জমে উঠেছে ঈদ বাজার

ঈদের এখনও প্রায় তিন সপ্তাহ বাকি থাকলেও সাপ্তাহিক ছুটির দিনে ক্রেতাদের পদচারণায় সরগরম দেখা গেল মিরপুরের বিভিন্ন ফ্যাশন হাউজ ও শাড়ি-চুড়ির দোকান।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 17 May 2019, 06:21 PM
Updated : 17 May 2019, 06:23 PM

তবে দোকানিরা বলছেন, ক্রেতা উপস্থিতি বেশ হলেও বিক্রি এখনও ‘আশানুরূপ’ নয়। ঈদ ঘনিয়ে আসার সঙ্গে সঙ্গে ক্রেতাদের উপচে পড়া ভিড় হবে, বিক্রিও হবে খুব।

শুক্রবার ওই এলাকা ঘুরে দেখা যায়, মেট্রো রেলের লাইন নির্মাণের জন্য কার্যত অচল হয়ে থাকা মিরপুর-১০ নম্বর গোল চত্বরের পূর্বপাশে রয়েছে শাহ আলী মার্কেট, তার বিপরীতে পশ্চিম পাশে মিরপুর-১ নম্বরমুখী রাস্তার পাশে জামা-জুতা, শাড়ি-চুড়ি ও অন্যান্য প্রসাধনীর দোকান। এই মার্কেট ও দোকানগুলোতে ক্রেতাদের বেশ ভিড় দেখা যায়।

রাজধানীর মিরপুর শপিং সেন্টারে শুক্রবার ঈদের কেনাকাটায় ব্যস্ত ক্রেতারা। ছবি: আসিফ মাহমুদ অভি

মিরপুর-২ নম্বরে মিরপুর শপিং সেন্টারে ‘অঙ্গরাগ’ নামের একটি প্রসাধনীর দোকানের পরিচালক বাবর হোসেন বলেন, “ক্রেতা আসছে ঠিকই, কিন্তু বিক্রি আশানুরূপ নয়। ঈদের বেচাকেনায় ভিড়ও আরও বাড়ার কথা।

“আমাদের এখানে ভারত, থাইল্যান্ড, যুক্তরাজ্য ও তুরস্কের বিভিন্ন সুগন্ধি ও প্রসাধনী রয়েছে। ঈদে এর ব্যাপক চাহিদা হয়। এখনও ক্রেতা আসছে। আগামী সপ্তাহে বেচাকেনার ব্যস্ততা আরও বাড়বে বলে আশা করি।”

সামনে ঈদ, তাই ছুটির দিন শুক্রবার রাজধানীর মিরপুরের বিভিন্ন ফ্যাশন হাউজে বাড়ে ক্রেতাদের আনাগোনা। ছবি: আসিফ মাহমুদ অভি

একই শপিং সেন্টারে স্মার্ট ওয়াক নামের একটি জুতার দোকানে কিছু ক্রেতাকে জুতার দরদাম করতে দেখা যায়।

এই দোকানের মালিক ওয়াসিফ আহমেদও মনে করেন, তাদের বেচাকেনা আশানুরূপ হচ্ছে না।

“আমাদের এখানে দেশীয় বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের চামড়া, রেকসিনের তৈরি বিভিন্ন ব্রান্ডের জুতা রয়েছে। তবে ক্রেতাদের ভালো রেসপন্স এখনও পাচ্ছি না। অনেকে আসছে দেখছে, মুলামুলি করে ফিরেও যাচ্ছে।”

স্ত্রীকে নিয়ে ঈদের কেনাকাটা করতে আসা হাফিজুর রহমান মনে করেন, জিনিসপত্রের দাম বেশ চড়া।

“দুই বছর আগের ৫০০ টাকার জিনিস এখন ১২০০ টাকা দাম চাচ্ছে। পাকিস্তানি লন কাপড়ের একটি থ্রি পিস কিনলাম ১২০০ টাকায়। যে থ্রি পিসটা আগে আড়াই হাজার টাকায় পাওয়া যেত সেটা এখন চাচ্ছে ৩৫০০ টাকা। বুঝেন অবস্থা!।”

সবচেয়ে বেশি ব্যস্ততা দেখা গেছে ‘ইরাবতী’ নামের একটি শাড়ির দোকানে। শাড়ি ছাড়াও মেয়েদের থ্রি পিস, কামিজ রয়েছে এই দোকানে।

ঈদ সামনে রেখে রাজধানীর মিরপুরের বিভিন্ন ফ্যাশন হাউজের পাশাপাশি ফুটপাতের দোকান থেকেও কেনাকাটা সেরে নিচ্ছেন অনেকে। ছবি: আসিফ মাহমুদ অভি

সেখানকার এক কর্মী বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে জানান, ৮০০ টাকা থেকে ১০ হাজার টাকার শড়ি রয়েছে এবারের ঈদ বাজারে। হানসা, বিবেক, ভিনাই ব্রান্ডের ভারতীয় থ্রি পিস রয়েছে। সেগুলোর দাম ১২০০ টাকা থেকে তিন হাজার টাকার মধ্যে।

মাহিম পয়েন্ট নামের আরেকটি দোকানের কর্মীরা জানান, ভারতীয়, পাকিস্তানি ও দেশীয় বিভিন্ন বুটিকের জামা রয়েছে। এগুলোর দাম এক হাজার থেকে ছয় হাজার টাকার মধ্যে।

ঈদ সামনে রেখে রাজধানীর মিরপুর-১০ নম্বরের ফুটপাতে বিভিন্ন পণ্যের পসরা সাজিয়ে বসেছেন দোকানিরা। ছবি: আসিফ মাহমুদ অভি

এই শপিং মলে ঈদ উপলক্ষে ক্রেতাদের জন্য র‌্যাফেল ড্র এর ব্যবস্থা করা হয়েছে। প্রথম পুরস্কার টিয়াগো ব্রান্ডের ৮০০ সিসি কার, দ্বিতীয় পুরস্কার ১২৫ সিসি হিরো মোটরসাইকেল, তৃতীয় পুরস্কার একটি রেফ্রিজারেটরসহ প্রায় হাজার পুরস্কারের ঘোষণা দিয়েছে তারা।

ঈদ বাজারে মিরপুরের জুতার দোকানগুলোও ছিল বেশ জমজমাট। মিরপুর ১০ নম্বর থেকে কিছু দূর পশ্চিমে গেলেই রয়েছে জুতার দোকান।

কিরণ ফ্যাশন, প্রিয়াঙ্গন লেদার পয়েন্ট, স্টাইল জোন, খড়ম, লেদার টাচ ছাড়াও বিভিন্ন দেশীয় জুতার শো রুম রয়েছে। এসব দোকানে দুপুরের পর থেকেই ছিল ক্রেতাদের ভিড়।

ঈদ উপলক্ষে পছন্দের পোশাক কিনতে ছুটির দিন শুক্রবার মিরপুরের বিভিন্ন ফ্যাশন হাউজে ভিড় করেন অনেকে। ছবি: আসিফ মাহমুদ অভি

একই সারিতে দরজি বাড়ি, বিটুইন, রঙজয়ী, চন্দ্রবিন্দু, কান্ট্রিবয়, কালারস, জেন্টেলপার্ক, পল্লী, দেশজ, ইনফিনিটি, সারাসহ অনেক ব্রান্ডের শো রুম রয়েছে। পাশাপাশি বাইরে ফুটপাতেও বসেছে অসংখ্য ভ্রাম্যমাণ পোশাকের দোকান।

সারা ব্রান্ডের বিক্রয়কর্মী শাওন জানান, ছেলেদের জন্য পাঞ্জাবি, শার্ট, টি-শার্ট, ডেনিম পণ্য রয়েছে। শিশুদের বিভিন্ন পোশাক রয়েছে। মেয়েদের জন্য রয়েছে কুর্তি, কামিস, থ্রি-পিস, ওয়ান পিস, ওড়না ও ফ্রক রয়েছে।

ছেলেদের পোশাকগুলোর দাম ৫০০ থেকে তিন হাজার টাকার মধ্যে, আর মেয়েদের পোশাকের দাম সর্বোচ্চ পাঁচ হাজার টাকা পর্যন্ত।