গ্রামীণফোনের মুনাফা কমলো তৃতীয় প্রান্তিকেও

চলতি বছরের তৃতীয় প্রান্তিকে দেশের শীর্ষ টেলিযোগাযোগ গ্রামীণফোনের মুনাফা আগের বছর একই সময়ের তুলনায় প্রায় ১৪ শতাংশ কমেছে।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 21 Oct 2019, 11:24 AM
Updated : 21 Oct 2019, 11:38 AM

ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) ওয়েবসাইটে সোমবার প্রকাশিত তথ্য অনুযায়ী, ২০১৯ সালের জুলাই-সেপ্টেম্বর সময়ে কোম্পানিটির শেয়ারপ্রতি মুনাফা (ইপিএস) হয়েছে ৫ টাকা ৩৮ পয়সা।

আগের বছরের একই সময়ে গ্রামীণ ফোনের ইপিএস ছিল ৬ টাকা ২৫ পয়সা। সে হিসেবে আগের বছরের চেয়ে মুনাফা কমেছে ১৩ দশমিক ৯২ শতাংশ।

তবে হিসাব বছরের নয় মাসের হিসাবে গ্রামীণফোনের মুনাফা বেড়েছে। ২০১৯ সালের জানুয়ারি-সেপ্টেম্বর সময়ে ইপিএস হয়েছে ১৮ টাকা ৭৫ পয়সা, যা আগের বছরের একই সময়ে ছিল ১৮ টাকা ৩৮ পয়সা।

নয় মাসের আর্থিক প্রতিবেদন পর্যালোচনা করে দেখা যায়, আয়কর খাতে ব্যয় বাড়ায় চলতি বছরের তৃতীয় প্রান্তিকে গ্রামীণফোনের নিট মুনাফা কমেছে। একই কারণে দ্বিতীয় প্রান্তিকে গ্রামীণফোনের ইপিএস গত বছরের একই সময়ের তুলনায় ৮ শতাংশের বেশি কমে।

চলতি বছরের জুলাই-সেপ্টেম্বর সময়ে কোম্পানিটির করপূর্ববর্তী মুনাফা ছিল একহাজার ৬৯৭ কোটি ৬৮ লাখ টাকা, যা আগের বছর একই সময়ে ছিল একহাজার ৪৮৩ কোটি ৩৩ লাখ টাকা।

গতবছর যেখানে তিন মাসে আয়কর বাবদ ব্যয় ছিল ৬৪০ কোটি ৪ লাখ টাকা, সেখানে এ প্রান্তিকে ব্যয় হয়েছে ৯৭০ কোটি ৭৯ লাখ টাকা। সে হিসেবে আয়কর বাবদ ব্যয় বেড়েছে ৩৩০ কোটি ৭৫ লাখ টাকা।

এ তিন মাসে কোম্পানির নিট মুনাফা হয়েছে ৭২৬ কোটি ৮৮ লাখ টাকা, যা আগের বছরের একই সময়ে ছিল ৮৪৩ কোটি ২৮ লাখ টাকা।

তৃতীয় প্রান্তিকে গ্রামীণফোন নেটওয়ার্ক কভারেজের জন্য ২১০ কোটি টাকা বিনিয়োগ করলেও এনওসি বন্ধের কারণে তা পরিকল্পনার চেয়ে কম বলে এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে।

নিরীক্ষা আপত্তির ‘পাওনা’ টাকা আদায়ের জন্য বিটিআরসি বিভিন্ন ধরনের টেলিযোগাযোগ সেবার অনুমোদন ও অনাপত্তিপত্র দেওয়া বন্ধ রাখায় ফোরজি নেটওয়ার্ক সম্প্রসারণের কাজ ‘বাধাগ্রস্ত’  হচ্ছে বলে ইতিমধ্যে জানিয়েছে দেশের দুই শীর্ষ মোবাইল ফোন অপারেটর গ্রামীণফোন ও রবি।

চলতি বছরের প্রথম নয় মাসে গ্রামীণফোন মোট ১০ হাজার ৭৫০কেটি টাকা আয় করেছে, যা গত বছরের একই সময়ের চেয়ে সাড়ে ৯ শতাংশ বেশি; গ্রাহক সংখ্যা ৬ শতাংশ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৭ কোটি ৫৭ লাখে।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, এবছরের তৃতীয় প্রান্তিকে প্রতিষ্ঠানটি ৪ লাখ নতুন গ্রাহক নেটওয়ার্কে সংযুক্ত করেছে, যা ২০১৮ সালের শেষ প্রান্তিকের চেয়ে ৬ শতাংশ বেশি।

এ সময়ে প্রতিষ্ঠানটির ইন্টারনেট গ্রাহক বৃদ্ধি পেয়েছে ৯ লাখ। এখন প্রতিষ্ঠানটির ৫৩ দশমিক ৭ শতাংশ গ্রাহক ইন্টারনেট সেবা ব্যবহার করছে।

নেটওয়ার্ক আধুনিকায়নের জন্য প্রতিষ্ঠানটি একহাজার ৮১২টি নতুন ফোরজি সাইট চালু করেছে যার ফলে মোট সাইটের সংখ্যা এখন ১৬ হাজার ৩৮৯টি। কর, ভ্যাট, ফিস, ফোরজি লাইসেন্স এবং তরঙ্গ বরাদ্দের ফি বাবদ গ্রামীণফোন ৯ মাসে মোট ছয় হাজার ১৪০ কোটি টাকা পরিশোধ করেছে, যা প্রতিষ্ঠানটির মোট আয়ের ৫৭ শততাংশ।

গ্রামীণফোন এর সিইও মাইকেল প্যাট্রিক ফোলি বলেন, “প্রতিকূল নিয়ন্ত্রকমূলক পরিবেশ থাকা সত্বেও আমরা তৃতীয় প্রান্তিকে শক্তিশালী ব্যবসায়িক ফলাফল অর্জন করেছি। নেটওয়ার্ক সম্প্রসারণে নিয়ন্ত্রক সংস্থার অনুমোদন বা এনওসি প্রদান বন্ধের কারণে আমরা ক্ষতিগ্রস্ত হলেও গ্রামীণফোন দেশের ৯৯ দশমিক ৫ শতাংশ গ্রাহককে তার নেটওয়ার্কে আওতায় মোবাইল সেবা প্রদান করছে।

“৬৯% জনগোষ্ঠী আমাদের ফোরজি নেটওয়ার্কের আওতায় রয়েছে। ভয়েস সেবা থেকে আমাদের প্রাপ্ত আয় বৃদ্ধি পাচ্ছে এবং এর পাশাপাশি ইন্টারনেট সেবা ব্যবহার সহ ইন্টারনেট ভিত্তিক আয় বৃদ্ধিও পরিলক্ষিত হচ্ছে। আমাদের গ্রাহক সংখ্যার ৫৩.৭% বর্তমানে ইন্টারনেট ব্যবহারকারী।