ফাইভ জিতে বিনিয়োগ করতে চায় বিদেশিরা: জব্বার

বাংলাদেশে ফাইভ জি চালুর প্রস্তুতি শুরুর পর বিদেশিরা এই খাতে বিনিয়োগে আগ্রহ দেখিয়েছে বলে জানিয়েছেন ডাক ও টেলিযোগাযোগমন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার।

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 22 Oct 2019, 03:54 PM
Updated : 22 Oct 2019, 03:54 PM

মঙ্গলবার সচিবালয়ে ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগে প্রধানমন্ত্রীর তথ্য প্রযুক্তি বিষয়ক উপদেষ্টা সজীব ওয়াজেদ জয়ের সঙ্গে বৈঠকের পর তিনি সাংবাদিকদের একথা জানান।

ফাইভ জি চালুর জন্য বিদেশি প্রতিষ্ঠানের আগ্রহের কথা জানিয়ে জব্বার বলেন,“জেনে খুশি হবেন, বাংলাদেশে ফাইভ জি চালু করব, সে কারণে বেশ কিছু বিদেশি প্রতিষ্ঠান ফাইভ জি চালু করার আগ্রহ প্রকাশ করেছে।”

উপদেষ্টার সঙ্গে বৈঠকে ফাইভ জিসহ তিনটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে আলোচনা হয়েছে বলে জানান তিনি। অন্য দুটি হচ্ছে দ্বিতীয় কৃত্রিম উপগ্রহ ও তৃতীয় সাবমেরিন কেবল।

ইন্টারনেট গতি নিয়ে গ্রাহকদের বিভিন্ন অভিযোগের প্রসঙ্গ টেনে মন্ত্রী বলেন, মোবাইল সেবাদাতা প্রতিষ্ঠানগুলো নেটওয়ার্ক সম্প্রসারণ ও স্পেকট্রাম (তরঙ্গ) বৃদ্ধি না করায় যে পরিমাণ গ্রাহক আছে, সে পরিমাণ সেবা তারা দিতে পারছে না।

গ্রাহকদের এ অভিযোগের অবসান ঘটাতে ’কোয়ালিটি অব সার্ভিস’ নীতিমালা তৈরি করা হয়েছে বলে জানান মন্ত্রী।

“অপারেটরদের নোটিস দেওয়া হয়েছে। আপনাদের নিশ্চিত করতে চাই, তারা যাতে গ্রাহককের পূর্ণাঙ্গভাবে সেবা দিতে বাধ্য হয়, সেখানে আমরা নেব।”

২০২১ থেকে ২০২৩ সালের মধ্যে বাংলাদেশে ফাইভ জি চালুর আশা প্রকাশ করে মোস্তাফা জব্বার বলেন, “আমাদের প্রস্তুতি সম্পন্ন করে রাখছি।

“স্পেকট্রাম উপযোগী করে রাখা, চার্জ ও নীতিমালা নির্ধারণ করে রাখা হচ্ছে। যারা ফাইভ-জি প্রচলন করবে তাদেরকে সচেতন করছি প্রস্তুতির জন্য।” 

২০২১ থেকে ২০২৩ সালের মধ্যে দ্বিতীয় স্যাটেলাইট মহাকাশে উৎক্ষেপণের আশা রেখে মন্ত্রী বলেন, “প্রস্তুতি পর্যায় অতিক্রম করছি, কোন ধরনের হওয়া উচিৎ, এ বিষয়ে কাজ করা হচ্ছে।”

বাংলাদেশে তৃতীয় সাবমেরিন কেবল সংযোগ নিয়ে মোস্তাফা জব্বার বলেন, “তৃতীয় সাবমেরিন কেবল, যেটা সি-মি-উই-৬ যেটা প্রত্যাশা করছি, ২০২৩ সালের মার্চ মাসের কার্যকর হবে সেটি নিয়ে আলোচনা করেছি।”

বৈঠকের অন্য আলোচনার বিষয়ে তিনি বলেন,নগদের সঙ্গে সমঝোতা স্মারক হয়েছে।

“নগদে প্রতিদিন ৩০ কোটি টাকা লেনদেন হচ্ছে। আমাদের স্বপ্নটা হচ্ছে এক নম্বর মোবাইল ফিনান্সিয়াল  সেবাদাতা প্রতিষ্ঠান হয়ে থাকবো।”

দোয়েল ব্র্যান্ডের ল্যাপটপ ও মোবাইল ফোন উদ্বোধন করা হয়েছে জানিয়ে মোস্তাফা জব্বার বলেন,“ল্যাপটপের বৈশিষ্ট্য হচ্ছে সেরা স্পেসিফিকেশনের  ল্যাপটপ এবং একই সাথে আরো দুটি ল্যাপটপ মাঝারি এবং লো এন্ডের মধ্যে যা ১০ থেকে ১২ হাজার টাকার মধ্যে হবে।”

জিপি-রবি নিয়ে সপ্তাহখানেক অপেক্ষা

গ্রামীণফোন ও রবির নিরীক্ষা আপত্তির ‘পাওনা’ টাকা নিয়ে চলমান টানাপড়েন মিটে যাবে বলে আশা প্রকাশ করেছেন মোস্তাফা জব্বার। 

এই দুই অপারেটরদের প্রতিনিধিদের নিয়ে সোমবার গণভবনে বৈঠকের খবর গণমাধ্যমে আসার বিষয়টিতে দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে মন্ত্রী বলেন, “এসব বিষয়ে প্রক্রিয়া চলছে, প্রক্রিয়া শেষে হবে অফিসিয়ালি জানানো হবে।

“এটি নিয়ে বিভ্রান্তি  হয়েছে। আমরা আশাবাদী, সরকারের পক্ষ থেকে চেষ্টা করি, যারা ব্যবসা করতে আসে, তাদের যেন কোনো সমস্যা না হয়। একই সাথে সরকার যে রাজস্ব পায়, তা যেন যথাযথভাবে পায়।”

‘জটিলতা’ থাকলেও তা দূর করার আভাস দিয়ে মন্ত্রী বলেন,“সপ্তাহখানেক পরে জানাতে পারব যে কবে কোন টাইম লাইনে কী করছি। এতটুকু বলতে পারি, আপনারা আশাবাদী হতে পারেন।”

গত বছরের ৩১ জুলাই গ্রামীণফোনের কাছে নিরীক্ষা আপত্তির দাবির ১২ হাজার ৫৭৯ কোটি ৯৫ লাখ টাকা এবং রবির কাছে ৮৬৭ কোটি ২৩ লাখ টাকা পাওনা রয়েছে বলে দাবি করে চিঠি দেয় টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিটিআরসি।

কয়েক দফা চেষ্টায় সেই টাকা আদায় করতে না পেরে লাইসেন্স বাতিলের হুমকি দিয়ে নোটিস পাঠানো হয় দুই অপারেটরকে।

তবে বিটিআরসির দাবি করা টাকার ওই অঙ্ক নিয়ে বরাবরই আপত্তি জানিয়ে এসেছে দুই অপারেটর। তারা এনিয়ে আদালতেও গেছে।