অস্ত্রের জন্য ‘সাইবার চুরিতে’ উত্তর কোরিয়া

অস্ত্র কর্মসূচির তহবিল যোগাতে উত্তর কোরিয়া সাইবার হামলা চালিয়ে ২০০ কোটি ডলার চুরি করেছে বলে জাতিসংঘের ফাঁস হওয়া এক প্রতিবেদনে দাবি করা হয়েছে।

নিউজ ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 7 August 2019, 06:53 AM
Updated : 7 August 2019, 06:54 AM

জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদের উত্তর কোরিয়া নিষেধাজ্ঞা কমিটির কাছে জমা দেওয়া স্বাধীন বিশেষজ্ঞদের তৈরি ওই প্রতিবেদনের অনুলিপি বার্তা সংস্থা রয়টার্স দেখেছে বলে জানিয়েছে।

পিয়ংইয়ং চুরির জন্য ১৭টি দেশের বিভিন্ন ব্যাংক ও ডিজিটাল মুদ্রার (ক্রিপ্টোকারেন্সি) বিনিময়কে লক্ষ্যবস্তু করে সাইবার হামলা চালিয়েছে। এধরনের ৩৫টি লেনদেন বিশেষজ্ঞরা তদন্ত করে দেখছেন বলে ওই প্রতিবেদনে বলা হয়েছে।

গত সপ্তাহে জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদের কাছে জমা দেওয়া প্রতিবেদনটির বিষয়ে জাতিসংঘে উত্তর কোরিয়া মিশনের প্রতিক্রিয়া জানতে চাইলেও তারা মন্তব্য করতে রাজি হয়নি বলে জানিয়েছে রয়টার্স।

এমাসের শুরুতে যুক্তরাষ্ট্র ও দক্ষিণ কোরিয়ার যৌথ সামরিক মহড়া ‘শান্তিচুক্তির পরিপন্থী’ আখ্যায়িত করে প্রতিবাদে  দুই সপ্তাহের কম সময়ের মধ্যে গত মঙ্গলবার চতুর্থ দফা মিসাইল ছুঁড়েছে উত্তর কোরিয়া।

গোপন প্রতিবেদনে বলা হয়, সাইবার স্পেস ব্যবহার করে বিভিন্ন আর্থিক প্রতিষ্ঠান ও ক্রিপ্টোকারেন্সি এক্সচেঞ্জের তহবিল থেকে সূক্ষ্ম কায়দায় অর্থ চুরি করত পিয়ংইয়ং। চুরি করা অর্থও একই উপায়ে পাচার করত।

ব্যাংক খাতের চেয়ে ডিজিটাল মুদ্রা বিনিময়ে নজরদারি ও আইনগত শিথিলতা থাকায় অর্থ চুরির জন্য উত্তর কোরিয়া ক্রিপ্টোকারেন্সি এক্সচেঞ্জকে বেছে নিয়েছে বলে প্রতিবেদনে দাবি করা হয়।

এতে বলা হয়, চুরির অর্থ ও ব্যাপকবিধ্বংসী মারণাস্ত্র তৈরির উপকরণ স্থানান্তরে উত্তর কোরিয়া অবৈধভাবে জাহাজ ব্যবহার করত, যা জাতিসংঘের নিষেধাজ্ঞার সুস্পষ্ট লঙ্ঘন।

২০০৬ সালে উত্তর কোরিয়ায় কয়লা, লৌহ, বস্ত্র ও সামুদ্রিক খাবার রপ্তানিতে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদ।

গত বছর যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে এক বৈঠকে কিম পারমাণবিক পরীক্ষা বন্ধ করতে সম্মত হওয়ার পাশাপাশি আন্তঃমহাদেশীয় ক্ষেপণাস্ত্র না ছোড়ারও অঙ্গীকার করেন।

চলতি বছর ভিয়েতনামের রাজধানী হ্যানয়ে অনুষ্ঠিত ট্রাম্প-কিম বৈঠক শেষ হয় কোনো ধরনের চুক্তি ছাড়াই। এর পর থেকেই দুদেশের মধ্যে পারমাণবিক নিরস্ত্রীকরণ বিষয়ে আলোচনা থমকে আছে।

জাতিসংঘের প্রতিবেদনের যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক নারী মুখপাত্র রয়টার্সকে বলেন, “সাইবারজগত ব্যবহার করে উত্তর কোরিয়ার ক্ষেপণাস্ত্র তৈরি ও অবৈধ ব্যাপকবিধ্বংসী মারণাস্ত্র তৈরির মতো বিপজ্জনক কর্মকাণ্ডের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে সংশ্লিষ্ট দায়িত্বশীল দেশগুলোকে এগিয়ে আসার আহ্বান জানাই।”

এর আগে প্রায় সাড়ে তিন বছর আগে বাংলাদেশের রিজার্ভ চুরির সঙ্গে পার্ক জিন হিয়ক নামে উত্তর কোরিয়ার এক হ্যাকার জড়িত ছিলেন বলে দাবি করেছে যুক্তরাষ্ট্র। তাকে ২০১৪ সালে যুক্তরাষ্ট্রের সনি করপোরেশনে এবং ২০১৭ সালে বিশ্বজুড়ে ‘ওয়ানাক্রাই র‌্যানসমওয়্যার’ সাইবার হামলায় অভিযুক্ত করেছে যুক্তরাষ্ট্র।

দেশটির বিচার দপ্তর বৃহস্পতিবার তার বিরুদ্ধে আনুষ্ঠানিক অভিযোগ গ্রহণ করে বলেছে, পার্ক ২০১৬ সালে নিউ ইয়র্ক ফেড থেকে হ্যাকিংয়ের মাধ্যমে বাংলাদেশ ব্যাংকের সঞ্চিত অর্থ হাতিয়ে নেওয়ায়ও জড়িত ছিলেন।