পেঁয়াজের বাজারে অস্থিরতা তৈরি করলে ব্যবস্থা: বাণিজ্য সচিব

এই মুহূর্তে দেশে পেঁয়াজের মজুদ ‘সন্তোষজনক’ পর্যায়ে রয়েছে এবং দাম নিয়ে ‘উদ্বিগ্ন হওয়ার কিছু নেই’ দাবি করে বাণিজ্য সচিব মো. জাফর উদ্দীন বলেছেন, কেউ বাজারে অস্থিরতা সৃষ্টি করলে সরকার আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেবে।

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 30 Sept 2019, 11:00 AM
Updated : 30 Sept 2019, 11:19 AM

ভারত পেঁয়াজ রপ্তানি বন্ধের ঘোষণা দেওয়ার পরদিন সোমবার বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ে নিজের কক্ষে সাংবাদিকদের সঙ্গে এ বিষয়ে কথা বলেন সচিব।

তিনি বলেন, দেশি ও আমদানি করা পেঁয়াজ মিলিয়ে মজুদ এখন ‘সন্তোষজনক’ পর্যায়ে রয়েছে।

“এ নিয়ে উদ্বিগ্ন হওয়ার কোনো কারণ নেই। যারা পেঁয়াজের দর বাড়ানোর চেষ্টা করছেন, তাদের কোনো যুক্তি এখানে নেই। যারা মজুদ করবেন এবং বাজারকে অস্থির করার চেষ্টা করবেন, তাদের বিরুদ্ধে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেব। এখানে কম্প্রোমাইজ করার কোনো সুযোগ নেই।”

দেশে পেঁয়াজের উৎপাদন বছরে ১৭ থেকে ১৯ লাখ টনের মত। চাহিদা পূরণ না হওয়ায় আমদানি করতে হয় ৭ থেকে ১১ লাখ মেট্রিক টন। স্বল্প দূরত্ব ও সহজলভ্যতার কারণে বেশিরভাগটা ভারত থেকে আসে।

কিন্তু বৃষ্টি ও বন্যায় এবার পেঁয়াজের ফলন মার খাওয়ায় ভারত সরকার গত ১৩ সেপ্টেম্বর প্রতি টন পেঁয়াজের ন্যূনতম রপ্তানি মূল্য ৮৫০ ডলারে বেঁধে দেয়। ওই খবরে বাংলাদেশে পেঁয়াজের দাম এক লাফে বেড়ে যায় ২০ থেকে ২৫ টাকা।

এরপর রোববার ভারতের বাণিজ্য মন্ত্রণালয় পেঁয়াজ রপ্তানি পুরোপুরি বন্ধের ঘোষণা দিলে কয়েক ঘণ্টার মধ্যে ঢাকার বাজারে প্রতি কেজি পেঁয়াজের দাম ৭০ টাকা থেকে বেড়ে ১০০ ছাড়িয়ে যায়।    

সচিব বলেন, “ভারতের পেঁয়াজ রপ্তানি বন্ধের খবরে আমরা বসে নেই। এ নিয়ে আজ সকালেও বসেছিলাম।”

মিয়ানমার থেকে পেঁয়াজ নিয়ে দুটি জাহাজ ইতোমধ্যে বন্দরে ভিড়েছে জানিয়ে বাণিজ্য সচিব বলেন, “অগ্রাধিকার ভিত্তিতে একটি জাহাজের পেঁয়াজ গতকাল খালাস হয়েছে। আর একটি জাহাজ আজ খালাস হবে। এছাড়া তুরস্ক ও মিশর থেকে পেঁয়াজ আনার প্রক্রিয়া চলমান। আসতে যতটা সময় লাগে।”

সচিব জানান, দেশি পেঁয়াজের মজুদ পরিস্থিতি জানতে ১০টি দলকে দশ জেলায় পাঠানো হচ্ছে; এসব জেলা থেকেই বেশিরভাগ পেঁয়াজ আসে। এছাড়া স্থলবন্দরগুলোতেও বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা থাকবেন, যাতে দ্রুত পণ্য ছাড় করা হয়।

টিসিবিকে ইতোমধ্যে ৭৫টি ট্রাকে করে সারা দেশে পেঁয়াজ বিক্রির নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে জানিয়ে বাণিজ্য সচিব বলেন, “আগামীকাল, বা দ্রুতই এর সুফল পাওয়া যাবে বলে আশা করছি। আমাদের মোবাইল কোর্ট রয়েছে। ভোক্তা অধিকার, বাণিজ্য মন্ত্রণালয়সহ চারটি টিম কাজ করছে, মার্কেট মনিটরিং করছে।”

ভবিষ্যতে যাতে পেঁয়াজ নিয়ে কোনো সমস্যা সৃষ্টি না হয়, সেজন্য কৃষি ও অন্যান্য মন্ত্রণালয়কে সঙ্গে নিয়ে দীর্ঘমেয়াদে পরিকল্পনা নেওয়া হচ্ছে জানিয়ে বাণিজ্য সচিব বলেন, “আমাদের ঘাটতি খুব বেশি না। যেহেতু আমরা খাদ্যে স্বয়ঃসম্পূর্ণ হয়েছি, কাজেই পেঁয়াজ, রসুন, আদা নিয়ে দীর্ঘমেয়াদে পদক্ষেপ নিয়েছি। যাতে ভবিষ্যতে আমদানির দিকে তাকিয়ে থাকতে না হয়।”