চুক্তি মানছে না অ্যাকর্ড, অভিযোগ বিজিএমইএর

এক সঙ্গে কাজ করতে চুক্তিবদ্ধ হয়েও ইউরোপীয় ক্রেতা জোট অ্যাকর্ড নিজেদের মতো করে কারখানার সংস্কারে বিভিন্ন কর্মসূচি হাতে নিচ্ছে বলে অভিযোগ করেছে পোশাক মালিকদের সংগঠন বিজিএমইএ।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 3 August 2019, 03:50 PM
Updated : 2 Sept 2019, 12:31 PM

ভবিষ্যতে সংস্কারমূলক কাজ করার আগে বিজিএমইএ ও দেশীয় বিশেষজ্ঞদের সমন্বয়ে কমিটি করার দাবিও জানিয়েছে সংগঠনটি।

২০১৩ সালে সাভারের রানা প্লাজা ধসের পর বাংলাদেশের তৈরি পোশাক শিল্পের কর্মপরিবেশ নিয়ে ক্রেতা দেশগুলোর মধ্যে উদ্বেগ দেখা দেয়। তার পরিপ্রেক্ষিতে কারখানা পরিদর্শনে ইউরোপীয় ২২৮টি ক্রেতার সমন্বয়ে গঠিত হয় অ্যাকর্ড অন ফায়ার অ্যান্ড বিল্ডিং সেফটি ইন বাংলাদেশ, যা সংক্ষেপে অ্যাকর্ড হিসেবে পরিচিতি পায়।

২০১৮ সালের মে মাসে অ্যাকর্ডের কার্যকারিতার মেয়াদ শেষ হওয়ার কথা থাকলেও কাজ শেষ হয়নি মর্মে আরও তিন বছর সময় বাড়ানোর উদ্যোগ নেয় অ্যাকর্ড। তবে মালিক ও শ্রমিকপক্ষের বিরোধিতার কারণে মেয়াদবৃদ্ধির এই উদ্যোগ আদালতে গড়ায়।

পরে গত ৮ মে অ্যাকর্ড ও বিজিএমইএ যৌথভাবে আরও ২৮১ কর্মদিবস কাজ করতে একটি সমঝোতা চুক্তিতে সই করে। গত ১৯ মে এই সমঝোতা চুক্তির ভিত্তিতে প্রধান বিচারপতির নেতৃত্বাধীন চার বিচারপতির আপিল বেঞ্চ উভয়পক্ষকে কাজ চালিয়ে যাওয়ার আদেশ দেয়।

শনিবার রাজধানীর হোটেল আমারিতে অ্যাকর্ড প্রতিনিধিদের উপস্থিতিতে ১৮০টি কারখানার মালিকদের নিয়ে দিনব্যাপী কর্মশালার আয়োজন করে বিজিএমইএ। সেখানে ১০টি কারখানায় অ্যাকর্ডের সংস্কার কাজ নিয়ে বিভিন্ন ‘কেস স্টাডি’ তুলে ধরা হয়।

কর্মশালায় বিজিএমইএ সভাপতি রুবানা হক বলেন, “অ্যাকর্ড দীর্ঘদিন ধরে আমাদের দেশে কারখানা সংস্কার কাজ করে আসছে। এতদিন বিজিএমইএ তাদের সঙ্গে যুক্ত না থাকলেও সম্প্রতি দুই পক্ষ একসঙ্গে কাজ করতে চুক্তিবদ্ধ হয়েছে।

“কিন্তু চুক্তির পরেও অ্যাকর্ড এখন নিজেদের মতো করে কর্মসূচির পরিকল্পনা করে যাচ্ছে, যা চুক্তির মূল চেতনার সঙ্গে সাংঘর্ষিক।”

কর্মশালায় উপস্থিত অ্যাকর্ডের প্রধান সেইফটি ইনস্পেক্টর স্টিভ কুইনের কাছে সংস্কার কাজ নিয়ে বিভিন্ন আপত্তি তুলে ধরেন কারখানা মালিকরা। 

সেপ্রসঙ্গে রুবানা হক বলেন, “অবকাঠামো ও বৈদ্যুতিক নিরাপত্তার ক্ষেত্রে ফ্যাক্টরিগুলো অ্যাকর্ডের পর্যালোচনায় ভালো করলেও অগ্নি নিরাপত্তার ক্ষেত্রে এসে ভালো করতে পারছে না। একেকটা কারখানা ৪/৫ বার পর্যন্ত পরিদর্শন করা হয়েছে, তবুও তাদের চাহিদা মতো সমাধান আসছেনা।

“প্রথম ইন্সপেকশনে যেটা ধরা পড়া উচিত ছিল সেটা গিয়ে ধরতে তৃতীয় কিংবা চতুর্থ ইন্সপেকশনে। এভাবে একেকটি কারখানায় ৩৫টি পর্যন্ত ফাইন্ডিংস (ত্রুটি) চিহ্নিত করা হচ্ছে ধাপে ধাপে। এতে একদিকে সময় গড়িয়ে যাচ্ছে, অন্যদিকে সনদ মিলছে না।”

অ্যাকর্ড একেক সময় একেক ধরনের নিরাপত্তা মান ঠিক করার কারণে মালিকরা টাকা খরচ করার পরও অগ্নিনিরাপত্তা সনদ পাচ্ছেনা বলে অভিযোগ করেন রুবানা।

“১৬০০ কারখানার মধ্যে গত ৬ বছরে মাত্র দুইশ কারখানা নিরাপত্তা সনদ পেয়েছে। বাকিদের কাজ ৮০ শতাংশ হলেও নতুন নতুন শর্তের কারণে তারা সনদ পাচ্ছেনা। এভাবে চলতে থাকলে বাংলাদেশের কারখানাগুলো কখনও সনদ পাবে না,” বলেন তিনি।

অচিরেই বিজিএমইএ প্রতিনিধি দেশের বাইরে কোথাও অ্যাকর্ড স্ট্যান্ডিং কমিটির সঙ্গে আলোচনায় মিলিত হবে বলেও অনুষ্ঠানে জানানো হয়।

অ্যাকর্ড প্রতিনিধি স্টিভ কুইন বলেন, মালিকপক্ষের উদ্বেগের বিষয়গুলো তিনি যথাযথ কর্তৃপক্ষের কাছে তুলে ধরবেন।