৩ ধাপে পরিশোধ হবে কাঁচা চামড়ার বকেয়া

ট্যানারি মালিক ও কাঁচা চামড়া ব্যবসায়ীদের পাওনা নিয়ে দ্বন্দ্বের আপাত সুরাহা হয়েছে ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠন এফবিসিসিআইর বৈঠকে।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 22 August 2019, 05:18 PM
Updated : 22 August 2019, 05:18 PM

ট্যানারিগুলোর কাছে যে টাকা পাবেন বলে দাবি করছেন চামড়া ব্যবসায়ীরা, তার তিন ধাপের একটি তালিকা আগামী ২৫ অগাস্টের মধ্যে জমা দেবেন চামড়া ব্যবসায়ীরা। সেই তালিকা নিয়ে দুই পক্ষের মধ্যে আবার বৈঠক হবে।

এবার কোরবানির ঈদের পর কাঁচা চামড়া নিয়ে সঙ্কটের প্রেক্ষাপটে শিল্পমন্ত্রীর বৈঠকে ট্যানারি মালিক ও আড়তদারদের মধ্যে মধ্যস্থতার জন্য এফবিসিসিআইকে দায়িত্ব দেওয়া হয়।

বৃহস্পতিবার মতিঝিল ফেডারেশন ভবনে ট্যানারি মালিক ও কাঁচা চামড়া ব্যবসায়ীদের নিয়ে বৈঠক করে এফবিসিসিআই। ঢাকার পোস্তা ছাড়াও চট্টগ্রাম ও উত্তরবঙ্গের চামড়ার আড়তদাররা এতে অংশ নেন।

বৈঠকের পর বাংলাদেশ ট্যানার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি শাহীন আহমেদ বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, বৈঠকে দুই পক্ষের আলোচনায় বেশ কিছুটা অগ্রগতি হয়েছে।

“পাওনা টাকাকে তিনটি ভাগে ভাগ করে তালিকা প্রস্তুত করার সিদ্ধান্ত হয়েছে। ১৯৯০ সাল থেকে ২০১০ সালের পাওনা টাকার একটি তালিকা, ২০১০ সাল থেকে ২০১৫ সালের একটি তালিকা এবং ২০১৫ সাল থেকে বর্তমান সময় পর্যন্ত একটি তালিকা আগামী ২৫ তারিখের মধ্যে জমা দিতে বলা হয়েছে আড়তদারদের। ট্যানারি মালিকরা সাম্প্রতিক বকেয়াগুলো সবার আগে দেওয়া শুরু করবেন।”

বকেয়া নিয়ে আড়তদাররা গণমাধ্যমে বিভ্রান্তিকর বক্তব্য দিয়ে আসছিলেন দাবি করে শাহীন বলেন, “১৯৯০ সালের কোনো বকেয়া নিয়ে তো আমরা সমাধান দিতে পারব না। কারণ অনেক ট্যানারি মালক ব্যবসা ছেড়ে দিয়েছেন, অনেকে মারা গেছেন। সেই কারণে পাওনা টাকার তালিকাকে তিন ভাগে ভাগ করতে বলা হয়েছে।”

বাংলাদেশ হাইড অ্যান্ড স্কিন মার্চেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক টিপু সুলতান বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, বৈঠকে যে সিদ্ধান্ত হয়েছে, তা তারা মেনে নিয়েছেন। আগামী ২৫ তারিখের মধ্যে নতুন ফরমেটের তালিকা তারা জমা দেবেন।

চলতি মাসের ৩১ তারিখে আবারও দুই পক্ষের মধ্যে বৈঠক হবে বলে এফবিসিসিআইয়ের পক্ষ থেকে জানানো হয়।

এফবিসিসিআইএর সভাপতি শেখ ফজলে ফাহিম বলেন, চামড়া ব্যবসা সংক্রান্ত বিভিন্ন প্রতিবন্ধকতা ও দুই পক্ষের মধ্যকার মতোপার্থক্যগুলো নিয়ে বৈঠকে আলোচনা হয়েছে।

“সব টাকা একসাথে পরিশোধ হবে না; টাকা পরিশোধ একটি চলমান প্রক্রিয়া হিসাবে থাকবে। টাকা পরিশোধের জন্য বকেয়াকে তিনটা স্লাবে ভাগ করা হয়েছে যাতে বকেয়া আদায় সহজতর হয়।”

তিনি আরও বলেন, শিল্প মন্ত্রণালয় একটি চামড়া শিল্প নীতিমালা করছে যা মন্ত্রিসভার আগামী বৈঠকে উঠবে। বাণিজ্য মন্ত্রণালয় থেকেও একটি রোডম্যাপ করা হচ্ছে। কাঁচা চামড়া ক্রয় থেকে শুরু করে, ফিনিশড চামড়া উৎপাদন ও পণ্য উৎপাদন সবই ওই নীতিমালায় থাকছে।

দরপতনের কারণে এবার কোরবানির ঈদের পর মৌসুমি ব্যবসায়ীদের অসন্তোষের পর আড়তদার ও ট্যানারি মালিকদের টানাপড়েনে কাঁচা চামড়া নিয়ে দেখা দেয় বড় ধরনের জটিলতা।

বকেয়া পাওনা পাওয়ার আগে ট্যানারির কাছে চামড়া বিক্রি না করার ঘোষণা আড়তদাররা দিলে তাতে হস্তক্ষেপ করে সরকার।

এরপর গত রোববার বৈঠক করে ট্যানারিগুলোতে কাঁচা চামড়া বিক্রি করতে আড়তদারদের রাজি করানোর পর শিল্পমন্ত্রী নুরুল মজিদ হুমায়ুন বলেছেন, চামড়া শিল্পে সমস্যা আপাতত আর নেই।