সহজে ব্যবসার সূচকে ৮ ধাপ অগ্রগতি

বিশ্ব ব্যাংকের বিচারে ব্যবসা পরিবেশের সূচকে বাংলাদেশের আট ধাপ অগ্রগতি হয়েছে, যদিও সার্কভুক্ত দেশগুলোর সঙ্গে প্রতিযোগিতায় বাংলাদেশ এখনও পিছিয়ে।

নিউ ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 24 Oct 2019, 05:52 AM
Updated : 24 Oct 2019, 05:52 AM

বিশ্ব আর্থিক খাতের মোড়ল বিশ্ব ব্যাংক গ্রুপের ‘ডুয়িং বিজনেস ২০২০’ প্রতিবেদনে ব্যবসা করার পরিবেশের দিক দিয়ে বিশ্বের ১৯০টি দেশের মধ্যে বাংলাদেশের অবস্থান এবার ১৬৮ নম্বরে। গতবছর এ সূচকে বাংলাদেশের অবস্থান ১৭৬ নম্বরে ছিল।

ব্যবসা পরিবেশের উন্নয়নে সরকারের তরফ থেকে বিভিন্ন উদ্যোগ নেওয়ার পর এবারের সূচকে সবচেয়ে বেশি উন্নতি ঘটানো ২০ দেশের তালিকায় জায়গা করে নিয়েছে বাংলাদেশ।

একটি দেশের অর্থ-বাণিজ্যের পরিবেশ দশটি মাপকাঠিতে তুলনা করে এই সূচক তৈরি করা হয়। বাংলাদেশের পরিস্থিতি বুঝতে ব্যবহার করা হয়েছে ঢাকা ও চট্টগ্রামের তথ্য।

 

এই দশটি মাপকাঠি হল- নতুন ব্যবসা শুরু করা, অবকাঠামো নির্মাণের অনুমতি পাওয়া, বিদ্যুৎ সুবিধা, সম্পত্তির নিবন্ধন, ঋণ পাওয়ার সুযোগ, সংখ্যালঘু বিনিয়োগকারীদের সুরক্ষা, কর পরিশোধ, বৈদেশিক বাণিজ্য, চুক্তি বাস্তবায়ন ও দেউলিয়া হওয়া ব্যবসার উন্নয়ন।

সব মিলিয়ে ১০০ ভিত্তিক এই সূচকে বাংলাদেশের মোট স্কোর হয়েছে এবার ৪৫, যা গতবছর ৪১ দশমিক ৯৭।

স্কোর ও র্যাংকিংয়ে এই উন্নতির পরও ব্যবসার পরিবেশে দক্ষিণ এশিয়ায় আফগানিস্তান ছাড়া সবার চেয়ে পিছিয়ে আছে বাংলাদেশ।

বিভিন্ন ক্ষেত্রে সংস্কার করায় ভারতের অবস্থানের ১৪ ধাপ অগ্রগতি হয়েছে; ৭১ স্কোর নিয়ে উঠে এসেছে সূচকের ৬৩ তম অবস্থানে।

আর ৪৪.১ স্কোর নিয়ে যুদ্ধ বিধ্বস্ত আফগানিস্তান সূচকের ১৭৩ নম্বরে রয়েছে, এবারের সূচকে দেশটির অবনতি হয়েছে ছয় ধাপ।

এছাড়া ভুটান এ সূচকের ৮৯তম (স্কোর ৬৬), নেপাল ৯৪তম (৬৩.২), শ্রীলঙ্কা ৯৯তম (৬১.৮), পাকিস্তান ১০৮তম (৬১), মালদ্বীপ ১৪৭তম (৫৩.৩), মিয়ানমার ১৬৫তম (৪৬.৮) অবস্থানে রয়েছে।

বিশ্ব ব্যাংক বলছে, দশ মাপকাঠির মধ্যে ছয়টিতেই বাংলাদেশের স্কোর গতবারের চেয়ে বেড়েছে। এর মধ্যে ঋণ পাওয়ার সুযোগে স্কোর বেড়েছে ২০ শতাংশ পয়েন্ট।

চারটি মাপকাঠিতে এবারের স্কোর গতবারের সমান। শুধু অবনতি হয়েছে দেউলিয়া হওয়া ব্যবসার উন্নয়ন ঘটানোর ক্ষেত্রে।

বিশ্ব ব্যাংক বলছে, ব্যবসা শুরুর প্রক্রিয়া সহজ করার পাশাপাশি বিদ্যুৎ সংযোগ এবং ঋণ প্রাপ্তি সহজ করার মাধ্যমে বাংলাদেশ সহজে ব্যবসা করার ক্ষেত্রে উন্নতি ঘটিয়েছে। এছাড়া বাংলাদেশে নতুন ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের নিবন্ধন ফি কমানো হয়েছে এবং ডিজিটাল সনদে মাশুল উঠিয়ে দেওয়া হয়েছে।

“ঢাকা নতুন বিদ্যুৎ সংযোগের ফি অর্ধেকে নামিয়ে এনেছে এবং কর্মসংস্থান বাড়ানো ও ডিজিটাইজেশনে বড় বিনিয়োগের উদ্যোগ নিয়েছে। বিদ্যুৎ উপদেষ্টা এবং প্রধান বৈদ্যুতিক পরিদর্শকের কার্যালয় থেকে লাইন্সে গ্রহণের সময়ও কমানো হয়েছে।”

বাংলাদেশের্ ঋণ তথ্য ব্যুরোও তাদের সেবার ক্ষেত্র বাড়িয়েছে। ফলে এখন যেকোনো পরিমাণের ঋণের পাঁচ বছরের তথ্য পাওয়া যাচ্ছে।

প্রতিবেদনের তথ্য অনুযায়ী, অর্থ-বাণিজ্যের পরিবেশ তৈরির ক্ষেত্রে সবচেয়ে ভালো অবস্থানে রয়েছে নিউজিল্যান্ড; সূচকে তাদের স্কোর ৮৬.৮। শীর্ষ দশে থাকা অন্য দেশগুলো হল সিঙ্গাপুর, হংকং, ডেনমার্ক, দক্ষিণ কোরিয়া, যুক্তরাষ্ট্র, জর্জিয়া, যুক্তরাজ্য, নরওয়ে ও সুইডেন।

গতবারের মত এবারও সূচকে সোমালিয়ার পরিস্থিতি সবচেয়ে খারাপ। আফ্রিকার এই দেশটির স্কোর ২০।