২২ প্রতিষ্ঠানই অ্যাননটেক্সের, রিট খারিজ

বাংলাদেশ ব্যাংকের সিদ্ধান্তের ওপর অ্যাননটেক্স গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ইউনুছ বাদলের করা রিটটি খারিজ করে দিয়েছেন হাই কোর্টের একটি বেঞ্চ।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 7 Nov 2019, 06:30 PM
Updated : 7 Nov 2019, 06:38 PM
শুধু চার প্রতিষ্ঠানকে নিজেদের দাবি করে অ্যাননটেক্স গ্রুপ ওই রিটটি দাখিল করেছিল। এর ফলে ২২টি প্রতিষ্ঠানকে অ্যাননটেক্স গ্রুপভুক্ত হিসেবে বিবেচনার নির্দেশ দেওয়া কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সিদ্ধান্ত বহাল থাকল।

নথিপত্র পর্যালোচনায় জানা যায়, ২০১৮ সালের ২ ডিসেম্বর মেসার্স গ্যালাক্সি সোয়েটার অ্যান্ড ইয়ার্ন ডায়িং এর স্বার্থ সংশ্লিষ্ট ২২ প্রতিষ্ঠানকে অ্যাননটেক্স গ্রুপের ঋণ হিসেবে বিবেচনা করে পরবর্তী কার্যক্রম গ্রহণের জন্য জনতা ব্যাংককে নির্দেশনা দেয় বাংলাদেশ ব্যাংক।

ওই সময়ে ২২ প্রতিষ্ঠানের ঋণের পরিমাণ ছিল ৫ হাজার ৫০৪ কোটি টাকা। চলতি বছরের ১৯ ফেব্রুয়ারি অ্যাননটেক্স গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ইউনুছ বাদল এ সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে আদালতে রিট পিটিশন দায়ের করেন।

গত ২৬ মার্চ আদালত কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সিদ্ধান্তের ওপর এক মাসের স্থগিতাদেশ প্রদান করেন।

এরপর ১৯ আগস্ট উক্ত রিট শুনানির জন্য ২ সপ্তাহ সময় দেওয়া হয়।

এরপর বৃহস্পতিবার বিচারপতি জেবিএম হাসান ও মো. খায়রুল আলমের দ্বৈত বেঞ্চ রুলের ওপর চূড়ান্ত শুনানি নিয়ে রিটটি খারিজ করে দেন।

বাংলাদেশ ব্যাংকের পক্ষে আইনজীবী ছিলেন মিয়া মোহাম্মদ ইশতিয়াক।

তিনি বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, রিটটি খারিজের ফলে এননটেক্স গ্রুপকে নিয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের সিদ্ধান্ত বহাল থাকল। এখন ২২টি প্রতিষ্ঠানই এননটেক্স গ্রুপভুক্ত হিসেবে বিবেচিত হবে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, অ্যাননটেক্স গ্রুপের এই সাড়ে ৫ হাজার কোটি টাকা ঋণের সুবিধাভোগী প্রতিষ্ঠানটির কর্ণধার ইউনুছ বাদল একাই। তাঁর মূল ব্যবসা বস্ত্র উৎপাদন ও পোশাক রপ্তানি।

২০০৪ সাল থেকে জনতা ব্যাংকের শান্তিনগর শাখায় প্রথম ব্যাংকিং সুবিধা গ্রহণ করে অ্যাননটেক্স গ্রুপের জুভেনিল সোয়েটার। ওই শাখার বেশি ঋণ দেওয়ার ক্ষমতা না থাকায় ২০০৮ সালে জনতা ভবন করপোরেট শাখায় ঋণটি স্থানান্তর করা হয়।

২০১০ সাল থেকে নতুন নতুন প্রতিষ্ঠান খুলে ঋণসুবিধা নেওয়া শুরু করেন বাদল।

অ্যাননটেক্সের বিভিন্ন কোম্পানির নামে বিভিন্ন সময়ে কাঁচামাল আমদানির জন্য ঋণপত্র খোলা হলেও টাকা পরিশোধ করা হয়নি। প্রতিষ্ঠানগুলোর পক্ষে ব্যাংক নিজেই বাধ্য হয়ে বিদেশি রপ্তানিকারক প্রতিষ্ঠানকে অর্থ শোধ করে দিয়েছে। পরে গ্রাহক তা পরিশোধ করেনি।

এসব দায়ের বিপরীতে ফোর্সড ঋণ তৈরি করেছে ব্যাংক। এভাবে নেওয়া ঋণসুবিধার (নন-ফান্ডেড) সব অর্থই সরাসরি ঋণে (ফান্ডেড) পরিণত হয়েছে। আবার দৈনন্দিন ব্যবসা পরিচালনার জন্য নেওয়া চলতি মূলধনও দেওয়া হয়েছে। এর বড় অংশই এখন খেলাপি হয়ে পড়েছে।

গ্রুপটির মোট ঋণের অর্ধেকই খেলাপিতে পরিণত হয়।