কুষ্টিয়া, চুয়াডাঙ্গা, পাবনা থেকে রাজধানীতে আসা এসব ব্যাপারির দাবি, গরু যত বিক্রি হচ্ছে, লোকসানের অংক ততো বড় হচ্ছে। প্রতি গরুতে অন্তত ১০ হাজার টাকা করে লোকসান হচ্ছে।
গরুতে লাভ হচ্ছে কিনা জানতে চাইলে উল্টো প্রশ্ন করলে তারা নিজেদের চেহার দেখিয়ে মুখে হাসি আছে কি না জানতে চান।
কুষ্টিয়ার মিরপুরের ফুলবাড়ীয়ার গরু ব্যাপারি মনিরুল ২০টি গরু নিয়ে ঢাকার কামরাঙ্গীরচর চেয়ারম্যান বাড়ি খালপাড় বাজারে এসেছেন।
দীর্ঘশ্বাস ছেড়ে বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে তিনি বলেন, “মাঝারি সাইজের গরুর কদর বেশি। তাই মাঝারি সাইজের গরু এনেছি। কিন্তু তারপরও লোকসান হচ্ছে। আর এখন কেউ দামও বলছে না।
“১২টি গরু বিক্রি করেছি। লোকসান ইতিমধ্যে একলাখ টাকা হয়েছে। এভাবে বাকি আটটি গরু বিক্রি করলে, লোকসান ২ লাখে গিয়ে ঠেকবে।”
কুষ্টিয়ার মিরপুরের গরু ব্যাপারি সাহাবুল ২৯টি গরুর মধ্যে ইতিমধ্যে ২৭টি গরু বিক্রি করেছেন। তার দাবি ‘সব মিলিয়ে লোকসান হবে দেড় লাখ।
তিনি বলেন, “বাকি দুটি গরু কখন যে বিক্রি হবে তা বুঝতে পারছি না। বাজারে খরিদ্দার নাই।”
বংশাল সমছাবাদ মাঠে গরু নিয়ে আসেন কুষ্টিয়া মেহেরপুর এর গাংনীর জড়পাড়া গ্রামের একরামুল ব্যাপারি।
১২টি গরু বিক্রি করে বাকি ১০টি নিয়ে দাঁড়িয়ে আছেন। ঈদের আগের দিনের বাজার কিন্তু দুপুর গড়িয়ে বিকাল হচ্ছে তবু বিক্রি হচ্ছে না। তার ভেতরে কাজ করছে হতাশা।
তিনি বলেন, “১২টি গরু তো লোকসানে বিক্রি করেছি; এ ১০টি গরু নিয়ে এখন কি করব বুঝতে পারছি না “
পাবনার ঈশ্বরদীর দাদপুর গ্রামের জিয়ারুলও অন্যসব ব্যাপারির মতো হতাশমুখে দাঁড়িয়েছিলেন বাজারে।
তবে একই বাজারে ফরিদপুরের চরভদ্রাসনে হরিপুর থেকে আসা গরু ব্যবসায়ী সিদ্দিক বিশ্বাস জানালেন, তার লোকসান হয়নি।
তিনি বলেন, “চারটি গরু এনেছি, তিনটি বিক্রি হয়েছে। একটি গরু নিয়ে বিপাকে আছি, কেউ দাম বলছেন না।”
শেষ দিনে গরুর দাম যে কিছুটা কম তার প্রমাণ মিলল ক্রেতাদের কথায়ও।
মিটফোর্ডের ওষুধ ব্যবসায়ী নওয়াব হোসেন বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, শনিবার তিনি যে আকারের গরু একলাখ ৬ হাজার টাকা দিয়ে কিনেছেন। রোববার তা ৭০ থেকে ৮০ হাজার টাকায় বিক্রি হয়েছে।
সেগুনবাগিচার বাসিন্দা রিয়াজ হোসেন রাব্বি বলেন, “এবার বড় গরুর চেয়ে ছোট গরুর ও মাঝারি গরুর কদর বেশি।”
রোববার খিলগাঁও মেরাদিয়া হাট থেকে একটি গরু তিনি ৯০ হাজার টাকা দিয়ে কিনেছেন, যার মাংস হবে আনুমানিক সাড়ে চার মণ হবে বলে তার ভাষ্য।
তিনি বলেন, “এ গরুটির দাম আরও ৩০ হাজার টাকা বেশি হওয়া উচিত ছিল। কিন্তু বাজার ডাউন।”
বাজারে বড় গরু সংখ্যা বেশি দেখা যাচ্ছে বলে তিনি জানান।
ওয়ারী বিভাগের পুলিশের অতিরিক্ত উপ-কমিশনার (প্রশাসন) ইফতেখারুল ইসলাম বলেন, “এবছর গরুর হাটগুলোতে ‘আনওয়ান্টেড’ কিছু হয়নি।”