পেঁয়াজের দাম বৃদ্ধির কারণ এবার মিয়ানমার: মন্ত্রী

গত মাসে ভারত রপ্তানি বন্ধের পর বাংলাদেশে বেড়ে গিয়েছিল পেঁয়াজের দাম। সরকার অন্য দেশ থেকে আমদানি বাড়ানোসহ নানা পদক্ষেপে দাম কিছু কমলেও গত কয়েকদিনে আবার ঊর্ধ্বমুখী এই নিত্যপণ্যের বাজার।

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 14 Oct 2019, 12:17 PM
Updated : 14 Oct 2019, 12:17 PM

সর্বশেষ দরের এই ঊর্ধ্বগতির জন্য মিয়ানমারে ধর্মীয় অনুষ্ঠানকে কারণ দেখিয়ে বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি বলছেন, এই পরিস্থিতি অচিরেই ঠিক হয়ে যাবে।

বৌদ্ধদের অন্যতম প্রধান ধর্মীয় উৎসব প্রবারণা পূর্ণিমা রোববার পালিত হয়েছে। মিয়ানমারে সংখ্যাগরিষ্ঠ মানুষই বৌদ্ধ।

বাংলাদেশে পেঁয়াজের বার্ষিক চাহিদা ২৪ লাখ মেট্রিক টনের মতো। দেশে উৎপাদনের পর ১০ থেকে ১১ লাখ টন পেঁয়াজ আমদানি করতে হয়, যার বেশিরভাগই আসে ভারত থেকে।

বন্যার কারণে উৎপাদন কম হওয়ায় গত সেপ্টেম্বর মাসের শেষ দিকে ভারত পেঁয়াজ রপ্তানি বন্ধ করার ঘোষণা দেয়; তখন বাংলাদেশে পেঁয়াজের দাম ৩০ টাকা থেকে ১০০ টাকায় উঠে যায়।

পরিস্থিতি সামাল দিতে তখন মিয়ানমার থেকে আমদানি বাড়িয়ে দেয় সরকার। এটিসহ নানা পদক্ষেপে দাম কিছুটা কমলেও গত কয়েকদিন ধরে ৮০ থেকে ৯৫ টাকায় উঠে গেছে দাম।

সোমবার পাট মন্ত্রণালয়ে এক অনুষ্ঠানে বাণিজ্যমন্ত্রীকে পেয়ে সাংবাদিকরা পেঁয়াজের দাম নিয়ে প্রশ্ন করেন।

জবাবে তিনি বলেন, “মিয়ানমারে ধর্মীয় একটি অনুষ্ঠানের কারণে দুই /তিন দিন তাদের রপ্তানি বন্ধ … ওইটা বন্ধ হওয়ার কারণে দুই-তিন দিনে দামটা বেড়েছে।”

সরকারও সচেষ্ট জানিয়ে টিপু মুনশি বলেন, “আমরা চেষ্টা করছি। অবশ্য আমি দেশে ছিলাম না, আজ সকালে দেশে ফিরেছি। সচিব তো কথা বলেছে, চেষ্টা করছে বড় কিছু আমদানিকারক দ্বারা আমদানি করার জন্য। সমস্যাটা সাময়িক।

“যেহেতু আমাদের সোর্স (ভারত) যেটা ছিল, সেটা বন্ধ হয়ে যাওয়ার কারণে আমাদের হঠাৎ করে চাপ পড়েছে। মিয়ানমারের ঝামেলাও মিটে গেছে। সাপ্লাই শুরু হয়ে যাবে। তারপর অন্য জায়গা থেকেও আনব।”

ট্যারিফ কমিশনের হিসাবে বাজারে পেঁয়াজের ঘাটতি নেই। ফলে মিয়ানমার থেকে কয়েকদিন আমদানি বন্ধ থাকলে তার প্রভাব ঢাকার বাজারেও পড়ার কথা নয় বলে স্বীকার করেন বাণিজ্যমন্ত্রী।

“ব্যবসায়ীরা এ সুযোগটা নিচ্ছে। এটার প্রভাব পড়তে তো সময় লাগবে। কিন্তু সাথে সাথে দাম বাড়িয়ে দেয়, সুযোগটা নেয় ব্যবসায়ীরা। এটা তো ঠিক কথা নয়। আমরা শক্ত অবস্থানে যাব।”

গুদামে পেঁয়াজ মজুত বন্ধে ব্যবসায়ীদের উপর চাপ সৃষ্টি করবেন বলেও জানান টিপু মুনশি।

পেঁয়াজের দাম কমিয়ে আনার আশ্বাস আগেও দেওয়া হয়েছিল, কিন্তু ফল পুরোপুরি আসেনি।

এ বিষয়ে বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, “একটু সইতে হবে, একটু কষ্ট করতে হবে কিছু দিনের জন্য। যেহেতু আমাদের নিজস্ব উৎপাদনে ঘাটতি আছে। আমাদের পরের উপর নির্ভর করতে হচ্ছে।

“সমস্যা সমাধানের চেষ্টা করছি। ব্যবসায়ীদের সহযোগিতা দরকার। তারপর আমরা বড় বড় কোম্পানি সিটি গ্রুপ, আরও দুই-তিনটা বড় কোম্পানির সাথে কথা হয়েছে, মিটিং হয়েছে। তারা বড় পরিমাণে আনবে।”

এ মাসের শেষের দিকে ভারতও রপ্তানি বন্ধের সিদ্ধান্ত বদলাবে বলে আশা করছেন বাণিজ্যমন্ত্রী।

ভারতের বাণিজ্যমন্ত্রীর সঙ্গে কথা হয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, “ওদের মহারাষ্ট্রে একটি নির্বাচন রয়েছে এই মাসের ২১ তারিখে। তারপর তিনি আশা করেছেন পরিস্থিতির উন্নতি হবে।”