অসৎ ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে কঠোর হবে সরকার: রাষ্ট্রপতি

অসৎ ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে সরকার কঠোর হতে পিছপা হবে না বলে জানিয়েছেন রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 29 June 2019, 12:53 PM
Updated : 29 June 2019, 12:53 PM

শনিবার ‘রাষ্ট্রপতির শিল্প উন্নয়ন পুরস্কার-২০১৭’ অনুষ্ঠানে তিনি সম্প্রতি ভেজাল ও নিম্নমানের বেশকিছু পণ্য বাজার থেকে প্রত্যাহারে হাই কোর্ট নির্দেশের কথা উল্লেখ করে বলেন, “কিছু সংখ্যক অসাধু ব্যবসায়ীর কারণে আজ সৎ ও ভালো ব্যবসায়ীদের সুনামও নষ্ট হচ্ছে। আপনাদেরকেই এই অশুভ তৎপরতার বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াতে হবে।

“তাই শিল্প উদ্যোক্তাদের প্রতি আমার আহ্বান থাকবে পণ্য ও সেবা উৎপাদনে আপনারা কখনও গুণগত মানের সাথে আপস করবেন না, ক্রেতাদের ঠকাবেন না, ভেজাল ও প্রতারণা থেকে দূরে থাকবেন। সৎ ও ভালো উদ্যোক্তাদের জন্য সরকারের সহযোগিতার দ্বার সবসময় উন্মুক্ত থাকবে। পক্ষান্তরে অসৎ ও অসাধু ব্যবসায়ীদের জন্য কঠোর শাস্তির ব্যবস্থা নিতে সরকার পিছপা হবে না।”

ব্যবসায়ীদের উদ্দেশে রাষ্ট্রপতি বলেন, “আপনারা সমাজের সম্মানিত ব্যক্তি। দেশের আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে আপনাদের ভূমিকা ও অবদান অত্যন্ত প্রসংশনীয়।  ইউরোপ-আমেরিকাসহ উন্নত বিশ্বের বিভিন্ন সুপার স্টোরে পণ্যের গায়ে যখন ‘মেড ইন বাংলাদেশ’ লেখা দেখি তখন গর্বে আমাদের বুক ভরে ওঠে। আবার  যখন ভেজাল বা নিম্নমানের কারণে বিদেশে বাংলাদেশি কোনো পণ্য নিষিদ্ধ হয় বা বাজার থেকে প্রত্যাহার করতে হয় তখন বাণিজ্যিক ক্ষতির পাশাপাশি দেশের ভাবমূর্তিও ক্ষুণ্ণ হয়।”

ব্যবসা-বাণিজ্যের প্রসারে সরকারের গৃহীত বিভিন্ন পদক্ষেপ তুলে ধরে আব্দুল হামিদ বলেন, “শিল্পায়নের কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্য অর্জনে বেসরকারি খাতের বিকাশ অপরিহার্য।  দেশে বেসরকারি খাত যত বেশি শক্তিশালী হবে, শিল্পায়নের ধারা তত বেশি বেগবান হবে।”

“এ বাস্তবতা বিবেচনা করে সরকার বেসরকারি খাতের উদ্যোক্তাদের বিভিন্ন ধরনের প্রণোদনা দিয়ে আসছে। বিশেষ করে, এসএমই খাতের উদ্যোক্তাদের সিঙ্গেল ডিজিট সুদে ঋণ প্রদান এবং এসএমই নারী উদ্যোক্তাদের জামানতবিহীন ঋণ ও অগ্রাধিকারভিত্তিতে প্লট বরাদ্দ দেওয়া হচ্ছে। আজকের রাষ্ট্রপতির শিল্প উন্নয়ন পুরস্কার প্রদানও এ প্রণোদনারই একটি অংশ।”

হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালে ওই অনুষ্ঠানে বাংলাদেশের শিল্পখাত তথা জাতীয় অর্থনীতিতে সামগ্রিক অবদান রাখায় ছয়টি ক্যাটাগরিতে ১৪টি প্রতিষ্ঠানকে পুরস্কার দেওয়া হয়।

প্রতিষ্ঠানগুলো হলো- বৃহৎ শিল্পে প্রথম পুরস্কার স্কয়ার ফার্মাসিউটিক্যালস, দ্বিতীয় পুরস্কার এনভয় টেক্সটাইল, তৃতীয় পুরস্কার অলিম্পিক ইন্ডাস্ট্রিজ।

মাঝারি শিল্পে প্রথম পুরস্কার গ্রিন টেক্সাইল, দ্বিতীয় পুরস্কার ডি অ্যান্ড এস প্রিটি ফ্যাশনস, তৃতীয় পুরস্কার জিএমই এগ্রো।

ক্ষুদ্র শিল্পে প্রথম পুরস্কার অকো-টেক্স, দ্বিতীয় পুরস্কার এপিএস অ্যাপারেলস, তৃতীয় পুরস্কার বিএসপি ফুড প্রোডাক্টস।

মাইক্রো শিল্পে স্মার্ট লেদার প্রোডাক্টস, কুটির শিল্পে প্রথম পুরস্কার কোর দ্য জুট ওয়ার্কস, দ্বিতীয় পুরস্কার প্রতিবেশী প্রশিক্ষণ কেন্দ্র ও কুটির শিল্প উন্নয়ন সংস্থা।

হাইটেক শিল্পে প্রথম পুরস্কার সার্ভিস ইঞ্জিন লিমিটেড, দ্বিতীয় পুরস্কার ন্যাসেরিয়া লিমিটেড।

শিল্পমন্ত্রী নূরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ুনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন শিল্প প্রতিমন্ত্রী কামাল আহমেদ মজুমদার, শিল্প সচিব মো. আবদুল হাকিম, এনভয় টেক্সাটাইলের চেয়ারম্যান কুতুবউদ্দিন।