আরও ৫ বছর ভ্যাটমুক্ত থাকতে চান ই-কমার্স উদ্যোক্তারা

ই-কমার্স খাতের জন্য আরও পাঁচ বছর মূল্য সংযোজন কর (ভ্যাট) অব্যাহতির সুবিধা বহাল রাখার দাবি জানিয়েছে তথ্যপ্রযুক্তি খাতের চারটি ব্যবসায়ী সংগঠন।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 16 June 2019, 02:11 PM
Updated : 16 June 2019, 02:11 PM

অনলাইনভিত্তিক ব্যবসার বিকাশ বাধাগ্রস্ত হবে দাবি করে আসছে অর্থবছরে বাজেটে ই-কমার্স খাতে নতুন করে সাড়ে ৭ শতাংশ ভ্যাট আরোপে প্রস্তাব প্রত্যাহার চেয়েছেন তারা।

বাংলাদেশ সফটওয়্যার অ্যান্ড ইনফরমেশন সার্ভিসেস (বেসিস), ইন্টারনেট সার্ভিস প্রোভাইডার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (আইএসপিএবি), বাংলাদেশ কম্পিউটার সমিতি (বিসিএস) ও বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অফ কল সেন্টার অ্যান্ড আউটসোর্সিং (বিএসিসিও) রোববার রাজধানীর সোনারগাঁও হোটেলে যৌথ সংবাদ সম্মেলন করে এ দাবি জানায়।

বেসিস সভাপতি সৈয়দ আলমাস কবীর সাংবাদিকদের বলেন, ই-কমার্স খাতে ভ্যাট শূন্য শতাংশ থেকে বাড়িয়ে সাত দশমিক পাঁচ শতাংশ করা হয়েছে। এই খাতে যখন কনজিউমার বেইজ তৈরি হচ্ছে, ক্রেতারা অনলাইনে কেনাকাটায় অভ্যস্ত হয়ে উঠছেন, তখন এই ভ্যাট বিকাশমান এই খাতের অগ্রগতির জন্য অন্তরায়।

দেশে প্রায় দুই হাজার ই-কমার্স সাইট এবং ৫০ হাজার ফেইসবুকভিত্তিক প্রতিষ্ঠান রয়েছে। প্রতিদিন দেশের মধ্যে ডেলিভারি হচ্ছে প্রায় ৩০ হাজার পণ্য।

অনুন্নত দেশে প্রযুক্তি সুবিধা দিতে ‘টেকনিক্যাল অ্যাসিস্ট্যান্স প্রজেক্টের’ আওতায় ২০০ কোটি টাকা এবং আউটসোর্সিং খাতে গবেষণা ও উন্নয়ন বাবদ বাংলাদেশ কম্পিউটার কাউন্সিলের মাধ্যমে অন্তত ৩০০ কোটি টাকার থোক বরাদ্দ দাবি করেন তিনি।

আইসিটি খাতে ২০১৯-২০ অর্থবছরে বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে ১৩ হাজার ৭৪ কোটি ২৫ লাখ ৯৮ হাজার টাকা। আগের বছর এ খাতে বরাদ্দ ছিল ১০ হাজার ৮৯৭ কোটি ৭১ লাখ ১১ হাজার টাকা।

ফাইবার অপটিক কেবলের উপর ৫ শতাংশ সম্পূরক শুল্ক আরোপের প্রস্তাব প্রত্যাহারের দাবি জানান আইএসপিএবির সভাপতি এম এ হাকিম।

তিনি বলেন, প্রতি ১০ হাজার ব্রডব্যান্ড সংযোগের মাধ্যমে প্রায় ১০ জনের কর্মসংস্থান হয়। দেশে এখন ব্রডব্যান্ড ব্যবহারের হার মাত্র ৫ শতাংশ। বিশ্বব্যাংকের তথ্যানুসারে, ১০ শতাংশ হারে ব্রডব্যান্ড ব্যবহারের মাধ্যমে ১ দশমিক ৩৮ শতাংশ জিডিপির প্রবৃদ্ধি ঘটে।

এই শুল্ক প্রত্যাহার না হলে সারা দেশে দ্রুত গতির ব্রডব্যান্ড সেবা পৌঁছে দিতে সরকারের ইনফো সরকার-৩ প্রকল্পের উপর নেতিবাচক প্রভাব পড়তে পারে বলে মন্তব্য করেন হাকিম।

বাজেটে ন্যাশনওয়াইড টেলিকমিউনিকেশন ট্রান্সমিশন নেটওয়ার্ক (এনটিটিএন) সংযোগের উপর ভ্যাট ১৫ শতাংশ থেকে কমিয়ে ৫ শতাংশে নামিয়ে আনাতে সন্তুষ্ট নন ব্যবসায়ীরা। সুলভ মূল্যে ইন্টারনেট সেবা চালু রাখতে এ সেবাকে ভ্যাটমুক্ত রাখার দাবি জানান আলমাস।

কম্পিউটার ও কম্পিউটার যন্ত্রাংশ আমদানি পর্যায়ে ৫ শতাংশ আগাম কর এবং সরবরাহ বা বিক্রির উপর ভ্যাট ৫ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ৭ দশমিক ৫ শতাংশ করা আরোপের প্রস্তাব প্রত্যাহারেরর দাবি জানান বিসিএস সভাপতি শাহীদ-উল-মুনীর।

তিনি বলেন, ডিজিটাল বাংলাদেশের জন্য শুধুমাত্র ইন্টারনেট সেবা, মোবাইল কলচার্জ আর সফটওয়্যার সেবা নিয়ে ভাবলে চলবে না। কম্পিউটার ও কম্পিউটার যন্ত্রাংশসহ যাবতীয় হার্ডওয়্যারকেও বিবেচনায় নিতে হবে। 

বিএসিসিও মহাসচিব তৌহিদ হোসেন এসময় উপস্থিত ছিলেন।