ডিপিডিসির সম্প্রসারণ প্রকল্পে পরামর্শক নিয়োগ

চীনা অর্থায়নে ঢাকা পাওয়ার ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি-ডিপিডিসির 'বিতরণ সম্প্রসারণ ও শক্তিশালীকরণ' প্রকল্পে পরামর্শক নিয়োগ করা হয়েছে।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 18 Sept 2019, 08:33 AM
Updated : 18 Sept 2019, 10:20 AM

ফিনল্যান্ডের কোম্পানি হিফাব ওয় এবং ইঞ্জিনিয়ার্স অ্যান্ড কনসালট্যান্টস বাংলাদেশ লিমিটেডের (ইসিবিএল) জয়েন্ট ভেঞ্চার ৯৭ কোটি টাকায় আগামী পাঁচ বছর এই প্রকল্পের পরামর্শক হিসেবে কাজ করবে।

ওই যৌথ কোম্পানির পক্ষে হিফাবের আঞ্চলিক পরিচালক নাটালিয়া ট্রেনেফিল্ড এবং ডিপিডিসির পক্ষে কোম্পানি সচিব মো. আসাদুজ্জামান বুধবার বিদ্যুৎ ভবনে এ বিষয়ে চুক্তিতে সই করেন।

ডিপিডিসির আওতাধীন এলাকায় বিদ্যুৎ বিতরণ ব্যবস্থা শক্তিশালী করতে ২০১৬ সালে এ প্রকল্প একনেকের অনুমোদিত পেয়েছিল। দীর্ঘ বিরতির পর চলতি বছর প্রধানমন্ত্রীর চীন সফরে এ প্রকল্পের অর্থায়নের জন্য ঋণ চুক্তি হয়।

জিটুজি ভিত্তিতে পরিচালিত এ প্রকল্পের ব্যয় ধরা হয়েছে প্রায় সাড়ে ২০ হাজার কোটি টাকা। চীনের মনোনীত ঠিকাদার টিয়ান ইলেকট্রনিক্সের সঙ্গে ইতোমধ্যে ইপিসি (প্রকৌশল, ক্রয় ও নির্মাণ) চুক্তি হয়েছে।

এ প্রকল্পের আওতায় নতুন ১৪টি বিদ্যুৎ উপকেন্দ্র (১৩২/৩৩/১১ কেভি) নির্মাণ, ১৩২/৩৩ কেভির আটটি এবং ৩৩/১১ কেভির চারটিউপকেন্দ্রের সক্ষমতা বৃদ্ধি করা হবে। এর মাধ্যমে ডিপিডিসির বিদ্যুৎ বিতরণ ক্ষমতা ১৩২ কেভি লেভেলে ৫৩৩০ এমভিএ এবং ৩৩ কেভি লেভেলে ৪৬৮০ এমভিএ বৃদ্ধি পাবে বলে কর্মকর্তাদের ভাষ্য।

এছাড়া কাঁটাবন-হাতিরপুল এলাকায় একটি টুইন টাওয়ার নির্মাণ করবে ডিপিডিসি। ওই ভবনে একটি ৩৩/১১ কেভি উপকেন্দ্র এবং বিতরণ ব্যবস্থার অটোমেশনের জন্য একটি স্ক্যাডা (সুপারভাইজরি কন্ট্রোল অ্যান্ড ডেটা একুইজিশন) সেন্টার স্থাপন করা হবে।

কর্মকর্তারা জানান, এ প্রকল্পের আওতায় একটি আধুনিক ওয়্যারহাউজ নির্মাণ করা হবে। অপটিক্যাল ফাইবারসহ ভূগর্ভস্থ কেবল নেটওয়ার্ক তৈরি করা হবে। ধানমণ্ডি এলাকার ওভারহেড বিতরণ লাইন নেওয়া হবে মাটির নিচে। হাতিরঝিল এলাকায় ভূগর্ভস্থ ট্রান্সমিশন লাইন স্থাপন করা হবে। এছাড়া আন্ডারগ্রাউন্ড সাবস্টেশন নির্মাণ করা হবে, যার ওপরে ভবন নির্মাণ করা যাবে।

অনুষ্ঠানে জানানো হয়, পরামর্শক প্রতিষ্ঠান প্রকল্পের এসব কাজ সুষ্ঠুভাবে বাস্তবায়নের জন্য পরিকল্পনা তৈরি করবে। প্রয়োজনীয় সার্ভে করে ডিজাইন, ড্রইং ও পর্যালোচনা করবে। পাশাপাশি প্রকল্পের সার্বিক কাজের গুণগত মান নিশ্চিত করা হবে পরামর্শক প্রতিষ্ঠানের দায়িত্ব।

বিদ্যুৎ জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ, ডিপিডিসির ব্যবস্থাপনা পরিচালক বিকাশ দেওয়ান, ডিপিডিসির বোর্ড চেয়ারম্যান মোহাম্মদ শফিক উল্লাহ ও ইসিবিএলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক কাজী কামাল উদ্দিন আকরাম চুক্তি স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।

১৯৪৭ সালে সুইডেন থেকে যাত্রা শুরু করে পরামর্শক প্রতিষ্ঠান হিফাব। ১৯৭০ সাল থেকে প্রতিষ্ঠানটি আন্তর্জাতিক দরপত্রে অংশ নিয়ে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে পরামর্শকের কাজ করছে। আফ্রিকা, দক্ষিণ এশিয়াসহ পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে কাজ করছে তারা।

বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রী অনুষ্ঠানে বলেন, প্রকল্প বাস্তবায়নে যে কোনো ধরনের ত্রুটির জন্য পরামর্শক প্রতিষ্ঠানকে দায়ী করা হবে। অনেক সময় বিদেশি কোম্পানিগুলোকে সঙ্গে রেখে দেশীয় অংশীদাররা নিজেদের জনবলকে প্রাধান্য দেয়। এই প্রকল্পে যথাযথ প্রক্রিয়া অবলম্বন করেই কাজ করা হবে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন।