কমিটি জানতে চেয়েছে কার স্বার্থে এই ঋণ নিয়ে চিনি কেনা হয়েছে। তবে এর কোনো সদুত্তর দিতে পারেনি কর্পোরেশন, এজন্য অসন্তোষ প্রকাশ করেছে সংসদীয় কমিটি।
বুধবার সরকারি প্রতিষ্ঠান সম্পর্কিত কমিটির বৈঠকে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা হয়।
বৈঠক শেষে কমিটির সভাপতি আ স ম ফিরোজ বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “৫০০ কোটি টাকা ঋণ নিয়ে কেন চিনি কেনা হল? সেই চিনি এখনও কেন গুদামে? মিলের উৎপাদিত চিনি বিক্রি হয় না, অথচ দেশের বাইরে থেকে চিনি কিনে গুদামে ফেলে রাখা হয়েছে। কার স্বার্থে?
“এসব প্রশ্নের সদুত্তর দিতে পারেনি কর্পোরেশন। কমিটি এ ঘটনায় অসন্তোষ প্রকাশ করেছে। পরবর্তী বৈঠকে এ বিষয়ে বিস্তারিত জানাতে বলা হয়েছে। ”
আখ চাষীদের বকেয়া প্রায় ১৫০ কোটি টাকা ঈদের আগেই পরিশোধ করতে চিনি শিল্প কর্পোরেশনকে ব্যবস্থা নিতে বলেছে সংসদীয় কমিটি।
আ স ম ফিরোজ বলেন, “ঈদের আগে এই টাকা পরিশোধ করার জন্য বলা হয়েছে। কর্পোরেশন একমত পোষণ করেছে তারা এই টাকা দেবে।”
এদিকে বেসরকারি চিনি কারখানার মালিকরা নিয়ম ভঙ্গ করছে বলে বৈঠকে আলোচনা হয়। নিয়ম অনুযায়ী বিদেশ থেকে আমদানি করা অপরিশোধিত চিনির ৫০ ভাগ দেশের বাইরে বিক্রি করছে না বলে বৈঠকে জানানো হয়।
এবিষয়ে কমিটি বলেছে, বেসরকারি চিনি কলগুলো যদি নিয়ম ভাঙে তবে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে হবে।
কেরুর লাভ বাড়ছে
বৈঠকে জানানো হয়, বাংলাদেশ চিনি ও খাদ্য শিল্প করপোরেশনের অধীন কেরু অ্যান্ড কোং মিল ২০১৭-১৮ অর্থ বছরের ৫ কোটি ৫০ লাখ টাকা এবং রেনউইক, যজ্ঞেশ্বর অ্যান্ড কোং মিল এক কোটি ৬ লাখ টাকা লাভ করেছে। কর্পোরেশনের অধীন বাকি ১৪টি প্রতিষ্ঠানই লোকসানে।
কার্যপত্রে পাওয়া হিসাব অনুযায়ী, ২০১২-১৩ অর্থ বছরের লাভ ছিল ২২ কোটি ৩২ লাখ টাকা। ২০১৪-১৫ অর্থবছরে যা কমে দাঁড়ায় ৪ কোটি ১৪ লাখ টাকা, ২০১৫-১৬ সালে ৩ কোটি ৮০ লাখ, ১৭-১৭ সালে ৪ কোটি ৮১ লাখ।
কমিটির সভাপতি বলেন, “কেরুর চিনির কলের দায় মেটানো হয় লাভের টাকায়। যে কারণে লাভ কম হচ্ছে।”
সভাপতি আরও বলেন, “প্রত্যেকটি চিনি কলকে ‘বাই প্রডাক্টের’ উৎপাদনে নজর দিতে বলা হয়েছে। সেটা কেরুর মত পণ্য বা বিদ্যুৎ যেকোনোটাই হতে পারে।”
আ স ম ফিরোজের সভাপতিত্বে বৈঠকে কমিটির সদস্য মোস্তাফিজুর রহমান, ইসমাত আরা সাদেক, নারায়ণ চন্দ্র চন্দ, মাহবুব-উল আলম হানিফ, মির্জা আজম, মোহাম্মদ নজরুল ইসলাম, মো. জিল্লুল হাকিম, মুহিবুর রহমান মানিক অংশ নেন।
বিশেষ আমন্ত্রণে সংসদ সদস্য মজাহারুল হক প্রধান বৈঠকে যোগ দেন।