সোমবার থেকে ঢাকায় শুরু হতে যাওয়া ‘ডিজিটাল ডিভাইস অ্যান্ড ইনোভেশন এক্সপো-২০১৯’ উপলক্ষে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এই অভিমত দেন।
রোববার সন্ধ্যায় সোনারগাঁ হোটেলে এই সংবাদ সম্মেলনে পলক বলেন, “বাংলাদেশে ডিজিটাল অর্থনীতি গড়ে তুলতে গেলে দেশে উৎপাদন ও সংযোজনে প্রাধান্য দিতে হবে। আগামী বছরের মধ্যে দেশে দেড় কোটি মোবাইল ফোন সংযোজন হলে তাতে এক লাখ কর্মসংস্থান তৈরি হবে।”
আগামীতে ৫ বিলিয়ন ডলারের প্রযুক্তি পণ্য রপ্তানির আশাবাদ ব্যক্ত করেন প্রতিমন্ত্রী।
তিনি বলেন, ২০১৬ সালের ৬ অগাস্ট প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে ডিজিটাল বাংলাদেশ টাস্কফোর্সের দ্বিতীয় বৈঠকে ডিজিটাল ডিভাইস উৎপাদন ও রপ্তানিতে জোর দেওয়া হয়। এরপর তথ্যপ্রযুক্তি খাতে রপ্তানিমুখী বাণিজ্য শুরু করতে আইসিটি বিভাগ মাঠে নামে।
তরুণ উদ্যোক্তাদের আইডিয়া জানার পাশাপাশি তাদের উদ্ভাবিত পণ্যগুলো আন্তর্জাতিক বাজারে পরিচিত করিয়ে দিতে চায় আইসিটি বিভাগ। সে লক্ষ্যে দেশি-বিদেশি উদ্যোক্তাদের সঙ্গে তাদের যোগসূত্র তৈরি করে দেওয়া এবং তাদের মূলধন জোগানোর জন্য এই এক্সপো একটি প্ল্যাটফর্ম হিসেবে কাজ করবে বলে জানান পলক।
‘মেড ইন বাংলাদেশ’ স্লোগানে বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে সোমবার থেকে শুরু হতে যাচ্ছে তিন দিনব্যাপী তথ্যপ্রযুক্তি প্রদর্শনী ‘ডিজিটাল ডিভাইস অ্যান্ড ইনোভেশন এক্সপো-২০১৯’।
বিকাল ৩টায় পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন এই প্রদর্শনীর উদ্বোধন করবেন। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে আসবেন তথ্যপ্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান উইটসার মহাসচিব জেমস জিম পয়জান্ট।
তথ্যপ্রযুক্তি বিভাগ, বাংলাদেশ হাই টেক পার্ক, আইডিয়া প্রজেক্ট, এটুআই, বাংলাদেশ কম্পিউটার সমিতির (বিসিএস) যৌথ উদ্যোগে এই প্রদর্শনী হচ্ছে।
এ উপলক্ষে সংবাদ সম্মেলনে প্রতিমন্ত্রী পলক ছাড়াও আইসিটি বিভাগের জ্যেষ্ঠ সচিব এন এম জিয়াউল আলম, হাই টেক পার্কের ব্যবস্থাপনা পরিচালক হোসনে আরা বেগম, বেসিস সভাপতি সৈয়দ আলমাস কবীর, বিসিএস সভাপতি শাহিদ-উল-মুনীর, আইডিয়া প্রকল্পের পরিচালক সৈয়দ মজিবুল হক, ই-কমার্স ব্যবসায়ীদের সংগঠন ই- ক্যাব সভাপতি শমী কায়সার, এটুআই প্রজেক্ট পরিচালক আব্দুল মান্নান উপস্থিত ছিলেন।
দেশীয় প্রযুক্তির সমাহার দিয়ে সাজানো হয়েছে এবারের প্রদর্শনী, রাখা হয়েছে আটটি জোন। থাকছে ইনোভেশন জোন। আইডিয়া প্রকল্পের ৩০টি প্রজেক্ট, এটুআইয়ের ৩০টি প্রজেক্ট এবং ২১টি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের উদ্ভাবিত প্রযুক্তি দিয়ে সাজানো হয়েছে এই জোন। এখান থেকে জানা যাবে তথ্যপ্রযুক্তির নতুন উদ্ভাবন সম্পর্কে।
অ্যাক্টিভেশন প্রোগ্রামগুলো থেকে নির্বাচিত সেরা ৩০টি উদ্ভাবন এক্সপোতে প্রদর্শিত হবে। প্রদর্শনীর শেষ দিন বুধবার শীর্ষ ১০ তরুণ উদ্ভাবককে বঙ্গবন্ধু উদ্ভাবনী অনুদান (বিআইজি) দেওয়া হবে।
এক্সপোতে থাকবে স্টার্ট আপ জোন। এ জোনে নতুন উদ্যোক্তাদের এগিয়ে যাওয়ার প্রজেক্ট সম্পর্কে ধারণা পাবেন দর্শনার্থীরা।
মেলার অন্যতম আকর্ষণ রোবোটিক জোন। এবার এক্সপোর ব্র্যান্ড অ্যাম্বাসেডর শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের তৈরি রোবট ‘লি’। রোবোটিক জোনে এলে জানা যাবে মঙ্গলগ্রহে যাত্রার নানা দিক নিয়ে।
বিসিএস এক্সপো জোনে পাওয়া যাবে তথ্যপ্রযুক্তির হালনাগাদ সব পণ্য। প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠানগুলো তাদের সর্বশেষ প্রযুক্তি প্রদর্শন করবে বলে জানিয়েছেন আয়োজকরা। প্রযুক্তি পণ্য কেনার সুযোগও থাকবে এই জোনে।
এক্সপো জোনে থাকবে ১১০টি প্যাভিলিয়ন ও স্টল। আসুস, এইচপি, ডেল, ইন্টেল, স্যামসাংসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের প্রযুক্তি পণ্যগুলো প্রদর্শিত হবে এই জোনে।
গেমারদের জন্য থাকছে গেম জোন। দেশের তৈরি বিখ্যাত ল্যাম্বারগিনি গাড়ির আদলে তৈরি বৈদ্যুতিক গাড়ির দেখা মিলবে এক্সপোতে।
তথ্যপ্রযুক্তিতে অবদান রাখার জন্য তথ্যপ্রযুক্তি বিশেষজ্ঞ, উদ্যোক্তাসহ বিভিন্ন বিষয়ে অবদান রাখা ব্যক্তিদের সম্মাননা প্রদান করা হবে।
হার্ডওয়্যার পণ্য উৎপাদনকারী দেশ হিসেবে বাংলাদেশকে পরিচিতি করে তোলাই এবারের প্রদর্শনীর মূল লক্ষ্য বলে আয়োজকরা জানিয়েছেন।
তারা বলছেন, নতুন উদ্যোক্তাদের বাণিজ্যিকভাবে তাদের পণ্য বাজারজাত করতে ইন্ডাস্ট্রি ও উদ্যোক্তাদের মধ্যে সেতুবন্ধন করে দেবে এই এক্সপো।
প্রতিদিন সকাল ১০টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত এই প্রদর্শনী সবার জন্য উন্মুক্ত থাকবে। তবে উৎসবে আসতে গেলে https://ddiexpo.com/registration সাইটে গিয়ে নিবন্ধন করতে হবে।
অনলাইন প্ল্যাটফর্মে লাইভ হবে এই এক্সপো।