বাংলাদেশ ছাড়তে ক্রেতা খুঁজছে সানোফি

ব্যবসা গুটিয়ে বাংলাদেশ ছেড়ে যাওয়ার পরিকল্পনার কথা আনুষ্ঠানিকভাবে জানালো ওষুধ খাতের আন্তর্জাতিক কোম্পানি সানোফি, যারা ছয় দশকের বেশি সময় ধরে ওষুধ প্রস্তুত ও বাজারজাত করে আসছিল।

নিউজ ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 16 Oct 2019, 11:27 AM
Updated : 16 Oct 2019, 12:13 PM

বুধবার সানোফির এক বিবৃতিতে বলা হয়, “আমরা মনে করি, বাংলাদেশে ব্যবসার সম্ভাবনা পুরোপুরিভাবে কাজে লাগানোর মত অবস্থানে সানোফি নেই। এ অবস্থার পরিবর্তনে সানোফি বাংলাদেশ লিমিটেডে থাকা আমাদের শেয়ার হস্তান্তরের জন্য অংশীদার খুঁজছি আমরা।”

সানোফি তাদের মালিকানা ছেড়ে দিলেও তাদের ওষুধ বাংলাদেশের বাজারে বিক্রি অব্যাহত থাকবে বলে জানানো হয়েছে বিবৃতিতে।

সানোফি যে বাংলাদেশ ছেড়ে যেতে চায়, সে বিষয়টি নিয়ে গণমাধ্যমে আলোচনা চলছিল গত কয়েক মাস ধরেই। সানোফি বাংলাদেশ লিমিটেড শ্রমিক ও কর্মচারী ইউনিয়নের পক্ষ থেকে এ নিয়ে সংবাদ সম্মেলন করে উদ্বেগও প্রকাশ করা হয়েছিল।

এতদিন আনুষ্ঠানিকভাবে কিছু না বললেও বুধবারের বিবৃতিতে বিষয়টি স্পষ্ট করল প্যারিসভিত্তিক এই বহুজাতিক ফার্মাসিউটিক্যাল কোম্পানি। গ্লাক্সোস্মিথক্লাইনের পর সানোফি হতে যাচ্ছে দ্বিতীয় কোম্পানি, যারা বাংলাদেশ ছাড়ার সিদ্ধান্ত নিল।

তদের বিবৃতিতে বলা হয়, “মালিকানা হস্তান্তরের ক্ষেত্রে সানোফি এমন একটি বিশ্বস্ত প্রতিষ্ঠানের সন্ধানে রয়েছে, যারা নৈতিক এবং বিজ্ঞানসম্মত উপায়ে সানোফির পণ্য প্রচারে প্রতিষ্ঠানটির সুদীর্ঘ ঐতিহ্যের ধারা দীর্ঘ সময়ের জন্যে সমুন্নত রাখার পাশাপাশি রোগী এবং একই সাথে সানোফি বাংলাদেশের কর্মীদের কল্যাণে কাজ করে যাবে।”

যে কটি বহুজাতিক কোম্পানি বাংলাদেশে কারখানা করে ওষুধ উৎপাদন এবং বাজারজাত করে আসছিল, তাদের মধ্যে সানোফি বাংলাদেশ লিমিটেড একটি।

ফরাসি এ কোম্পানি বাংলাদেশে ব্যবসা করছে ১৯৫৮ সাল থেকে। সানোফি বাংলাদেশ লিমিটেডের ৪৫ দশমিক ৩৬ শতাংশ শেয়ারের মালিকানা রয়েছে বাংলাদেশ সরকারের হাতে। বাকিটা সানোফির হাতে। 

বাংলাদেশ কেমিক্যাল ইন্ডাস্ট্রিজ করপোরেশনের (বিসিআইসি) অধীনে পরিচালিতএ কোম্পানিতে এক হাজারের বেশি কর্মী এ কোম্পানিতে চাকরি করছে বলে গত ১৩ অক্টোবর সানোফি বাংলাদেশ লিমিটেড শ্রমিক ও কর্মচারী ইউনিয়নের এক সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়।

কোম্পানি লাভজনক হওয়ার পরও সানোফি ‘পালিয়ে যাচ্ছে’ অভিযোগ করে সেই সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, ব্যবসা গুটিয়ে নিলে কর্মচারীদের যথাযথ পাওনা পরিশোধ করে তবেই যেতে হবে সানোফিকে।

এ বিষয়ে সানোফির বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘দায়িত্বশীল প্রতিষ্ঠান হিসেবে’ কর্মীদের স্বার্থ সংরক্ষণে তারা প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।

“যদি সানোফি বাংলাদেশ লিমিটেডে থাকা নিজেদের শেয়ার মালিকানা হস্তান্তর করে সানোফি, সেক্ষেত্রেও কর্মীদের চাকরির নিশ্চয়তা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে সামষ্টিকভাবে চাকরি স্থানান্তরের বিষয়ে আলোচনা করবে সানোফি। মালিকানা হস্তান্তরের সময় থেকে পরবর্তী ১২ মাস তাদের চাকরির নিশ্চিয়তা পাওয়ার চেষ্টা করবে।”