেশি পেঁয়াজের পাইকারি মূল্য লেখা ছিল প্রতি কেজি ৯০ টাকা। কিন্তু তারা বিক্রি করছিল ১০৬ টাকায়। অন্য তিনটি দোকানে মিশর, তুরস্ক ও চীনের পেঁয়াজ বিক্রি করেছে ৮০ টাকায়। যদিও তারা নিজেরা সর্বোচ্চ মূল্য ৬০ টাকা নির্ধারণ করেছিল।”
তবে প্রধান পাইকারি বাজার উদ্যোগ নিলেও কারওয়ান বাজারসহ অন্যান্য বাজারগুলোতে দেখা যায়নি এ ধরনের পদক্ষেপ। তাৎক্ষণিকভাবে খুচরাতেও এর প্রভাব পড়েনি।
মিরপুর বড়বাগ কাচাবাজারের আল মদিনা স্টোরের হেলাল মাহমুদ বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, তারা মিরপুর-১ নম্বর থেকে মাঝারি মানের ‘কিং’ জাতের পেঁয়াজ প্রতি কেজি ১২০ টাকা দরে কিনে বিক্রি করছেন ১৩০ টাকায়।
এই বাজারে প্রতি কেজি ১১০ টাকায়ও দেশি পেঁয়াজ পাওয়া যাচ্ছে; যেগুলো আকারে ছোট এবং মানের দিক থেকে দুর্বল।
মিরপুর-১ নম্বর বাজারের পাইকারি বিক্রেতা পলাশ সাহা জানান, এই বাজারে গত দুই সপ্তাহ ধরেই পাইকারিতে প্রতি কেজি ১১০ থেকে ১২০ টাকায় পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে।
বড়বাগের মুদি দোকানি হেলাল মাহমুদ বলেন, আগে যেখানে প্রতিদিন এক বস্তা বা ৪০ কেজি পেঁয়াজ বিক্রি হত, সেখানে এখন বিক্রি হচ্ছে মাত্র ১০ থেকে ১২ কেজি।
“ক্রেতারা পেঁয়াজ খাওয়া কমিয়ে দিয়েছেন।”
একই কথা বলেন কারওয়ান বাজারের পাইকারি বিক্রেতা আব্দুল আওয়াল: এখন দৈনিক চার-পাঁচ বস্তা (প্রতি বস্তায় ৪০ থেকে ৫০ কেজি) বিক্রি হচ্ছে না। অথচ আগে প্রতিদিন ১০ থেকে ১২ বস্তা বিক্রি হত।